নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: ভারতীয় সংসদীয় গণতন্ত্রের ইতিহাসে ‘নজিরবিহীন’ কাণ্ড ঘটেছে সোমবার। শীতকালীন অধিবেশনে সংসদে নিরাপত্তা ইস্যুতে হট্টোগোলের জেরে লোকসভা এবং রাজ্যসভা মিলিয়ে ৯২ জন সাংসদকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে গান্ধী মূর্তির পাদদেশে এর বিরুদ্ধে একজোট হয়ে বিক্ষোভে দেখাল ইন্ডিয়া (INDIA) জোট। উপস্থিত ছিলেন মল্লিকার্জুন খাড়গে থেকে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিকে সোমবার বিকেলেই রয়েছে ইন্ডিয়া জোটের বৈঠক। অন্যদিকে বিজেপির (BJP) সংসদীয় দলের বৈঠকও রয়েছে এদিন। সব মিলিয়ে রাজধানীতে শাসক-বিরোধী উত্তেজনার পারদ চড়ছে।
গত বুধবার লোকসভায় হামলার ঘটনার পর থেকেই সংসদ ভবনের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে অধিবেশনে সরব হয়েছেন বিরোধীরা। এই বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের (Amit Shah) বিবৃতির দাবিতে সংসদ উত্তাল করে তোলেন তাঁরা। ওয়েলে নেমে স্লোগান তোলেন। সোমবার সেই অপরাধে শীতকালীন অধিবেশেনের বাকি দিনগুলির জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছে লোকসভা এবং রাজ্যসভার মোট ৭৮ জন বিরোধী সাংসদকে। এর প্রতিবাদে মঙ্গলবার সকালে সংসদ চত্বরের গান্ধী মূর্তির পাদদেশে বিক্ষোভ দেখাল ইন্ডিয়া জোট।
গান্ধী মূর্তির পাদদেশে বিক্ষোভে ছিলেন তৃণমূল (TMC) সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, মালা রায়, দোলা সেন প্রমুখ। বিক্ষোভ কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন কংগ্রেস (Congress) সাংসদরাও। নেতৃত্ব দেন মল্লিকার্জন খাড়গে। প্রশ্ন উঠছে, সংসদ কক্ষের বাইরের পাশাপাশি ভিতরেও কী বাকি বিরোধী সাংসদরা প্রতিবাদ দেখাবেন। সেক্ষেত্রে সাসপেনশনের সংখ্যা মঙ্গলবার বাড়তে পারে। তাৎপর্যপূর্ণভাবে মঙ্গলবার বিকেলেই রয়েছে ইন্ডিয়া জোটের বৈঠক। মনে করা হচ্ছে, এই বৈঠকে লোকসভা ভোটের ঘুঁটি সাজানোর পাশাপাশি সংসদ হামলার প্রতিবাদ সংক্রান্ত পরবর্তী কৌশল নিয়েও আলোচনা করবেন বিরোধীরা।
এদিকে একই দিনে ছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (PM Narendra Modi) নেতৃত্বে বিজেপির সংসদীয় দলের বৈঠক। রুটিন বৈঠক হলেও যা ছিল বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। বৈঠক শেষে বিরোধীদের চূড়ান্ত কটাক্ষ করলেন মোদি। তাঁর কথায়, বিধানসভা নির্বাচনে হেরে বিচলিত হয়ে পড়েছেন বিরোধীরা। তার জেরেই ভুল কাজ করছেন। উল্লেখ্য, আজ ইন্ডিয়া জোটের বৈঠকের পরেই আগামিকাল মোদির সঙ্গে দেখা করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সব মিলিয়ে ভরা শীতে রাজনৈতিক উষ্ণতার পারদ চড়ছে দিল্লির দরবারে।