সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে বিভক্ত বিশ্ব। একদিকে আমেরিকা ও ন্যাটো জোট। অন্যদিকে দাঁড়িয়ে রাশিয়া, চিন ও ইরান। এহেন পরিস্থিতিতে চলতি সপ্তাহে ইন্দোনেশিয়ায় শেষ হয়েছে জি-২০ সম্মেলন। কূটনীতির সূত্র মেনে, ভারসাম্যের খেলায় ‘বন্ধু’ রাশিয়ার হাত না ছেড়েও ইউক্রেনে যুদ্ধ থামানোর বার্তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আর এতেই আপ্লুত আমেরিকা।
জি-২০ শীর্ষ নেতৃত্বের সম্মেলন শেষে ঘোষণাপত্রে ভারত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে বলে শুক্রবার বিবৃতি দেয় হোয়াইট হাউস। ইউক্রেন যুদ্ধের (Ukraine War) বিরুদ্ধে ওই মঞ্চ একযোগে সরব হয়েছে। এনিয়ে ‘সাদা বাড়ি’র মুখপাত্র কারিন জিন-পিয়ের বলেন, “আমরা একটি সফল জি-২০ শীর্ষ সম্মেলন দেখতে পেয়েছি। বর্তমানে বিশ্বজুড়ে চলা খাদ্য ও জ্বালানি সংকট প্রসঙ্গে আলোচনা করে মজবুত বিশ্ব অর্থনীতি গড়তে পদক্ষেপ করবে জোট। এই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদির অবদান গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আগামী বছর জি-২০ জোটের সভাপতি হিসেবে ভারতকে সমর্থন দেব আমরা।”
বলে রাখা ভাল, সেপ্টেম্বর মাসে মোদি পুতিনকে বলেছিলেন, এটা যুদ্ধের যুগ নয় (This is not the era of war)। ভারত বারবার বলছে, ভৌগোলিক ও রাজনৈতিক টেনশন কমাতে হবে। অর্থনৈতিক বৃদ্ধি-হ্রাসের প্রবণতাকে রুখতে হবে। খাদ্য ও এনার্জির দাম বৃদ্ধি আটকাতে হবে। মহামারীর কুফল দূর করতে হবে।
[আরও পড়ুন: ‘বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বিরাট উন্নতি করেছে ভারত’, ইন্দোনেশিয়ায় দাবি মোদির]
তাৎপপর্যপূর্ণ ভাবে, এবারের সামিটে ইউক্রেন সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান চেয়ে বার্তা দেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। এটা যুদ্ধ করার সময় নয় বলে মন্তব্য করেন নমো। সেই সুরে সুরে মিলিয়ে সম্মেলন শেষে ইউক্রেনে ‘রুশ আগ্রাসনে’র বিরুদ্ধে যৌথ বিবৃতি দেওয়া হয়। বলে রাখা ভাল, সম্মেলন চলাকালীন একাধিক রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে নমোর করমর্দন নিয়ে রীতিমতো আলোচনার ঝড় বয়ে গিয়েছে বিশ্লেষক মহলে। ওই সম্মেলনেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও প্রধানমন্ত্রী মোদির শরীরী ভাষা থেকেই স্পষ্ট হয়ে যায় ট্রাম্পের উত্তরসূরীর সঙ্গেও ভারতের সম্পর্ক অত্যন্ত মধুর। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের সঙ্গেও সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন প্রধানমন্ত্রী। সবমিলিয়ে, সামিটে ভারতের গুরুত্ব প্রকাশ পায়।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী বালিতে শুরু হয় দু’দিনের জি-২০ সামিট (G-20 Summit)। সেখানেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে জোটের সভাপতিত্ব হস্তান্তর করেন দেশটির প্রেসিডেন্ট জোকো উইডোডো। এক বছরের জন্য জি-২০-র সভাপতি পদে থাকবে ভারত। আগামী বছর (২০২৩ সালে) এই জোটের পরবর্তী সম্মেলন হতে চলেছে নয়াদিল্লিতে।