সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: দেশরক্ষায় বংশানুক্রমে কাজ করে গিয়েছেন। ইংরেজদের (British) হঠিয়ে দেশ স্বাধীন করেছেন একদা। আর এবার বহিঃশত্রুর হাত থেকে সীমান্ত সুরক্ষার কাজ করছেন তাঁরা। ‘সেনা’ পরিচয়ের বাইরে আরেক পরিচয় নিয়ে গর্বিত তাঁরা – কৃষক পরিবারের সন্তান। পাঞ্জাব, হরিয়ানার কৃষকদের একটা বড় অংশই ভারতীয় সেনাবাহিনীর সদস্য ছিলেন। স্বাধীনতা দিবসে (Independence Day) প্রথামাফিক কুচকাওয়াজের অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে কেন্দ্রকে তাঁরা কেন্দ্রকে ‘কালো ইংরেজ’দের সঙ্গে তুলনা করলেন। তাঁদের বার্তা, এতদিন ‘সাদা ইংরেজ’দের বিরুদ্ধে লড়ে স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনা হয়েছে। এবার ‘কালো ইংরেজ’দের বিরুদ্ধে লড়তে হচ্ছে। তাঁরা দেশের মানুষ। তাই এই লড়াই বেদনাদায়ক। পাশাপাশি এও স্পষ্ট করে দিলেন, কেন্দ্রের নয়া তিন কৃষি আইন (Farm law) প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত পিছু হঠবেন না তাঁরা।
দেশের ৭৪ তম স্বাধীতা দিবসে দিল্লি-পাঞ্জাব সীমানার সিংঘুতে অন্য ছবি। জাতীয় পতাকা উত্তোলন, কুচকাওয়াজ, শুভেচ্ছা বিনিময় – গোটা সকাল যাঁরা সিংঘু (Singhu) বর্ডার মাতিয়ে রাখলেন, তাঁরা সকলেই কৃষক পরিবারের প্রাক্তন সেনা সদস্য। কেন্দ্রের তিন নয়া কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। স্বাধীনতা দিবসে বিশেষ পরিকল্পনা ছিলই। এদিন বিভিন্ন রেজিমেন্টের প্রাক্তন সেনারা একত্রে কুচকাওয়াজ হয়। সেইমতোই এদিনও কেন্দ্র বিরোধী বার্তা দিলেন আন্দোলনে শামিল কৃষকরা। প্রতিবাদের ঝাঁজ বাড়িয়ে কেন্দ্রকে ‘কালা ইংরেজ’দের সঙ্গে তুলনা করলেন। বললেন, ”কেন্দ্রের নতুন তিনটি কৃষি আইন আমাদের অস্বিত্বের সংকট। তাই এসব প্রত্যাহার করতেই হবে। তা না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলনের পথ থেকে সরব না।”
[আরও পড়ুন: দাম উঠেছিল ১৫০ কোটি, শেষমেশ নামমাত্র মূল্যে বিক্রি হল Vijay Mallya’র কিংফিশার হাউস]
তবে এবারের স্বাধীনতা দিবসে বাড়তি সতর্কতা নেওয়া হয়েছিল কৃষকদের সংগঠনের তরফে। গত ২৬ জানুয়ারি, সাধারণতন্ত্র দিবসে (Republic Day) আচমকা লাল কেল্লায় পতাকা উড়িয়েছিল দীপ সিধু নামে এক যুবক। জাতীয় নিরাপত্তায় তা বড়সড় গাফিলতির ইঙ্গিত ছিল। এই ঘটনায় জড়িয়ে গিয়েছিল কৃষক সংগঠনের নাম। যদিও দীপ সিধু সংগঠনের কেউ নয় বলে দাবি করেছেন তাঁরা। এবার সেই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে সিংঘুতে নিরাপত্তায় বাড়তি নজর দেওয়া হয়েছে। সংগঠনের তরুণ, যুবদের বিশেষ করে সতর্ক করা হয়। অশান্তি এড়াতে এবার কেন্দ্রীয় স্তরে কোনও অনুষ্ঠান হয়নি। গ্রামভিত্তিতে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান হয়। সবচেয়ে বড় অনুষ্ঠানটি হয়েছে পাঞ্জাবে, ভগত সিংয়ের গ্রামের বাড়িতে।