শ্রীজা ঘোষ: ইংরেজিতে একটি জনপ্রিয় প্রবাদবাক্য রয়েছে। ‘আরলি টু বেড, আরলি টু রাইজ মেকস আ ম্যান হেলদি অ্যান্ড ওয়াইজ’– তবে এখনকার জীবনযাপনের ধরন যেভাবে পালটেছে তাতে এই প্রবাদবাক্যটি অনুসরণ করে চলা সম্ভব হয়ে ওঠে না। আমাদের অজানা নয় যে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হতে গেলে সুষম খাদ্যের পাশাপাশি সঠিক ঘুমেরও প্রয়োজন রয়েছে। রাতে অপর্যাপ্ত ঘুমের কারণে স্বভাবতই কাজেকর্মে মন্থরগতি চলে আসে। এর পাশাপাশি বিভিন্ন কুপ্রভাবও পড়ে শরীরের উপর।
যে কারণগুলি দায়ী: প্রযুক্তি বিশ্লেষকের দাবি ঘুমোতে যাওয়ার আগে স্মার্টফোন, ল্যাপটপের মতো ইলেকট্রনিক যন্ত্র ব্যবহারের অভ্যাস করলে অবধারিত ঘুম নষ্ট হবে। জানা গিয়েছে এই সমস্ত ইলেকট্রনিক যন্ত্রের থেকে কৃত্রিম নীল আলো ঘুমচক্রকে নষ্ট করে। মেলাটোনিন এক ধরনের রায়াসনিক যা আমাদের শরীরে ঘুম নিয়ে আসে। নীল রশ্মি মেলাটোনিনের উৎপাদনের প্রক্রিয়াকে নষ্ট করে। শুধু তাই নয়, এই কারণে মেলাটোনিনের মাত্রা কম হলে বিষণ্ণতাও বেড়ে যায়। ঘুমোতে যাওয়ার তিন ঘণ্টার মধ্যে ক্যাফেন বা নিকোটিন জাতীয় কিছু সেবন করলেও ঘুম আসতে দেরি হয়। তাই ঘুমোবার ঠিক আগেই চা কফি বা চকোলেট খেলে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। ঘুমোতে যাওয়ার বেশ কিছুক্ষণ আগেই নৈশভোজ সেরে ফেলুন। ঘুমের আগে অত্যধিক পেট ভরা থাকলে ঘুম আসতে দেরি হয়। রাত জেগে কাজের অভ্যাস পরিত্যাগ করুন। ঘুমের ঠিক আগে পর্যন্ত কাজ করলে মস্তিষ্কের কোষগুলি উত্তেজিত হয়ে পড়ে। ফলে ঘুম আসতেও দেরি হয়। সঠিক সময় ঘুমোতে চাইলে মস্তিষ্ককে শিথিল রাখা জরুরি। এছাড়াও অনেকের ঘুমোতে যাওয়ার আগে জিম করা অভ্যাস থাকে। এই সময় শরীরে কসরত করলে অ্যাড্রেনালিন এবং করটিসল (Cortisol) নামক হরমোনের মাত্রা বৃদ্ধি পায় যা ঘুমে ব্যাঘাত ঘটায়।
দেরিতে ঘুমের কুফল: হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, ওবেসিটি, বিষণ্ণতা, ক্যানসার, যে কোনও কাজে অনীহা, প্রজনন ক্ষমতা কমে আসে, ত্বকের রোগ।
কী করবেন: রোজ একই সময় ঘুমোতে যাওয়া এবং সকালে ওঠা অভ্যাস করুন। শুতে যাওয়ার আগে ভারী শারীরিক কসরতের পরিবর্তে হালকা যোগাভ্যাস করুন। সপ্তাহান্তে অনেকেরই দিনের বেলা ঘুমনোর অভ্যাস থাকে। অবিলম্বে তা ত্যাগ করুন। এতে ঘুমের চক্রে বাধা আসে। প্রয়োজনে হালকা একদম খালি পেটে ঘুমোতে যাবেন না এবং যথাসম্ভব মনকে চিন্তামুক্ত রাখার চেষ্টা করুন। ঘুমে খুব বেশি অসুবিধে হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
The post রাতে ঘুম নেই! জানেন কী বিপদ অপেক্ষা করছে আপনার জন্য? appeared first on Sangbad Pratidin.