সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভরা বসন্তে ডাক্তারবাবুদের উদ্বেগ বাড়িয়েছে ডেঙ্গু। ভোগান্তি বাড়ছে বঙ্গবাসীর। তবে দীর্ঘদিনের ট্র্যাডিশন ভেঙে কলকাতায় ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব কার্যত তলানিতে। এবার যেন কেমন এক আবহাওয়া! ভরা শীতকালেও এবার ঠান্ডা তেমন পড়েনি। স্থায়িত্ব ছিল কম। ফলে দাপট কমলেও নিশ্চিহ্ন হয়নি মশা বাহিনী। যার ফল, জানুয়ারিতেই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রাজ্যে ২৬২ জন। সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত মুর্শিদাবাদে। তারপর রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা, হুগলি, দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও হাওড়া। স্বাস্থ্যকর্তাদের স্বস্তি দিয়ে তারও পরের স্থানে রয়েছে কলকাতা। ডেঙ্গু নিয়ে বছরের প্রথম চার সপ্তাহের (২৮ জানুয়ারি পর্যন্ত) যে তথ্য পাওয়া গেছে স্বাস্থ্যদপ্তরে, তাতেই উঠে এসেছে এমন তথ্য।

চিকিৎসকরা বলছেন, এই তথ্যে স্পষ্ট যে, জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে ডেঙ্গু হয় না, তা নেহাতই চিরাচরিত বিশ্বাস, বাস্তব পরিস্থিতি ভিন্ন। কারণ পরিসংখ্যানই বলছে, পুরোনো ধ্যান ধারনা বাতিল হয়ে গিয়েছে এ বছর। স্বাস্থ্যভবনের জনস্বাস্থ্য বিভাগের আধিকারিকরা বলছেন, জুলাই থেকে নভেম্বর ডেঙ্গুর আসল মরশুম, ঠিক কথা। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, অন্য সময়ে ডেঙ্গু হয় না। অন্য সময়ে কম হয়, আর শীতকালে আরও কম হয়ে সংখ্যাটা হাতেগোনা হয়ে যায়। আর এখানেই দুশ্চিন্তা বেড়েছে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের। কারণ, এ বছরের জানুয়ারিতে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যাটা গত বছরের চেয়ে কিছুটা বেশি।
কেন বেশি, তারও ব্যাখ্যা অবশ্য দিচ্ছেন পতঙ্গবিদরা। তাঁদের ব্যাখ্যা, একদিকে যেমন ডেঙ্গু ভাইরাস নিয়মিত মিউটেশনের জেরে তার চরিত্র বদলাচ্ছে। তেমনই সেই বদলে যোগ্যসঙ্গত করছে আবহাওয়াও। যার জেরে ডেঙ্গুর বাহক মশা এডিস ইজিপ্টাইয়ের বংশবৃদ্ধি থামছে না। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, এডিসের বংশবৃদ্ধি থেমে যায় তাপমাত্রা ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কম থাকলে। কিন্তু ডিসেম্বর এবং জানুয়ারিতে দক্ষিণবঙ্গে অর্ধেক দিনই তাপমাত্রা ১৫-১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি ছিল বলে জানিয়েছে আলিপুর আবহওয়া দপ্তর। এর ফলেই ভরা শীতেও দেদার এডিসের কামড় খেয়েছে মানুষ। স্বাভাবিকভাবেই আড়াইশোর বেশি রাজ্যবাসী জানুয়ারিতেও আক্রান্ত হয়েছেন ডেঙ্গিতে।