সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর বাংলাদেশে গঠিত হয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। নেতৃত্বে রয়েছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মহম্মদ ইউনুস। কিন্তু এখনও সেদেশে হিন্দু-সহ অন্যান্য সংখ্যালঘুদের উপর হামলার ঘটনা থামেনি। যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে রাষ্ট্রসংঘও। এবার এই হামলার প্রতিবাদে ঢাকা, চিটাগংয়ের মতো একাধিক জায়গায় পথে নেমেছেন হাজার হাজার হিন্দু। এই পরিস্থিতিতে হামলাকারীদের কড়া বার্তা দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ইউনুস।
পদত্যাগ করে শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পরই বিরোধীদের বিজয়োল্লাস হিংসাত্মক রূপ নিয়েছে। বিশেষ করে হিন্দুদের বাড়ি, সম্পত্তিতে হামলা চালানো হচ্ছে। ছাড় পাচ্ছে না উপাসনালয়গুলোও। বহু হিন্দুমন্দির ধ্বংস করে দেওয়ার অভিযোগ উঠছে। প্রাণ সংশয়ের আতঙ্ক তাড়া করে বেরাচ্ছে হিন্দুদের। এবার তাঁরা প্রতিবাদে শামিল হয়ে পথে নেমেছেন। গত দিন দুয়েক ধরে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা-সহ চিটাগংয়ের মতো বড় বড় শহরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন সকলে। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, শনিবার চিটাগংয়ের ঐতিহাসিক চেরাগী পাহাড় চত্বরে লক্ষ লক্ষ মানুষ বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেছিলেন। এর জেরে প্রায় ৩ ঘণ্টা যান চলাচল স্তব্ধ হয়ে যায় সেই অঞ্চলে।
[আরও পড়ুন: নিরাপত্তায় মোতায়েন সেনা, আতঙ্ক কাটিয়ে বাংলাদেশের বেশিভাগ থানায় কাজ শুরু পুলিশের]
এই পরিস্থিতিতে হিন্দু-সহ অন্যান্য সংখ্যালঘুদের উপর হামলার তীব্র নিন্দা করে ইউনুস বলেন, "সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর হামলা খুবই জঘন্য কাজ।" হিন্দু, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ পরিবারদের উপর যাতে হামলা না হয় তার আহ্বান জানিয়েছিলেন আন্দোলনকারী পড়ুয়ারা। এদিন তাঁদের উদ্দেশে ইউনুস বলেন, "যাঁদের উপর হামলা হচ্ছে তাঁরা কি এদেশের মানুষ নয়? আপনারা যখন দেশকে বাঁচাতে পেরেছেন তখন কিছু রিবারকে বাঁচাতে পারবেন না? আপনাদেরকেই গলা তুলে বলতে হবে যাতে এই মানুষগুলো কেউ ক্ষতি করতে না পারে। তাঁরা সকলে আমার ভাই। আমরা একসাথে লড়াই করেছি, আমরা একসঙ্গেই থাকব।" হিন্দুদের উপর হামলা নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দ্রুত পদক্ষেপ চেয়েছে রাষ্ট্রসংঘও। উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারত, আমেরিকা, কানাডার মতো দেশ।
এদিকে, পদ্মাপাড়ের সংখ্যালঘু এবং ভারতীয়দের সুরক্ষায় বিশেষ কমিটি গড়েছে ভারত সরকার। এই কমিটি ভারতীয় এবং হিন্দু-সহ অন্য সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করবে। কমিটির নেতৃত্ব দেবেন বিএসএফের ইস্টার্ন কমান্ডের এডিজি। এছাড়াও কমিটিতে রয়েছেন সীমান্তরক্ষী বাহিনীর দক্ষিণ বঙ্গের আইজি, ত্রিপুরায় বিএসএফের আইজি, পরিকল্পনা ও উন্নয়নের দপ্তরের প্রতিনিধি, ভারতের স্থলবন্দর সচীব প্রমুখ। যদিও এই আশ্বাসের পরেও আতঙ্কে বাংলাদেশ ছাড়তে চাইছেন অধিকাংশ সংখ্যালঘু পরিবার।