সুকুমার সরকার, ঢাকা: অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় আমফান বাংলাদেশ উপকূল থেকে আর ৩৯০ কিলোমিটার দূরত্বে। এর জেরে খুলনার মোংলা ও বরিশালের পায়রা সমুদ্র বন্দরে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখানো হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছে সমুদ্র খুবই উত্তাল। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৮৫ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ২০০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ২২০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। মহাবিপদের আশঙ্কায় কাঁটা ওপার বাংলার উপকূলীয় অঞ্চল।
ঢাকার আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, বুধবার সকাল ৬টায় ঘূর্ণিঝড়টি চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমে; কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৪৫ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমে; মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪১০ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে আজ বিকাল বা সন্ধের মধ্যে সুন্দরবন ছুঁয়ে পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রম করতে পারে। বুধবার ভোরে আবহাওয়া অফিসের ৩০ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিমমধ্য বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় আমফান উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে বর্তমানে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন উত্তরপূর্ব বঙ্গোপসাগর এবং পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থান করছিল। উপকূলীয় জেলা – সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালি, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালি, ফেনী ও চট্টগ্রাম এবং সেই সংলগ্ন দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চলে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫ থেকে ১০ ফুটের বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
[আরও পড়ুন: ধেয়ে আসছে সুপার সাইক্লোন ‘আমফান’, আতঙ্কে কাঁটা বাংলাদেশ]
এসব এলাকায় ইতিমধ্যেই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। সারা দেশে নৌ-চলাচল বন্ধ। উপকূলীয় এলাকার মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধের আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছিল, সিডরের মতো আমফানও একটি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়। এদিকে বাতাসের তোড়ে ঢাকার অদূরে পদ্মায় মঙ্গলবার ছোট একটি ট্রলার ডুবে গিয়েছে। আমফানের জন্য পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া, শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি, চাঁদপুর-শরিয়তপুর, ভোলা-লক্ষ্মীপুর, ভেদুরিয়া-লাহারহাটে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়টি উপকূল অতিক্রম করে স্থলভাগে আছড়ে পড়ে দেশের ১৪ জেলায় তাণ্ডব চালাতে পারে। ঘূর্ণিঝড় এবং অমাবস্যার প্রভাবে উপকূলীয় জেলা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪ থেকে ৫ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছাসে প্লাবিত হতে পারে।
The post আসছে আমফান, বাংলাদেশের দুটি সমুদ্র বন্দরে জারি সর্বোচ্চ বিপদ সংকেত appeared first on Sangbad Pratidin.