shono
Advertisement

Breaking News

Rituparno ghosh

কলকাতার 'দহন' চিনিয়েছিলেন ঋতুপর্ণ, প্রতিবাদের সেই ভাষ্য ভোলেনি শহর, জন্মদিনে ফিরে দেখা

১৯৯৭ সালে মুক্তি পেয়েছিল ঋতুপর্ণ ঘোষের 'দহন'।
Published By: Akash MisraPosted: 02:22 PM Aug 31, 2024Updated: 03:49 PM Aug 31, 2024

আকাশ মিশ্র: 'সেদিন রমিতার সঙ্গে ঠিক কী ঘটেছিল?', 'চারজন পুরুষ মেট্রো স্টেশনের বাইরে কীভাবে ছুঁয়েছিল রমিতাকে?' সালটা ১৯৯২ সাল। কলকাতার বুকে ঘটে গিয়েছিল এক ভয়ংকর ঘটনা। মেট্রো স্টেশনের বাইরে শ্লীলতাহানির শিকার হয়েছিলেন এক গৃহবধূ। যাঁকে বাঁচিয়ে ছিলেন এক মহিলা সাংবাদিক। গর্জে উঠেছিলেন প্রতিবাদে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই কলম ধরেছিলেন সাহিত্যিক সুচিত্রা ভট্টচার্য। লেখা হয়েছিল উপন্যাস 'দহন'। যা নিয়ে ১৯৯৭ সালে ছবি বানান পরিচালক ঋতুপর্ণ ঘোষ। ছবির নামও রাখেন 'দহন'ই। রমিতার চরিত্রে ছিলেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। আর প্রতিবাদী মহিলা সাংবাদিক শ্রবণার চরিত্রে ইন্দ্রাণী হালদার। 'দহন'কে সঙ্গী করে বাংলা ছবির পর্দায় ঋতুপর্ণ যেন সাহসী ক্যামেরা ধরলেন। প্রশ্ন ছুড়লেন পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারীর অবস্থানকে। প্রতিবাদী শ্রবণার মধ্যে দিয়েই যেন গর্জে উঠলেন তিনি। এই ছবি মুক্তির ২৭ বছর পর, সেই কলকাতা শহরেই ফের দহন। আবার এক নারী নির্যাতনের ঘটনায় শিউরে উঠেছে মানুষ। আর জি কর কাণ্ডে জ্বলছে তিলোত্তমা। '৯৭ সাল থেকে আজ ২০২৪। গঙ্গাজলের স্রোতের সঙ্গেই সময়ও এগিয়েছে। শহর পরিধিতে আরও বেড়েছে। শপিংমলে মুখ ঢেকেছে কল্লোলিনীর। এমনকী, নতুন নতুন মেট্রোও পেয়েছে শহর। কিন্তু ঋতুপর্ণর সেই দহন আজ মেট্রোর স্টেশন থেকে বেরিয়ে আরজি করে। ৩১ আগস্ট, যখন ঋতুপর্ণর ভক্তরা তাঁর জন্মদিনে স্মৃতিচারণায় মত্ত, ঠিক তখনই মনে উঁকি দিচ্ছে সেই দহনের রাত। সেই চিত্রায়ন। শ্রবণার সেই প্রতিবাদই কি আজ গোটা শহরে?

Advertisement

[আরও পড়ুন: ‘আমিও নির্যাতিতা’, বলছে টলিউড, কীভাবে বাংলা ইন্ডাস্ট্রিতে হেনস্তা চলে? জানালেন ৭ অভিনেত্রী]

সুচিত্রা ভট্টাচার্যর কলম ও ঋতুপর্ণর দক্ষ পরিচালনায় 'দহন' নারী সুরক্ষা ও নারীর মননের এক দলিল। কারণ, 'দহন' শুধুই শ্লীলতাহানি বা নারীর সম্মানহানিকে প্রশ্ন করে না। বরং প্রশ্ন করে পুরুষতন্ত্রকে। সাহস দেয় নারীর কণ্ঠকে। আর সেই সংকট ও তার মোকাবিলার মরিয়া প্রয়াসই প্রতিফলিত আজকের সময়ে। আর জি কর কাণ্ডে বিচারের আশায় কলকাতা শহরে একের পর এক মিছিল। তবে 'দহন' ছবিতে রমিতার দোষীরা চিহ্নিত হয়। কিন্তু জেলে তাদের চিহ্নিত করার পর দোষী সাব্যস্ত করার জন্য যে সাক্ষ্যপ্রমাণের প্রয়োজন ছিল, তাতে শ্রবণার আগ্রহ এবং প্রচেষ্টা প্রকাশ পেলেও রমিতার পরিবারের  এক ধরনের অনীহা দেখা গিয়েছিল। ছাড়া পেয়ে যায় দোষীরা। 'দহন'-এর শেষ হয়, অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রাণপণে লড়াই করেও পরাজিত হওয়ার বেদনা, অন্যদিকে পুরুষতান্ত্রিক সমাজের বেড়াজালে আটকে পড়ে ক্লান্ত রমিতা সংসার-জীবন সম্পর্কে আগ্রহ হারিয়ে ফেলার পরিস্থিতিতেই।

 

'দহনে'র গল্প শেষমেশ আর যেন শ্লীলতাহানির শিকার হওয়া নারীর দহনে সীমাবদ্ধ থাকে না, বরং এটি হয়ে ওঠে আত্মকেন্দ্রিক এবং স্বার্থনিমগ্ন সমাজের নির্মম প্রতিচ্ছবি। পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারীর ইচ্ছা-অনিচ্ছা, কিভাবে গুরুত্ব হারায়, তাকেই পর্দায় তুলে ধরেছিলেন ঋতুপর্ণ। '৯৭-এর পর্দার সেই গল্পই কি ফের তিলোত্তমায় ধরা দিল? জন্মদিনে সত্য়িই উঠছে প্রশ্নটা। উপন্যাস ও সিনেমায় ন্যায় পায়নি রমিতা। এই ক্রান্তিকালে ঋতুপর্ণর সেলুলয়েডে ধরা পড়া সেই সংকটই নতুন রূপে ফিরে আসছে। তিলোত্তমা যেন ন্যায় পায়। এই প্রার্থনায় আকুল শহর।

[আরও পড়ুন: জনপ্রিয় ফুটবলারকে মন দিয়েছেন ‘রানিমা’, দিতিপ্রিয়ার প্রেমিকের পরিচয় জানেন?]

 

 

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • ঋতুপর্ণর সেলুলয়েডে ধরা পড়া সেই সংকটই নতুন রূপে ফিরে আসছে। তিলোত্তমা যেন ন্যায় পায়।
  • 'দহন' শুধুই শ্লীলতাহানি বা নারীর সম্মানহানিকে প্রশ্ন করে না।
Advertisement