সুকুমার সরকার, ঢাকা: রোহিঙ্গা গণহত্যায় মামলায় আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতে (ICJ) বড় ধাক্কা খেল মায়ানমার। এবার আদালতের নির্দেশ মায়ানমার সঠিবাবে পালন করছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে তিনজন বিচারকের সমন্বয়ে কমিটি গঠন করল ICJ।
[আরও পড়ুন: হিন্দু ধর্ম নিয়ে কটূক্তির জের, বাংলাদেশের রংপুরে ধৃত মুসলিম যুবক]
নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগে গত সোমবার রাতে এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে ICJ। গণহত্যা বিরোধী আন্তর্জাতিক সনদ লঙ্ঘন ও রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগে মুসলিম দেশগুলির যৌথ সংগঠন ওআইসি’র পক্ষে মায়ানমারের বিরুদ্ধে গত বছর আইসিজেতে মামলা করে গাম্বিয়া। অন্তর্বর্তী আদেশের বিষয়ে গত বছরের ডিসেম্বর মাসে শুনানির পর ২৩ জানুয়ারি আইসিজে গাম্বিয়ার আবেদন গ্রহণ করে এবং মায়ানমারকে রোহিঙ্গা গণহত্যা ঠেকাতে উদ্যোগ নেওয়া-সহ সুনির্দিষ্ট বেশ কিছু বিষয়ে অন্তর্বর্তী আদেশ দেয়। বিশ্বের সর্বোচ্চ আদালত হিসেবে আইসিজের আদেশ বাস্তবায়নে উদ্যোগ নেওয়ার দায়িত্ব ছিল রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের। আইসিজের সেই আদেশের অনুলিপি দুই দিনের মধ্যে হাতে পেয়েই রাষ্ট্রসংঘ মহাসচিব তা নিরাপত্তা পরিষদে পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে আইসিজের আদেশ বাস্তবায়নের বিষয়ে কোনও প্রস্তাব গৃহীত হয়নি। নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য চিনের এ বিষয়ে আগ্রহের ঘাটতি রয়েছে। কয়েক মাস আগে আমেরিকা, ব্রিটেন-সহ নিরাপত্তা পরিষদের সমমনা কয়েকটি সদস্য রাষ্ট্র এক বিবৃতিতে মায়ানমারকে আইসিজের আদেশ মেনে চলার আহ্বান জানায়। এমন পটভূমিতে আইসিজে নিজেই আদেশ মেনে চলা পর্যবেক্ষণ করতে অ্যাডহক কমিটি গঠন করেছে।
আইসিজে জানিয়েছে, তিনজন বিচারকের সমন্বয়ে একটি অ্যাডহক কমিটি গঠিত হবে। ওই কমিটি আইসিজের অন্তর্বর্তী আদেশ বাস্তবায়নের বিষয়টি পর্যবেক্ষণে আদালতকে সহযোগিতা করবে। আইসিজে আরও জানিয়েছে, অ্যাডহক কমিটি মামলায় বিবাদমান দুই পক্ষের সরবরাহ করা তথ্য পর্যবেক্ষণ করবে এবং আদালতকে নির্দিষ্ট সময় অন্তর তাদের মতামত জানাবে। এ ছাড়া সম্ভাব্য করণীয় বিষয়েও কমিটি আদালতকে সুপারিশ করবে। অবশ্য আইসিজের কোনও আদেশ বা সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিলের সুযোগ নেই। তাই আইসিজের আদেশই চূড়ান্ত। আইসিজে ছাড়াও দ্য হেগে আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালতের (ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্ট) কৌঁসুলির দপ্তর মায়ানমার থেকে রোহিঙ্গাদের গণবাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আসার পটভূমিতে সম্ভাব্য গুরুতর আন্তর্জাতিক অপরাধ অনুসন্ধান করছে। আইসিজে রাষ্ট্রের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে পারেন। অন্যদিকে ব্যক্তিবিশেষের অপরাধের বিচারে কাজ করে আইসিসি।