দিব্যেন্দু মজুমদার, হুগলি: বাড়িতে বিয়ে। প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে। মেয়ের বিয়েতে কে কীভাবে সাজবে? কী পড়বে? তা নিয়ে রবিবার গভীর রাত পর্যন্ত নিজেদের মধ্যে আলোচনাও করেছে পরিবারের সদস্যরা। নিমন্ত্রণপর্বও শেষ। অতিথিরা বাড়িতে আসতে শুরু করেছেন। সোমবার সকাল হতেই বিশাল উনুনে শুরু হয়ে যায় রান্না। কিছুক্ষণ পরেই শুরু হবে বৃদ্ধি। তারপর গায়ে হলুদ। কিন্তু হঠাৎ আনন্দের মাঝে ছন্দপতন। সবাই তখন পাত্রী পূজাকে ডাকছে। কিন্তু তাঁর সাড়াশব্দ নেই। বন্ধ ঘরের মধ্যে থেকে সাড়া না পেয়ে দরজা ভেঙে সকলেরই চোখ তখন ঝুলন্ত পূজার দিকে। তড়িঘড়ি দেহ নামিয়ে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এই ঘটনায় হুগলির পুরশুঁড়ার আঁকড়ি গ্রামে ।
[আঠাশ বছর নিখোঁজ, নাতনির অন্নপ্রাশনে ঘরে ফিরলেন উর্মিলার স্বামী]
পাত্রীর নাম পূজা সাধুখাঁ (১৯)। উচ্চমাধ্যমিকের পর আর পড়াশোনা করেননি পূজা। কিছুদিন আগে পরিবারের লোকজন তার বিয়ের সম্বন্ধ দেখতে শুরু করে। কিন্তু পূজা বাড়ির লোককে জানায় সে তপন প্রামাণিক নামে এক যুবককে ভালবাসে। তপনের বাড়ি হাওড়ার পাঁচারুল গ্রামে। তপনের এক আত্মীয়র বাড়ি পূজাদের গ্রামে। বছর পাঁচেক আগে সেই আত্মীয়ের বাড়িতেই তপনের সঙ্গে তাঁর পরিচয় ও ধীরে ধীরে তা প্রণয়ে পরিণত হয়। পূজা বাড়িতে জানায় তপনকে ছাড়া সে অন্য কাউকে বিয়ে করতে পারবে না। পরিবারের লোকজন পূজার সুখের কথা ভেবে দুজনের সম্পর্ক মেনে নিয়ে পছন্দের পাত্র তপনের সঙ্গে বিয়ে ঠিক করে। বিয়ের আগের দিনও অনেক রাত পর্যন্ত গল্প করে কাটিয়েছে পূজা। রবিবার সন্ধ্যায় তাঁকে নিয়মমাফিক শাঁখা পরানো হয়। সোমবার সকাল থেকে সকলের সঙ্গে রীতিমতো হই হুল্লোড় করে পূজা। এর মধ্যে হঠাৎ সকলের অগোচরে সে ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেয়। বৃদ্ধিতে বসবে অথচ পাত্রীর দেখা নেই। সবাই তখন পূজার ঘরে গিয়ে ডাকাডাকি শুরু করে। কিন্তু পূজা দরজা না খোলায় তাদের সন্দেহ হয়। এরপর দরজা ভেঙে তারা চমকে যান। দেখেন পূজা সিলিং ফ্যানের সাথে গলায় কাপড়ের ফাঁস লাগিয়ে ঝুলছে। পরিবারের লোকজন পূজাকে উদ্ধার করে স্থানীয় শ্রীরামপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান। সেখানকার চিকিৎসক ওই তরুণীকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
[টেস্ট ড্রাইভের নাম করে মোটরবাইক নিয়ে উধাও দুষ্কৃতী, তাজ্জব তদন্তকারীরা]
পূজার এই অস্বাভাবিক মৃত্যুর কারণ খুঁজে পাচ্ছে না পাত্রীর পরিবার। পছন্দের পাত্রের সাথে বিয়ে দেওয়া হচ্ছিল তা সত্ত্বেও সে কেন এরকম করল তা বুঝতে পারছেন না কেউই। পূজার জামাইবাবু সৌমেন সাধুখাঁ জানান, শ্যালিকার সুখের কথা ভেবে ভালবাসার মানুষের সঙ্গে বিয়ে দেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু তারপরও এরকম ঘটনা ঘটবে তা তারা কল্পনা করতে পারেননি।
The post বিয়ের দিনে পাত্রীর অস্বাভাবিক মৃত্যু, মর্মান্তিক পরিণতিতে হতবাক পরিবার appeared first on Sangbad Pratidin.
