সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অতীতে বহু ম্যাচ নিজে হাতে জিতিয়েছেন তিনি। কিন্তু রাজনীতির মাঠে তাঁকে ম্যাচ গড়াপেটার সম্মুখীন হতে হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন সদ্য প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান (Imran Khan)। শনিবার করাচির একটি সভায় তিনি বলেন, গত তিন-চার মাস ধরে তাঁকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছিল কিছু বিদেশি শক্তি। এই অভিযোগ তিনি আগেও করেছেন। সরাসরি না বললেও আমেরিকার দিকেই আঙুল তুলেছেন ইমরান। পাশাপাশি তাঁর দল পিটিআই ছেড়ে যাওয়া কিছু নেতা এবং পাকিস্তানের কয়েকজন সাংবাদিক তাঁকে সরানোর পরিকল্পনা করেছেন বলেও দাবি তাঁর।
ক্রিকেটের উদাহরণ টেনে ইমরান বলেছেন, “আমি জানতাম ম্যাচ ফিক্স করা হয়েছে। ডেপুটি স্পিকার বলেছিলেন বিদেশি শক্তির মদতেই অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয়েছে এবং সেই সময় সাংসদ কেনাবেচা হচ্ছিল। কিন্তু সেই অভিযোগের তদন্ত না করে আস্থা ভোট করানোর সিদ্ধান্ত নেয় সুপ্রিম কোর্ট।” এই পদক্ষেপকেই ম্যাচ গড়াপেটার সঙ্গে তুলনা করেছেন বিশ্বকাপজয়ী পাক (Pakistan) অধিনায়ক।
[আরও পড়ুন: মদ্যপ অবস্থায় গুরুদ্বারে যাওয়ার অভিযোগ খোদ পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে, পুলিশের দ্বারস্থ বিজেপি]
আস্থা ভোট পিছিয়ে দিতে চেয়েছিলেন ইমরান, তাই তাঁর কথা শুনে সংসদ ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত পাক প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি। সেই কাজকে ‘অসাংবিধানিক’ তকমা দিয়ে দেশের সুপ্রিম কোর্ট ফের আস্থা ভোট করার নির্দেশ দেন। সেই ভোটে হেরে প্রাধনমন্ত্রীর কুরসি থেকে সরে যেতে হয় ইমরানকে। তারপর থেকেই দেশে নিজের সমর্থন বাড়ানোর আপ্রাণ চেষ্টা করছেন তিনি। সেরকমই এক জনসভায় শনিবার তিনি বলেন, “আমি জানতে চাই পাকিস্তানের মানুষ কি মনে করেন আমার সরকার কোনও ষড়যন্ত্রের কারণে শেষ হয়েছে?” সভায় উপস্থিত সকলকে তিনি হাত তুলে এই বক্তব্যে সমর্থন জানাতে বলেন।
পাকিস্তানের বিদেশনীতি নিয়ে তিনি বলেছেন, “আমি ভারত বিরোধী নই। কোনও দেশের বিরোধিতা করিনি আমি। আমি শান্তি এবং মানবতার পক্ষে। সব দেশের সঙ্গেই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রাখতে চাই আমি। কিন্তু কারও দাসত্ব করতে রাজি নই।” করাচির সভায় তিনি খোলাখুলি ভাবে আমেরিকার (USA) দিকে আঙুল তুলেছেন। পাকিস্তানের মার্কিন দূতাবাসে বসেই তাঁকে সরানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি। যদিও এক পাক আধিকারিক সাংবাদিক সম্মেলন করে এই দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন।
অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে ভোটাভুটি করানোর জন্য মাঝরাতে খোলা হয় পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট। সেই নিয়ে ইমরান বলেন, “আমি জানতে চাই আমার কী অপরাধ ছিল যে কারণে মাঝরাতে বিচার শুরু হল।” প্রসঙ্গত, ইমরান প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন আমেরিকায় পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূতকে হুমকি দেওয়া হয়েছিল বলেও অভিযোগ করেছিলেন ইমরান। যদিও সেই ঘটনার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। প্রধানমন্ত্রিত্ব খুইয়ে ফের কি ক্ষমতায় ফিরতে পারবেন ইমরান? ভবিষ্যৎই উত্তর দেবে সেই প্রশ্নের।