সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পদাঙ্ক অনুসরণ করে এবার কড়া অভিবাসন আইন আনতে চলেছে ভারত সরকারও। মঙ্গলবারই লোকসভায় পেশ হয়েছে অভিবাসন ও বিদেশি নাগরিক সংশোধনী বিল। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই বিলটি পেশ করেছেন। যদিও কেন্দ্রের নতুন ওই অভিবাসন আইনের প্রবল বিরোধিতা এসেছে কংগ্রেস এবং তৃণমূলের তরফ থেকে।

মঙ্গলবার নিত্যানন্দ রাই বিলটি পেশ করে দাবি করেছেন, শতাব্দীপ্রাচীন অভিবাসন আইনের সরলীকরণ, জাতীয় নিরাপত্তা শক্তিশালী করা ও অপরাধীদের কঠোর শাস্তি দেওয়ার উদ্দেশে নতুন আইন আনা হচ্ছে। পাসপোর্ট (ভারতে প্রবেশ) আইন, ১৯২০, বিদেশি নিবন্ধন আইন, ১৯৩৯, ফরেনার্স অ্যাক্ট, ১৯৪৬ এবং অভিবাসন (দায়বদ্ধতা) আইন, ২০০০-এই চারটি আইন বাতিল করে নতুন আইন হচ্ছে। যদিও বিরোধীদের দাবি, মূলত বাংলাদেশ থেকে ভারতে এসে বসবাস করা বাংলাদেশি মুশলিমদের ধরপাকড় করাই কেন্দ্রের এই নয়া আইনের লক্ষ্য।
কী আছে ওই বিলে?
প্রস্তাবিত আইন অনুযায়ী, কোনও বিদেশি যদি ভিসার মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরও ভারতে থেকে যান, তাহলে তাঁর তিনবছর পর্যন্ত জেল, তিন লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে। দালালদের ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে। অনুপ্রবেশকারীদের জন্য কারাবাস ও জরিমানার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। অনুপ্রবেশের ক্ষেত্রে পাঁচ বছর কারাবাস, পাঁচ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে এই প্রস্তাবিত আইনে। এখানেই শেষ নয়, কোনও বিদেশি যদি ভারতের হাসপাতাল এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির অধীনে থাকেন তাহলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সেই বিষয়ে প্রশাসনকে জানাতে হবে। এর পাশাপাশি কোনও বিদেশি যদি কারও বাড়িতে ভাড়া থাকেন, তাহলে সেই বাড়ির মালিককেও বিষয়টি প্রশাসনকে জানাতে হবে। এর বাইরে ইমিগ্রেশন অফিসারদের বিনা পরোয়ানাতেই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করার ক্ষমতা দেওয়া হচ্ছে। কোনও অভিবাসী বা বিদেশি নাগরিকের ভারত সরকারের বিরোধী কোনও অবস্থান নেওয়ার রেকর্ড থাকলে তাঁদের ভারতে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার বিধান রয়েছে। এই বিলটি আইনে পরিণত হওয়ার পর সেই আইন লঙ্ঘন করলে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে।
বিরোধীদের দাবি, এই আইনে নাগরিকদের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন করা হবে। বিল পেশের পর কংগ্রেসের মণীশ তিওয়ারি বলেছেন, "বিলটি সর্বনাশা ও দমনমূলক। কোনও ভারতীয়র যদি সরকারের সমালোচনা করার ইতিহাস থাকে, তাহলে তাঁকেও দেশে ঢুকতে না দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।" তৃণমূলের সৌগত রায় বলছেন, অভিবাসন নিয়ে অনেকগুলি আইন ইতিমধ্যেই আছে। এই নতুন আইনের দরকারটা কী? বিরোধীরা যৌথভাবে বিলটিকে সংসদীয় কমিটিতে পাঠানোর আর্জি জানিয়েছে।