সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ঘন সবুজ জঙ্গল। রাস্তা বিছানো রংবেরঙের পাতা, লতা, গুল্মে। সেই পথেই আমাজনের শোভা দেখতে যাচ্ছিলেন পর্যটকরা। কিন্তু পথে এ কী! বিশাল বড় এক দেহ পড়ে। প্রথমে তো কেউ বুঝতেই পারছিলেন না – কার মৃতদেহ। একটু এগোতেই স্পষ্ট হল অবয়ব – একটি বিশালাকার হাম্পব্যাক, অর্থাৎ একপ্রকার তিমি। হলদেটে চর্বিওয়ালা, খাঁজকাটা দেহ, তার চেয়েও বড় লেজ। দৃশ্য দেখে তো চোখ কপালে সবার।
মেডিক্যাল কলেজের হস্টেলে হাড়ে বাঁধা মশারি! বিতর্ক তুঙ্গে
গভীর সমুদ্রের প্রাণী আমাজনের জঙ্গলে কীভাবে এল? প্রাথমিক বিস্ময় কাটিয়ে সবাই তখন দৈত্যাকৃতি হাম্পব্যাকের ছবি তুলতে আর ভিডিও করতে ব্যস্ত। কেউ কেউ ফিতে নিয়ে মাপতে শুরু করেছেন দৈর্ঘ্য, প্রস্থ, উচ্চতা। অন্তত ২৬ ফুট লম্বা তিমিটি। সঙ্গে সঙ্গে খবরও পৌঁছে যায় বন্যপ্রাণ সংরক্ষক, প্রাণীবিদদের কাছে। বিচো দ্য অ্যাকুয়া নামে একটি সংস্থার সদস্যরা পৌঁছে যান। তাঁরাই জানিয়েছেন, ‘হাম্পব্যাকটি মারা গিয়েছে গভীর সমুদ্রেই। ভরা জোয়ারে জলের তোড় ওই দেহটি জঙ্গলের পাশে এনে ফেলেছে। এটি দিন কয়েক আগেই মারা গিয়েছে।’
ভারতকে জবাব দিতে গিয়ে হাসির খোরাক পাক সাংবাদিক
হাম্পব্যাক প্রজাতির তিমি যে কোনও সমুদ্রেই থাকতে পারে। সাধারণত ১২ থেকে ১৬ মিটার লম্বা এবং ২৫ থেকে ৩০ টন ওজনের হয় এই প্রাণী। পুরুষ হাম্পব্যাক সুন্দর সুর তুলতে পারে। স্ত্রী প্রজাতির তিমিকে আকৃষ্ট করতে একটানা অন্তত ২০ মিনিট সুরেলা থাকতে পারে। শরীরের মেদ বজায় রাখতে কিম্বা মিলন এবং সন্তান উৎপাদনের জন্য গভীর সমুদ্র থেকে কম জলের দিকে চলে আসে। মোহনা বা খাঁড়ির কাছে পৌঁছতে ২৫০০০ কিলোমিটার পর্যন্ত পাড়ি দিতে পারে। তারপর ফের সমুদ্রে ফিরে যায়। এখন আমাজনের জঙ্গলে পড়ে থাকা এই হাম্পব্যাকটি আমাজন নদীর ধারে চলে এসেছিল। তারপর মৃত্যু হয়েছে। এবং নদীর জোয়ারে তা সেই দেহটি অরণ্যের ভিতরে চলে এসেছে। সে যাই হোক, রকমারি সরীসৃপ, বুনো শেয়াল, বেবুন কিম্বা চাঁদোয়া হয়ে আসা বড় গাছগাছালির মাথায় দু, একটা অন্যরকম পাখি দেখার আশায় আমাজনের বিখ্যাত জঙ্গলে পাড়ি দিয়েছেন, তাঁদের তো সোনায় সোহাগা। মৃতই না হয় হল, তবু একটা সামুদ্রিক প্রাণী দর্শন তো হল।
The post আমাজনের ঘন জঙ্গলের পথে এ কী! চোখ কপালে পর্যটকদের appeared first on Sangbad Pratidin.