সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বছর ছয় আগেকার ঘটনা। হাঁপানিতে প্রবল অসুস্থ হয়ে মাত্র ৯ বছর বয়সেই প্রাণ হারায় ব্রিটেনের (UK) এল্লা আদু কিসি ডেবরা। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিয়ে মামলা চলছিল। সম্প্রতি সেই মামলায় বায়ুদূষণকে (Air Pollution) দায়ী করল আদালত। বলা হল, নির্দিষ্ট সহনক্ষমতার চেয়ে অনেক বেশি বিষাক্ত নাইট্রোজেন ডাই অক্সাইড ঢুকেছিল এল্লার শরীরে। তাতেই তার শ্বাসকষ্টের সমস্যা এবং মৃত্যু। এই রায় শুনে তার মায়ের প্রতিক্রিয়া, এতদিন পর মেয়ে সুবিচার পেল। পাশাপাশি আদালতের এই পর্যবেক্ষণের কথা উল্লেখ করে তিনি জনস্বাস্থ্য নিয়ে ব্রিটিশদের সতর্কও করেছেন।
লন্ডনের দক্ষিণপূর্বে (Southeast London) থাকত এল্লা। জানা গিয়েছে, ২০১৩ সালে মৃত্যুর আগের তিন বছরে অন্তত ৩০ বার তাকে হাসপাতালে ভরতি হতে হয়েছে। অর্থাৎ গড়ে বছরে ১০ বার অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল সে। তার মৃত্যুর পর ২০১৪ সাল থেকে বিচারবিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়।
[আরও পড়ুন: কাস্পিয়ান সাগরের উপকূলে উদ্ধার বিপন্ন প্রজাতির প্রায় ৩০০টি সিলের মৃতদেহ, তদন্তে রাশিয়া]
এল্লার বাসস্থান এলাকার পরিবেশ খতিয়ে দেখে বোঝা যায়, শুধুমাত্র যানজটের কারণেই সেখানকার বাতাস নাইট্রোজেন ডাই অক্সাইডের ভাগ অনেক বেশি। প্রতিদিন নিঃশ্বাসের সঙ্গে তা শরীরে ঢুকেই মেয়েটির শ্বাসকষ্টের সমস্যা তৈরি করেছে। আরও জানা গিয়েছে, ওই এলাকায় বায়ুদূষণের মাত্রা WHO’র বেঁধে দেওয়া মাত্রা ছাড়িয়ে গিয়েছে অনেক আগেই। সেই হিসেবে তা নিয়মভঙ্গকারীও। আদালত পর্যবেক্ষণে এও জানিয়েছে যে এল্লার মাকে মেয়ের অসুস্থতার কারণ ঠিকমতো জানানো হয়নি চিকিৎসকদের তরফে। তাহলে তিনি মেয়েকে সুরক্ষিত রাখতে বিশেষ ব্যবস্থা নিতে পারতেন, এড়ানো যেত মৃত্যু।
[আরও পড়ুন: করোনায় আক্রান্ত হলেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ]
পরিবেশ দূষণ নিয়ে কাজ করা বিশেষজ্ঞদের মতে, এল্লার মৃত্যুর কারণ হিসেবে বায়ুদূষণকে দায়ী করা একটা গুরুত্বপূর্ণ সংকেত। যা থেকে দূষণ কতটা প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে, তা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে। এটা জনস্বাস্থ্যে জরুরি অবস্থার মতোই সংকটজনক পরিস্থিতি। সম্প্রতি ব্রিটেনে বরিস জনসন প্রশাসন পরিবেশ নিয়ে বেশ সচেতন হয়ে উঠেছে। জলবায়ু পরিবর্তন রুখে পরিবেশ বাঁচাতে ‘সবুজ বিপ্লব’-এর পথে হেঁটে নানা পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এমনই সময়ে এল্লার মৃত্যু নিয়ে আদালতের সিদ্ধান্ত বেশ গুরুত্বপূর্ণ এবং শিক্ষণীয় হয়ে উঠল বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহলের একাংশ। নাগরিক এবং প্রশাসন – উভয়েরই দূষণ নিয়ে সচেতন হওয়ার সময় এসেছে বলে মনে করছেন তাঁরা।