shono
Advertisement

বৃহত্তম মুসলিম জনসংখ্যার দেশ ইন্দোনেশিয়ার আকর্ষণ এই হিন্দু মন্দিরের রামায়ণ ব্যালে

জেনে নিন ভারতের বাইরে বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ মন্দিরগুলির কথা।
Posted: 08:14 PM Feb 17, 2024Updated: 08:21 PM Feb 17, 2024

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সম্প্রতি সংযুক্ত আরব আমিরশাহীতে (UAE) মন্দিরের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Narendra Modi)। মধ্যপ্রাচ্যের এই হিন্দু মন্দিরের উদ্বোধনকে ঘিরে সারা বিশ্বেই চলছে আলোচনা। বছরের গোড়াতেই রামমন্দিরের উদ্বোধনের সময় থেকেই বার বার আলোচনায় উঠে এসেছে এদেশের বিখ্যাত মন্দিরগুলি। ভারতের বহু মন্দিরেই স্থাপত্যের কারুকার্য, ইতিহাস ও লোকগাথা এমনভাবে মিলেমিশে রয়েছে যে তাকে ঘিরে মানুষের ভক্তি ও আগ্রহের অন্ত নেই। কিন্তু এদেশের বাইরেও রয়েছে এমন সব মন্দির, যা হিন্দু পর্যটকদের কাছে অবধারিত ডেস্টিনেশন। সেই তালিকারই সাম্প্রতিক সংযোজন হয়ে উঠল বিএপিএস মন্দির। আসুন দেখে নেওয়া যাক বিদেশের মাটিতে অবস্থিত এমনই কিছু মন্দিরের তালিকা।

Advertisement

ইন্দোনেশিয়ার প্রাম্বানান মন্দির: সবথেকে বেশি মুসলিম জনসংখ্যার দেশ ইন্দোনেশিয়া। বিশ্বের ১৩ শতাংশ মুসলিম এখানেই থাকেন। আর এখানেই অবস্থিত এই মন্দির। এখানে প্রতিদিন রামায়ণ ব্যালে দেখতে বহু মানুষ ভিড় করেন। ১৯৬১ সাল থেকেই প্রাঙ্গণজুড়ে এই ব্যালে শুরু হয়। যা এই মন্দিরের অন্যতম আকর্ষণ। খ্রিস্টীয় নবম শতাব্দীর এই মন্দিরকে ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ’ তকমা দেওয়া হয়েছে। চোখ ধাঁধিয়ে দেয় এই মন্দিরের স্থাপত্য শৈলী। এখানে রয়েছে শিব, বিষ্ণু ও ব্রহ্মার মন্দির। মন্দির চত্বর জুড়ে রয়েছে রামায়ণের অলঙ্করণ। সব মিলিয়ে ২৪০টি মন্দির ছিল চত্বরে জুড়ে। বার বার ভূমিকম্প, অগ্ন্যুৎপাত ও অন্যান্য প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে প্রাম্বানান মন্দির। কিন্তু তবুও শতকের পর শতক ধরে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে রয়েছে অসামান্য স্থাপত্যের নিদর্শনটি। কিন্তু মন্দিরের সংখ্যা সামান্য কমে এখন দাঁড়িয়েছে ২২৪টিতে।

চোখ ধাঁধিয়ে দেয় প্রাম্বানান মন্দিরের স্থাপত্য শৈলী

[আরও পড়ুন: সন্দেশখালিতে সভা পিছিয়ে দিল তৃণমূল, স্থানীয় নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকে দুই মন্ত্রী]

বন্দর আব্বাস বিষ্ণু মন্দির: ইরানের বন্দর আব্বাসের এই মন্দিরটি স্থাপিত হয়েছিল ১৮৯২ সালে। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ভারতীয় কর্মীরা এই মন্দিরটি নির্মাণ করেছিলেন। এই মন্দিরটি তৈরি করতে ব্যবহৃত হয়েছে প্রবালপাথর, কাদা, মর্টার ইত্যাদি। মন্দিরের কেন্দ্রে রয়েছে এক বর্গাকার কক্ষ, যা এক গম্বুজ দ্বারা আচ্ছাদিত। ইরানের প্রচলিত স্থাপত্যশৈলীর থেকে আলাদা এই মন্দিরের স্থাপত্য। প্রসঙ্গত, ইরানের মতো ইসলামিক দেশে হিন্দুদের সংখ্যা মাত্র ৩৯,২০০ (২০১৫ সালের গণনা অনুযায়ী)। কিন্তু এদেশেই রয়েছে এই বিখ্যাত মন্দির। তবে এছাড়াও এদেশের জহেদানে রয়েছে আর একটি হিন্দু মন্দির। এটিও ব্রিটিশ আমলেই নির্মিত।

কম্বোডিয়ার আঙ্কোরভাট: গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস অনুসারে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান আঙ্কোরভাট। এই মন্দিরের প্রধান আরাধ্য দেবতা বিষ্ণু। দ্বাদশ শতাব্দীতে নির্মিত এই মন্দির নির্মাণ করেছিলেন রাজা দ্বিতীয় সূর্যবর্মন। ৪০০ একর অঞ্চল জুড়ে বিস্তৃত মন্দির চত্বরে অবস্থিত সত্তরটিরও বেশি সৌধ। এটি কম্বোডিয়ার জাতীয় পতাকায় স্থান পেয়েছে। বছর জুড়ে সারা বিশ্বের পর্যটকদের ভিড় লেগে থাকে আঙ্কোরভাটে। মন্দিরটির বিশাল অবয়ব, সৌন্দর্যের দ্যুতি বিশেষ করে এর দেওয়ালজোড়া কারুকার্যের খ্যাতি ভুবনজোড়া।

[আরও পড়ুন: কাশ্মীরের চাইতেও বেশি! লোকসভা ভোটে বাংলার জন্য কত বাহিনী চাইল কমিশন?]

অক্ষরধাম মন্দির: দিল্লির অক্ষরধাম মন্দিরকে ধরা হয় বিশ্বের বৃহত্তম হিন্দু মন্দির। কিন্তু একই মন্দির রয়েছে আমেরিকাতেও। যা মার্কিন মুলুকের সবচেয়ে বড় হিন্দু মন্দির। ১৮৩ একর জুড়ে ছড়িয়ে থাকা নিউ জার্সির রবিনসভিলের এই মন্দিরের উচ্চতা ১৯১ ফুট। গত বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালের ৮ অক্টোবর এই মন্দিরের উদ্বোধন হয়। ১২ বছর ধরে নির্মিত হয়েছে এই মন্দির। নির্মাণের জন্য বিভিন্ন দেশ থেকে আনা হয়েছে পাথর। মন্দিরের আরাধ্য দেবদেবীরা হলেন স্বামীনারায়ণ তথা সহজানন্দ স্বামী, রাধাকৃষ্ণ, রাম-সীতা ও শিবপার্বতী।

লিচ্ছবি রাজা প্রচণ্ড দেবের আমলে তৈরি পশুপতিনাথ মন্দির

পশুপতিনাথ মন্দির: নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে অবস্থিত, সপ্তদশ শতাব্দীতে নির্মিত এই মন্দির ১৯৭৯ সাল থেকে ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ’ তকমা পেয়েছে। শিব তথা পশুপতিই এই মন্দিরের প্রধান আরাধ্য দেবতা। বাগমতী নদী তীরের এই মন্দিরে রয়েছে মোট ৫১৮টি ছোট মন্দির। মন্দিরটি লিচ্ছবি রাজা প্রচণ্ড দেবের আমলে তৈরি বলে মনে করেন ঐতিহাসিকরা। এই মন্দির ঘিরে রয়েছে এক অসাধারণ কিংবদন্তি। সেই কিংবদন্তি অনুসারে, বাগমতীর তীরে হরিণের রূপ ধরে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন শিব ও পার্বতী। সেই সময় দেবতারা শিবকে ধরে ফেলেন। সেই সময় তাঁর একটি শিং তাঁদের হাতে ছিল। তাঁরা জোর করায় শিব বাধ্য হন নিজের ঐশ্বরিক রূপ দেখাতে। ভাঙা শিংটি লিঙ্গরূপে পূজিত হত। কিন্তু কালক্রমে তা মাটির গভীরে চলে যায়। কয়েকশো বছর পর এক রাখাল দেখতে পায়, একটি গাভী মাটিতে দাঁড়িয়ে দুধবর্ষণ করছে। সেই স্থানে খুঁড়তে শুরু করতেই বেরিয়ে আসে লিঙ্গটি। বিশ্বাস, এই মন্দিরে গেলে মনের ইচ্ছা পূরণ হয়।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement