সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাশিয়ার (Russia) মাটিতে চিনের সঙ্গে যৌথ সামরিক মহড়ায় অংশ নিয়েছে ভারত। তারপরেই ভারতে নিযুক্ত রুশ রাষ্ট্রদূত ডেনিস অলিপাভ জানিয়ে দিলেন, ভারত-চিন-রাশিয়া এই তিন দেশ মিলে পারস্পরিক সহায়তা গড়ে তুলতে পারে। তিনি আরও বলেছেন, ভারত এবং চিনের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে যা সমস্যা রয়েছে, সেগুলির অপব্যবহার করে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধি করছে বেশ কিছু দেশ।
রবিবার রুশ রাষ্ট্রদূত অলিপাভ বলেছেন, “ভারত (India) এবং চিনের (China) মধ্যে সমস্ত বিবাদ মিটে যাক, রাশিয়া সেটাই চায়। যদি তিনটি দেশ মিলে একসঙ্গে কাজ করে, তাহলে দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে যা সমস্যা রয়েছে সেটা মিটে যেতে পারে। রাশিয়া যে প্রসঙ্গগুলিকে অগ্রাধিকার দেয়, তার মধ্যে অন্যতম হল ভারত-চিনের বিবাদ মেটান। আমার মতে, ভারত,চিন এবং রাশিয়া- এই তিন দেশ একত্রিত হয়ে কাজ করতে পারে, এমন সম্ভাবনা প্রবল। একসঙ্গে কাজ করার মানসিকতা রয়েছে তিন দেশেরই।”
আমেরিকা-সহ বেশ কয়েকটি দেশ ভারত-চিন বিবাদের সুযোগ নিয়ে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধি করে, এমনটাই মনে করেন অলিপাভ। তিনি বলেছেন,”আমাদের বিরোধী দেশগুলি যেভাবে নিজেদের বিদেশ নীতি নির্ধারণ করছে, তার থেকে একবারে আলাদা হবে ভারত,চিন এবং রাশিয়ার জোট। ভূ-রাজনৈতিক ক্ষেত্রে নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করার জন্য ভারত এবং চিনের সমস্যাকে ব্যবহার করছে বেশ কিছু দেশ।” নাম না করে আমেরিকাকেই বিঁধেছেন অলিপাভ। তবে তিনি বলেছেন, কোয়াডে থেকেও আমেরিকার আগ্রাসী নীতিকে আটকে দিয়েছে ভারত।
[আরও পড়ুন: ‘দেশের শত্রু বাইডেন’, বাড়িতে FBI হানার পর দাবি ক্রুদ্ধ ট্রাম্পের]
ইউক্রেনে আক্রমণ করার আগে থেকেই রাশিয়াকে ‘বিপজ্জনক’ বলে দাগিয়ে দিয়েছে আমেরিকা। সেই সঙ্গে বেশ কিছু এলাকায় দু’টি প্রতিবেশী দেশের মধ্যে বিবাদ বাধিয়ে তুলছে আমেরিকা। তার ফলে একটি দেশকে নিজের কাছে টেনে নিয়ে সেই দেশের উপরে আধিপত্য স্থাপন করবে আমেরিকা, এমনটাই মত অলিপাভের। অন্যদিকে, রাশিয়ার সঙ্গে ব্রিকস-সহ বেশ কয়েকটি জোটে রয়েছে ভারত এবং চিন। কিন্তু সেখানে কোনওরকম বিরোধিতাকে প্রশ্রয় দেওয়া হয় না বলেই দাবি অলিপাভের।
আমেরিকার প্রবল চাপ সত্বেও রাশিয়ার বিরোধিতা করেনি ভারত। উলটে সেদেশ থেকে কম দামে তেল আমদানি করেছে। খুব অল্প সংখ্যক প্রতিনিধি দল পাঠালেও চিনের সঙ্গে একই মঞ্চে সামরিক মহড়ায় অংশ নিয়েছে ভারত। সেই মহড়া ঘিরেও অসন্তোষ প্রকাশ করেছে আমেরিকা। এহেন পরিস্থিতিতে রুশ রাষ্ট্রদূতের মন্তব্য বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মত ওয়াকিবহাল মহলের। তবে সীমান্ত বিবাদ ভুলে ভারত এবং চিন কি একে অপরের সঙ্গে সহযোগিতা করবে?