সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের প্রায় এক যুগ পর জম্মু ও কাশ্মীরে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন সেখানকার জনতা। শনিবার এখানে শেষ হয়েছে বিধানসভা নির্বাচন। এই নির্বাচনে ভূস্বর্গের দখল নিতে চেষ্টার কোনও ত্রুটি রাখেনি বিজেপি। হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ জম্মুকে হাতিয়ার করে এবার উপত্যকায় ঢালাও প্রচার চালিয়ে গিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি থেকে অমিত শাহের মতো ভিভিআইপিরা। তবে রিপোর্ট বলছে জম্মু ও কাশ্মীরে উপত্যকাবাসীর মন কাড়তে ব্যর্থ গেরুয়া শিবির। এমনকি বিশেষজ্ঞ মহলের অনুমান মতো ত্রিশঙ্কুর দিকেও গড়াচ্ছে না পরিস্থিতি। রিপোর্ট বলছে, এখানে ক্ষমতায় আসতে চলেছে এনসি ও কংগ্রেসের জোট অর্থাৎ ইন্ডিয়া জোট।
কাশ্মীরে ৪৭ ও জম্মু ৪৩, মোট ৯০ আসনের জম্মু ও কাশ্মীরে মোট ৩ দফায় শেষ হয়েছে বিধানসভা নির্বাচন। শনিবার একাধিক সংস্থার বুথ ফেরত সমীক্ষার যে রিপোর্ট প্রকাশ্যে এসেছে সেই অনুযায়ী, ইন্ডিয়া টুডের সিভোটার (India Today-CVoter)-এর দাবি, ৪০-৪৮টি আসন পেতে চলেছে ন্যাশনাল কনফারেন্স ও কংগ্রেসের জোট। ২৭-৩২ আসন পেতে পারে বিজেপি, মেহবুবা মুফতির পিডিপি পেতে পারে ৬-১২টি আসন এবং অন্যান্যরা ৬-১১টি।ভাস্কর রিপোর্টারস পোল (Bhaskar Reporters Poll)-এর দাবি অনুযায়ী, ন্যাশনাল কনফারেন্স ও কংগ্রেস জোট পেতে পারে ৩৫-৪০, বিজেপি ২০-২৫, পিডিপি ৪-৭ এবং অন্যান্য ১২-১৮। রিপাবলিক-গুলিস্তান নিউজ (Republic-Gulistan News)- এর রিপোর্ট অবশ্য ত্রিশঙ্কুর দিকে ইঙ্গিত করছে। এদের রিপোর্ট অনুযায়ী, ৩১-৩৬টি আসন পেতে পারে এনসি-কংগ্রেস জোট, বিজেপি পেতে পারে ২৮-৩০টি এবং পিডিপি ৫-৭টি।
জম্মু ও কাশ্মীরের বিধানসভা নির্বাচনে এবারের লড়াই অত্যন্ত কঠিন হবে বলে শুরু থেকেই মনে করছিল রাজনৈতিক মহল। বিশেষ করে পিডিপি আলাদাভাবে লড়াইয়ে নামায় বিজেপি ও কংগ্রেস সমস্যায় পড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছিল। যদিও ভোটের ফল নিজেদের দিকে আনতে চেষ্টার কোনও কসুর করেনি বিজেপি। সন্ত্রাসকে নির্মূলের প্রতিশ্রুতির পাশাপাশি ভগ্নপ্রায় মন্দির সংস্কার ও পুনর্গঠন, কাশ্মীরের পণ্ডিত সম্প্রদায়ের পুনর্বাসন এমনকি মহিলাদের বার্ষিক ১৮ হাজার টাকা করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। তবে এত কিছুর পরও টার্গেট সিট হিসেবে পরিচিত জম্মুতেও এবার বিজেপি আশানুরূপ ফল করছে না বলেই বিশেষজ্ঞদের ধারণা।
অন্যদিকে, ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার ও উপত্যকার মানুষের অধিকার ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ তুলে এবারের ভোটে প্রচারে নেমেছিল ইন্ডিয়া জোট। ঘৃণার বদলে ভালবাসার দোকান খোলার বার্তা দিয়েছিল কংগ্রেস। বুথ ফেরত সমীক্ষার গতিপথ যে দিকে মোড় ঘুরেছে তাতে স্পষ্ট বার্তা, ইন্ডিয়া জোটেই আস্থা রাখছে ভূস্বর্গের জনতা। যদিও এক্সিট পোল ভোটের ফলাফলের পূর্বাভাস মাত্র। অনেক সময় এক্সিট পোলের রিপোর্ট বাস্তবের সঙ্গে মেলেও না। ফলে আগামী ৮ অক্টোবর ভোটের ফল প্রকাশের পরই স্পষ্ট হবে কার দখলে যেতে চলেছে ভূস্বর্গ।