সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তিনমাসের গণবিক্ষোভের মুখে পিছু হঠল হংকংয়ের ক্যারি ল্যাম সরকার। বিতর্কিত বন্দি প্রত্যর্পণ বিল প্রত্যাহারের কথা ঘোষণা করলেন প্রশাসক ল্যাম। বুধবার বিকেলে সে দেশের সংবাদমাধ্যমে বিবৃতি দিয়ে তিনি জানান, দেশবাসীর দাবি মেনে বিলটি তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁর প্রশাসন, বদলে বিক্ষোভকারীদের তিনি আলোচনায় বসার আহ্বান জানান।
[ আরও পড়ুন: ভারত-রাশিয়া অন্যদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে না: নরেন্দ্র মোদি]
হংকং জুড়ে অশান্তির সূত্রপাত মে মাসে। দেশের মুখ্য প্রশাসক ক্যারি ল্যাম বন্দি প্রত্যর্পণ বিল আনতেই শুরু হয় বিক্ষোভ। বিলের আপত্তিকর অংশ একটাই – হংকংয়ের বন্দিদের চিনের হাতে তুলে দেওয়া হবে এবং তাঁর বিচার হবে চিনে। এর প্রতিবাদে গর্জে ওঠেন সাধারণ মানুষ। রাগে ফুঁসতে ফুঁসতেই পুলিশের জলকামানের সামনে দাঁড়িয়েছিলেন। সময় যত গড়ায়, ততই আন্দোলন দমনে পুলিশের অত্যাচারও বাড়তে থাকে। দেশের বিমানবন্দর, রেল স্টেশন-সহ গোটা যোগাযোগ ব্যবস্থা আন্দোলনের চাপে ব্যাহত হয়ে পড়ে। পুলিশ স্টেশনে, ট্রেনের ভিতরে ঢুকে বিক্ষোভ দমনে ব্যাপক লাঠিচার্জ করার দৃশ্য রীতিমত ভাইরাল হয়ে যায়।বুধবার আন্দোলনের সেই খণ্ডচিত্রে যবনিকা পড়ল।
ক্যারি ল্যামের প্রশাসন জানিয়ে দিল, প্রত্যর্পণ বিল প্রত্যাহার করা হল। কিন্তু দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার ভবিষ্যৎ কী? কারণ, শুধু তো প্রত্যর্পণ বিল নয়। বিক্ষোভকারীদের অন্যতম প্রধান দাবি, ক্যারি ল্যামের অপশাসনের অবসান ঘটানো। তার কী হবে? সেটাই এখন অন্যতম মুখ্য প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিক্ষোভ এবং হংকং, দু’টো যেন একে অন্যের পরিপূরক। প্রায় ২২ বছর আগে ব্রিটেনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিল হংকং। সেটা ১৯৯৭ সাল। সে বছর থেকে চিনের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পর থেকেই বেজিং এই দ্বীপ শহরের উপর নিয়ন্ত্রণ বাড়াতে চেষ্টা করছে। বন্দি প্রত্যর্পণ বিল তারই একটি উদাহরণ। তারপর শুরু হয় ‘আমব্রেলা বিক্ষোভ’। এবার নিজের দেশের বিরুদ্ধেই দাঁড়িয়েছিল লক্ষাধিক মানুষ। আগে অবশ্য চাপের মুখে ক্যারি ল্যাম নতি স্বীকার করেছিলেন। এবার আনুষ্ঠানিক ভাবে বিল প্রত্যাহার করলেন। ব্রিটিশ এক দৈনিকের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, স্থানীয় সময় বুধবার বিকেল ৪টে নাগাদ আইন প্রণেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন হংকংয়ের নেতা ক্যারি ল্যাম। তারপর তিনি সম্ভবত প্রত্যর্পণ বিলটি স্থগিতের ঘোষণা করেন। বিক্ষোভ ব্যাপক রূপ নেওয়ায়, এর আগে বিলটিকে ‘মৃত’ ঘোষণা করেছিলেন ল্যাম।
[ আরও পড়ুন: পাকিস্তান পৌঁছলেই ভিসা, ভারতীয় শিখ তীর্থযাত্রীদের বার্তা ইমরান সরকারের]
আন্দোলনকারীদের আরও দাবি ছিল, পুলিশ যেভাবে তাদের উপরে দমন পীড়ন চালিয়েছে, তা নিয়ে তদন্ত করতে হবে। সরকার বিরোধী বিক্ষোভে যোগ দিয়ে
যাঁরা বন্দি হয়েছেন, তাঁদের মুক্তি দিতে হবে। হংকং-এর আইনসভার প্রত্যেক সদস্য, এমনকী চিফ এক্সিকিউটিভিকেও সরাসরি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হতে হবে। সেই সব দাবি এবার কীভাবে পূরণ হয়, সেটাই দেখার।
The post দেশবাসীর প্রবল চাপের মুখে হংকংয়ে প্রত্যাহার বিতর্কিত বন্দি প্রত্যর্পণ বিল appeared first on Sangbad Pratidin.