নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: বিনা যুদ্ধে বিজেপির হাতে অধ্যক্ষ পদ তুলে দেওয়ার ঘোরতর বিরোধী ‘ইন্ডিয়া’। লোকসভার অধ্যক্ষপদ সহজেই বিজেপি পেয়ে যাক তা কোনওভাবেই হতে দিতে চাইছে না ‘ইন্ডিয়া’। সূত্রের খবর, ঠিক যেভাবে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে যশবন্ত সিনহাকে প্রার্থী করা হয়েছিল এবারও বর্ষীয়ান কাউকে প্রার্থী করতে চাইছে তৃণমূল।
এনডিএ-র শরিকদল টিডিপি বা জেডিইউয়ের কাউকে অধ্যক্ষ করা হলে তাঁকেই ‘ইন্ডিয়া’র পক্ষ থেকে সমর্থন করা হবে বলেই একপ্রকার ঠিক হয়েছে। তবে, বিজেপি যদি শরিকদের হাতে না ছেড়ে নিজেদের দলের কাউকে অধ্যক্ষ পদের জন্য বেছে নেয় তাহলে ইন্ডিয়া (INDIA) জোটের পক্ষ থেকেও পালটা প্রার্থী দেওয়া হতে পারে। একইসঙ্গে বিগত দু-বার লোকসভায় সহ-অধ্যক্ষর পদটি খালি পড়ে থাকলেও এবার যাতে ‘ইন্ডিয়া’য় থাকা দলগুলির কোনও সাংসদকে সেই পদে বসানো হয় তা নিয়েও সরকারের উপর চাপ সৃষ্টির পরিকল্পনা করছে বিরোধীরা।
[আরও পড়ুন: কন্যাশ্রীর ধাঁচে ‘নিযুত ময়না’ প্রকল্প হিমন্তের, প্রতি মাসে ছাত্রীদের স্টাইপেন্ড সরকারের]
অধ্যক্ষপদ নিয়ে ‘ইন্ডিয়া’র সমস্ত দলের মধ্যে আলোচনাও শুরু হয়ে গিয়েছে। ২৪ জুন সংসদের অধিবেশন শুরু হওয়ার পর তারা নিজেদের মধ্যে বৈঠকও করতে পারে। সূত্রের খবর, ডিএমকের (DMK) বর্ষীয়ান নেতা, সাতবারের সাংসদ ৮৩ বছরের টি আর বালুকে জোটের পক্ষ থেকে লোকসভার অধ্যক্ষপদের জন্য প্রার্থী করার বিষয়ে আলোচনা চলছে। অধ্যক্ষ পদ নিয়ে টিডিপির সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছে ইন্ডিয়া। সেক্ষেত্রে বালুর দক্ষিণি পরিচয়কে কাজে লাগিয়েই সহানুভূতি আদায় করার চেষ্টা করা হতে পারে। আবার টিডিপি (TDP) চাইছে অধ্যক্ষ করা হোক তাদের দল থেকেই। অতীতে তাদের দলের জিএমসি বালাযোগী লোকসভার প্রথম দলিত অধ্যক্ষ হিসাবে পদ সামলেছেন। এবার বালাযোগীর ছেলে হরিশ মাথুর বালাযোগীকে অধ্যক্ষ করা হোক বলেই চাইছে তারা। তাতে নিজেদের রাজ্য অন্ধ্রপ্রদেশে দলিত সম্প্রদায়ের ভোটের ক্ষেত্রে প্রভাব পড়বে বলেই রাজনৈতিক হিসাব কষছে চন্দ্রবাবুর দল।
[আরও পড়ুন: রাজ্যে বাড়তি ২ দিন কেন্দ্রীয় বাহিনী, তবে রাখা যাবে না স্কুলে, নির্দেশ হাই কোর্টের]
অন্যদিকে, লোকসভার অধ্যক্ষ পদ বিজেপি যে নিজেদের দখলে রাখতে মরিয়া সে কথা বলার অপেক্ষা রাখে না। বিজেপি (BJP) আবারও কি রাজস্থানের কোটার সাংসদ ওম বিড়লার হাতেই অধ্যক্ষপদ তুলে দেবে নাকি, ওড়িশার বিজেডির বর্ষীয়ান নেতা ভর্তৃহরি মহতাব, যিনি এবারে বিজেপির টিকিটে জিতে এসেছেন, তাঁকেই অধ্যক্ষ হিসাবে বেছে নেবে? এইসব নিয়ে বিজেপির অন্দরমহলে জল্পনা চলছে। চলতি মাসের ২৪ তারিখ থেকে লোকসভার বিশেষ অধিবেশনে বসতে চলেছে। যা চলবে ৩ জুলাই পর্যন্ত। প্রথম দিন লোকসভার নবনির্বাচিত সাংসদদের শপথ গ্রহণপর্ব মিটে গেলেই লোকসভার অধ্যক্ষ পদের নির্বাচন হবে। তারপর রাষ্ট্রপতির ভাষণ এবং তার উপর আলোচনা হবে। রাজ্যসভার অধিবেশন শুরু হবে ২৭ তারিখ থেকে। শেষ হবে একইসঙ্গে। শপথ গ্রহণপর্বে লোকসভা পরিচালনা করবেন প্রোটেম স্পিকারই। লোকসভার সবথেকে বেশিবারের সাংসদকেই প্রোটেম স্পিকারের দায়িত্ব দেওয়ার প্রথা রয়েছে।