অতিমারীতে এদের কেউ হারিয়েছে বাবাকে। কেউ বা মাকে। কেউ কেউ দু’জনকেই হারিয়ে নিঃস্ব, বিপন্ন। এমন শিশুদের পাশে দাঁড়াতেই ‘সংবাদ প্রতিদিন’ ও ‘ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘ’র মানবিক প্রয়াস ‘আদর’। এমন শিশুদের সন্ধান জানাতে পারেন আপনিও। যোগাযোগ করুন ৯০৮৮০৫০০৪৮ নম্বরে।
অভিরূপ দাস : আধপেটা খেয়েই দিন চলছে। উপার্জন নেই সংসারে। একমাত্র রোজগেরে শ্যামল পাত্রকে ছিনিয়ে নিয়েছে করোনা। তাঁর আকস্মিক মৃত্যুতে গভীর অন্ধকারে স্ত্রী রুমা আর কন্যা সুতপা। দু’বেলা পেটভরে খাওয়া জুটছে না মা ও মেয়ের। কোনওদিন আলুসিদ্ধ ভাত, কোনওদিন স্রেফ নুন দিয়েই ভাত মাখতে হচ্ছে। তার মাঝে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া তো বিলাসিতা। বই, খাতা আপাতত তুলেই রেখেছে সুতপা। দু’পয়সা উপায়ের ফিকির খুঁজছে সে। অথচ মাস দুয়েক আগেও অবস্থা এমনটা ছিল না।
সচ্ছল না হলেও দিন চলে যাচ্ছিল হুগলির (Hooghly) হরিপালের নয়ানগরের এই পরিবারটির। সংসারে পুরুষ বলতে ছিল বছর বিয়াল্লিশের শ্যামল পাত্র। চাকরি ছিল না। কখনও গাছ কাটার কাজ, কখনও এর ওর বাড়িতে ডাক পড়ত ঘর ও গেরস্থালির কাজে। একার রোজগারে সংসার টানছিল জোয়ান ছেলেটা। কে জানত মারণ ভাইরাস সব তছনছ করে দেবে।
[আরও পড়ুন:Coronavirus: ২ বছর বয়সেই পিতৃহারা, কোভিডে গৃহকর্তার মৃত্যুর পর আতান্তরে বর্ধমানের মণ্ডল পরিবার]
শ্যামল পাত্রর দুই মেয়ে। বড় মেয়ে সুপ্রিয়ার বিয়ে হয়ে গিয়েছে। ছোট মেয়ের বয়স পনেরো। সবে দশম শ্রেণিতে উঠেছে। পড়াশোনা ছেড়ে এখন লোকের বাড়িতে কাজ খুঁজছে সুতপা। কিন্তু স্বপ্ন ছিল অন্য। বাবার মতো জোগাড়ের কাজ নয়। পড়াশোনা শিখে চাকরি করার স্বপ্ন দেখত সুতপা। তার সে ইচ্ছেতেই প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছে করোনা (Coronavirus)।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে আকস্মিক একদিন জ্বর আসে শ্যামলের। টেস্ট করাতে রিপোর্ট পজিটিভ আসে। বড় ডাক্তার দেখানোর মতো সামর্থ্য ছিল না। মধুমেহর রোগী শ্যামল চিকিৎসা করার সময়টুকুও দেননি। দিন তিনেক ভুগে জুলাই মাসের ৭ তারিখে মারা যান। কোভিডের আতঙ্কে সে সময় থরহরি কম্প বাংলা।
কোভিডে মৃত শ্যামলকে দেখতেও আসেননি পড়শিরা। পাশে দাঁড়িয়েছিলেন স্থানীয় কয়েকজন। দাহ করার টাকাও ছিল না। করোনায় মৃতের দেহ থেকে যদি সংক্রমণ ছড়ায়! এই আতঙ্কে গ্রামের শ্মশান থেকে ফিরিয়ে দেওয়া হয় মৃতদেহ। পাশের গ্রামের খোলা মাঠেই কাঠ জালিয়ে সৎকার করা হয়। সেই থেকেই চলছে সংগ্রাম। থাকার মতো এক কাঠা জমিও নেই। এক ছটাক জমিতে ছোট্ট একটা ভিটে। আগামী দিন কীভাবে কাটবে জানেন না রুমা। তাঁর কথায়, “জমানো টাকা কিছুই নেই। স্বামীর রোজগারেই চলছিল। এখন যা অবস্থা ভিক্ষে করতে হবে। মেয়ের পড়াশোনা চালানো অসম্ভব।”
[আরও পড়ুন: Coronavirus: করোনা আনল অন্ধকার, পিতৃহীন সন্তানের জন্য লড়াই শুরু মায়ের]
পাশে চাই আপনাকেও
এই সবহারানো অসহায় শিশুদের পাশে দাঁড়াতে পারেন আপনিও। সরাসরি অর্থসাহায্য পাঠানো যাবে ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের অ্যাকাউন্টে।
State Bank of India, Ballygunge Branch,
A/C No : 30391077575
IFS Code : SBIN0003951
Mobile : 9433607740 (Debashish Maharaj)
বিঃ দ্র: টাকা পাঠানোর পর আপনার নাম,ঠিকানা ও সাহায্যের পরিমাণ স্ক্রিনশট-সহ হোয়াটসঅ্যাপ করুন 9433607740 ও 9088050048 নম্বরে। আমরা যথাসময়ে তা প্রকাশ করব। সাহায্যকৃত অর্থ 80G ধারা অনুযায়ী করমুক্ত।