shono
Advertisement

হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন না অশ্বগন্ধা? করোনা যুদ্ধের ব্রহ্মাস্ত্র খুঁজতে শুরু ক্লিনিকাল ট্রায়াল

৫ লক্ষ মানুষের উপর এই গবেষণা চালানো হবে। The post হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন না অশ্বগন্ধা? করোনা যুদ্ধের ব্রহ্মাস্ত্র খুঁজতে শুরু ক্লিনিকাল ট্রায়াল appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 02:54 PM May 07, 2020Updated: 03:22 PM May 07, 2020

গৌতম ব্রহ্ম: করোনা যুদ্ধে জয়ের মুখ দেখাবে কে? অশ্বগন্ধা না হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন? মডার্ন মেডিসিন না সহস্র বছর পুরনো ভারতীয় আয়ুর্বেদশাস্ত্র? এই নিয়ে চিকিৎসাক্ষেত্রে চলছে জোর জল্পনা। অঘোষিত এই স্বাস্থ্যকর যুদ্ধের অবসান ঘটাতে এবার ময়দানে নামল কেন্দ্র।

Advertisement

কিছুদিন আগেই করোনা চিকিৎসায় আয়ুর্বেদ শাস্ত্রকে মান্যতা দিয়েছে ভারত সরকার। তবে শুধু আয়ুর্বেদ নয়, যোগবিজ্ঞান বা হোমিওপ্যাথির মতো আয়ুশের অন্য বিভাগগুলিকেও সবুজ সংকেত দেওয়া হয়। এই নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের আয়ুশ মন্ত্রক একটি বিজ্ঞপ্তিও জারি করে। এরপর বিভিন্ন রাজ্য আলাদা আলাদাভাবে করোনা রোগীদের আয়ুর্বেদশাস্ত্র অনুসারে ক্বাথ দিতে শুরু করে। কেউ খাওয়ায় অশ্বগন্ধা, কেউ আবার গুরুচি খাওয়ায়। মোটের উপর এর ফলে সুস্থ হয়ে ওঠেন বেশ কয়েকজন রোগী। এরপর দাবি আরও জোরাল হয় যে ভারতীয় আয়ুর্বেদেই রয়েছে করোনার প্রতিষেধক। কিন্তু এনিয়ে কোনও সম্মিলিত ও সংরক্ষিত তথ্য সরকারের হাতে নেই। এমনকী এগুলোর কার্যকারিতা খতিয়ে দেখার কোনও উপায় ছিল না। সেই কারণে আয়ুশমন্ত্রী শিবপ্রসাদ ইয়েসো নায়েক ও কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন বৃহস্পতিবার (৭ মে) একটি কমিটি তৈরি করেন।

[ আরও পড়ুন: রাজ্যে তৈরি কিটে ৫০০ টাকাতেই হবে করোনা পরীক্ষা, স্বীকৃতি দিল ICMR ]

যেসব ভেষজ COVID-19 মোকাবিলায় ব্যবহার করা হবে, তাদের কার্যকারিতা নিয়ে গবেষণা করবে এই কমিটি। এর চেয়ারম্যানের দায়িত্ব সামলাবেন ভূষণ পটবর্ধন। তিনি UGC’র ভাইস চেয়ারম্যান। ICMR-এর সহযোগিতায় CSIR (Council of Scientific & Industrial Research) এর মাধ্যমে আয়ুশ মন্ত্রক, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রক এবং বিজ্ঞান ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রক এই কাজ করবে। অশ্বগন্ধা, যষ্ঠিমধু, গুরুচি ও পিপুল এবং পলি হার্বাল ফর্মুলেশন (AYUSH-64) দিয়ে একটি ট্রায়াল শুরু হবে রোগীদের উপর। এছাড়া মাইল্ড ও মডারেট রোগীদের উপরও প্রয়োগ হবে আয়ুর্বেদের ক্বাথ। এর জন্য আয়ুশ মন্ত্রকের অধীনস্ত চারটি রিসার্চ কাউন্সিল ও ২৫টি রাজ্যের ন্যাশনাল ইন্সিটিউট কাজ করবে। ৫ লক্ষ মানুষের উপর এই গবেষণা চালানো হবে।

এদিকে করোনা যুদ্ধে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের ব্যবহার শুরু হয় বেশ কয়েকটি দেশে। চিকিৎসায় এসেছিল সাফল্যও। অনেক রোগী এই ড্রাগের ফলে সুস্থ হয়ে ওঠেন। ফলে আয়ুশ ও আধুনিক ওষুধের মধ্যে একটি তুলনা চলে এসেছে। তাই শিবপ্রসাদ নায়েক ও হর্ষ বর্ধন একটি অ্যাপ উদ্বোধন করেন যাঁর নাম ‘আয়ুশ সঞ্জীবনী’। সেই অ্যাপ থেকে মানুষ যেমন জানতে পারবেন COVID-19 মোকাবিলায় কী কী ভেষজ আছে বা কোন ভেষজ কতটা খেতে হবে, তেমনই চিকিৎসায় কোনও সুফল পাওয়া গেল কিনা, তার প্রতিক্রিয়াও জানাতে পারবেন। এর ফলে মানুষ আয়ুর্বেদ ব্যবহার করে কতটা ফল পাচ্ছেন, সুস্থ হলে কতদিনে হচ্ছেন, তার সবটাই নথিভুক্ত থাকবে। ফলে তথ্যপঞ্জিকরণের কাজও শুরু হল এই অ্যাপের মাধ্যমে।

[ আরও পড়ুন: আয়ুর্বেদিক পাঁচনের কামাল, বাহরিনের করোনা রোগী সুস্থ শ্যামবাজারের ওষুধে ]

এ প্রসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ আয়ুর্বেদ পরিষদের সহ সভাপতি ডা: প্রদ্যোৎ বিকাশ কর মহাপাত্র জানিয়েছেন, “আয়ুর্বেদের এই প্রয়োগ অবশ্যই হওয়া উচিত। এর ফলে মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যদি বাড়ে তাহলে শুধু করোনা কেন, যে কোনও ভাইরাসঘটিত রোগের মোকাবিলা করতে পারবে মানুষ। আমরা যদি সব ভাইরাসের বিরুদ্ধে শরীরে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে পারি, তার চেয়ে ভাল আর কী হতে পারে?” জে বি রায় আয়ুর্বেদ হাসপাতালের অধ্যাপক ডা: পুলক কান্তি করও একই কথা জানান। তিনি বলেন, “করোনার ওষুধ নিয়ে গবেষণা চলছে চলুক। কিন্তু কবে তার ফলাফল জানা যাবে তার জন্য হাত গুটি বসে থেকে তো লাভ নেই। তাহলে মৃত্যুর হার আরও বাড়বে। এখন এমন ওষুধ প্রয়োজন যা সঙ্গে সঙ্গে কাজে লাগানো যায়। আর তাছাড়া এখনও তো অনুমানের ভিত্তিতেই কাজ এগোচ্ছে। হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন বা প্লাজমা থেরাপিও তেমন কোনও তথ্য প্রমাণ নেই। অথচ দেওয়া হচ্ছে। আয়ুর্বেদের মধ্যে তো আর হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের মতো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই। এত হাজার বছর ধরে ব্যবহার করছে এই সব আয়ুর্বেদের উপাদান। আয়ুর্বেদ প্রয়োগে মানুষ সুস্থও হয়ে উঠেছেন। তাই কেন্দ্রের এই প্রচেষ্টা অবশ্যই সাধুবাদ যোগ্য।” তরুণ আয়ুর্বেদ চিকিসক সুমিত সুর বলেন, “এর ফলে আয়ুর্বেদের সম্মান বাড়ল। যাঁরা আয়ুর্বেদকে অবৈজ্ঞানিক ভাবেন তাঁদের কাছেও এটি সমুচিত জবাব। কেন্দ্রের উদ্যোগ এই উদ্যোগ প্রশংসার যোগ্য।” তবে এর ফলে করোনা ওষুধ বা ভ্যাকসিন আবিষ্কার তেকে দৃষ্টি না সরে, সেই আবেদনও করেছেন আয়ুর্বেদ চিকিৎসকরা।

The post হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন না অশ্বগন্ধা? করোনা যুদ্ধের ব্রহ্মাস্ত্র খুঁজতে শুরু ক্লিনিকাল ট্রায়াল appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement