সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গ্রামবাংলা নিয়ে আমাদের অনেকেরই অল্প-বিস্তর একটা হ্যাংওভার রয়েছে। সেই ছায়া সুনিবিড় শান্তির নীড়, মাটির দাওয়া, খড়ের চালা, ছেঁকিছাটা চাল, পুকুরে মাছ, বাড়ির সামনে তুলসীমঞ্চ আর ফুলগাছের অভ্যর্থনা, বিশ্রামের মাদুর, খাওয়ার কাঁসার বাসন- এই সব আর কী!
এবার এই ভুলটা ভাঙতেও বেশি সময় নেয় না। গ্রামে পা রাখলেই! হয় কাছে-পিঠের গ্রাম পরিণত হয়েছে প্রায় শহরে! নয় তো বা দূরের গ্রাম ওই বাঙালি-জীবনের শেষ স্মৃতিটুকু নিয়ে ধুঁকছে! কিছুই প্রায় অবশিষ্ট নেই তার আর!
Advertisement
এই স্বপ্নভঙ্গের হাত থেকে নিষ্কৃতি আর অতীত মধুর স্মৃতি- দুইয়ের মাঝে একটা যোগসূত্র হতে পারে মনচাষা। কন্টাইয়ের মনচাষা।
ছবিগুলো তো দেখছেনই! আপনার বাংলা-বাস যাতে সুখের হয়, আর একই সঙ্গে হয় খাঁটিও, তার জন্য কোনও প্রচেষ্টাই বাকি রাখেনি মনচাষা। গাড়ি থেকে নেমে যখন পায়ে পায়ে এগিয়ে যাবেন খড়ের চালার ঘরে, বিস্ময় আরও বাড়বে। দেখবেন, শুধু বাইরেটাই নয়, গৃহসজ্জাতেও খাঁটি গ্রামবাংলাকে আপনার হাতে তুলে দিচ্ছে এই নিভৃতির আসর।
তার পর ইতি-উতি চোখ রাখা! ঘন মেঘের নীলে, টলটলে ঝিলের জলে, মাঠের সবুজে, ফুলের রঙিনে। মনচাষা সত্যি বলতে কী আদপেই হইচই করার জায়গা নয়। বরং, সব হইচই থেকে পালিয়ে গিয়ে শান্তিতে লুকিয়ে পড়ার জায়গা। যা বাঙালি হিসেবে আপনাকে আপনার হারিয়ে যাওয়া পরিচিতি ফিরিয়ে দেবে ষোল আনা।
ভাবছেন, বড্ড ফাঁকা ফাঁকা লাগবে মনচাষায়?
আদপেই নয়! আপনার জন্য রয়েছে সহজিয়া, গ্রামবাংলার লুপ্তপ্রায় সংস্কৃতির কেন্দ্রবিন্দু। মনচাষার এই কালচারাল ফোরামে আপনার পাওনা হবে ছৌ নাচ, রায়বেঁশে নাচ, বাউল দরবেশের গান। আপনার বাংলার হাতের কাজ স্মারক হিসেবে সংগ্রহের জন্য রয়েছে নব্য নকশি! রয়েছে আমার বাংলা, যা বাংলার গ্রামজীবনের নানা হারিয়ে যাওয়া জিনিস মেলে ধরবে আপনার চোখের সামনে। ঢেঁকি থেকে তাঁত- বাদ যাবে না কিছুই!
আর রয়েছে খাওয়া-দাওয়া। কলমি শাক, গয়না বড়ি, চচ্চড়ি, ঘণ্ট, ছেঁচকি, ডালনা, চোখা, অম্বল- যেমনটা বিশুদ্ধ গ্রামবাংলার পাতে পড়ত, তাই তাই চেখে দেখার সুযোগ পাবেন আপনিও!
ব্যাপারটা ভাল লাগলে শুধু যাওয়ার দিনটা ঠিক করে ফেলুন। কন্টাই স্টেশনে শুধু পৌঁছে যান। জানিয়ে রাখলে মনচাষাই নিজেদের গাড়ি পাঠিয়ে আপনাকে রিসর্টে নিয়ে আসবে। অথবা আপনি নিজেও কালীনগর বাস স্টপ থেকে ট্রেকার ভাড়া করে পাউসি পৌঁছে শরীর ফেলতে পারেন মনচাষায়। মনচাষা তো আসলে রিসর্টের নাম, গ্রামের নাম পাউসি!
আর থাকার জায়গা তো মনচাষাই! এই বর্ষায় যার রূপ উপচে পড়ছে!
এবার শুধু আপনার আসার পালা!
The post এই বর্ষায় ফিরে পান সোঁদা গন্ধে মাখা গ্রামবাংলাকে appeared first on Sangbad Pratidin.