সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ঘোষণা করেছেন, ২০৫০-এর মধ্যে এমন সেনাবাহিনী তৈরি করে ফেলবে বেজিং, যাদের কেউ হারাতে পারবে না। চিনের এই নয়া সংকল্পকে সমীহর চোখে দেখছে এশিয়ার অন্যান্য দেশগুলি। চিনা প্রেসিডেন্টের এই হুঁশিয়ারি কি আদতে হামলার অশনি সঙ্কেত, চিন্তায় ভারত ও জাপান।
এমনিতেই গত বেশ কয়েক বছর ধরে চিনা সেনা নিত্যনতুন মারণাস্ত্র, যুদ্ধবিমান ও অত্যাধুনিক প্রযুক্তি আমদানি করলেও তাদের সেনাবহরের সামরিক শক্তি এখনও আমেরিকার চেয়ে যথেষ্ট কম। আর এই ফারাক ঘোচাতেই এবার আসরে নেমে পড়েছে বেজিং। সম্প্রতি এক দলীয় সম্মেলনে ২৩০০ জন কমিউনিস্ট নেতা ও কর্মীদের সামনে চিনা প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করেন, ‘২১ শতকের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে চিনা সেনাকে বিশ্বমানের করে তোলা হবে।’
[ফের ডোকলামে রাস্তা বানাচ্ছে বেজিং, মোতায়েন চিনা সেনাও]
চিনের এই প্রকল্পকেই সমীহর চোখে দেখছে অন্যান্য দেশগুলি। যদিও চিন স্পষ্টভাবে জানিয়েছে যে এই সামরিক আগ্রাসন কাউকে আক্রমণ করার জন্য নয়। কিন্তু শি ডাক দিয়েছেন, চিনের প্রতিবেশীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করতে পারবে ও জয়ী হবে, এমন সেনাবাহিনীই গড়ে তোলা হবে। চিনা প্রেসিডেন্টের এই হুঙ্কারকেই ভয় পাচ্ছে জাপানের মতো দেশ। চিন্তায় রয়েছে নয়াদিল্লিও। হিমালয়ের কোলে বেশ কিছু এলাকা নিয়ে ভারত ও চিনের মধ্যে সীমান্ত সংঘাত রয়েছে। জাপানের সঙ্গেও জলপথ নিয়ে সংঘাত রয়েছে বেজিংয়ের। দক্ষিণ চিন সাগর নিয়ে ভিয়েতনাম, ফিলিপিন্স ও মালয়েশিয়ার সঙ্গেও বেজিংয়ের বিবাদ পৌঁছেছে আন্তর্জাতিক আদালতে।
চিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, গত কয়েকবছর ধরেই দক্ষিণ চিন সাগরে কর্তৃত্ব কায়েম করতে অত্যাধুনিক মিসাইল ও ডিফেন্স সিস্টেম বসাচ্ছে তারা। এক জাপ প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ বলছেন, ‘জাপান ও আন্তর্জাতিক মহলে চিনের এই আগ্রাসন ভয়াবহ বার্তা পৌঁছে দিচ্ছে। স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে যে আমরা আর কেউ সুরক্ষিত নই।’ ২০১৬-তেই প্রতিরক্ষা খাতে চিনের বিনিয়োগ এশিয়ার বহু দেশকেই পিছনে ফেলে দিয়েছে। একটি আন্তর্জাতিক সংস্থার রিপোর্ট বলছে, ২০১৬-তে প্রতিরক্ষা খাতে ২১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বরাদ্দ করেছে বেজিং। সেখানে ভারত করেছে মাত্র ৫৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, জাপান ৪৬ ও দক্ষিণ কোরিয়া মাত্র ৩৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। পাশাপাশি বিদেশেও চিনা সেনা ঘাঁটি বাড়াচ্ছে চিন। এই প্রথম জিবুতিতে মিলিটারি বেস খুলেছে বেজিং। চিনের একগুচ্ছ সামরিক পদক্ষেপে ইতিমধ্যেই সিঁদুরে মেঘ দেখতে শুরু করেছে প্রতিবেশী দেশগুলি।
[আগ্রাসন রুখতে নয়া পন্থা, চিনা ভাষা শিখবেন আইটিবিপির জওয়ানরা]
The post বিশ্বমানের সেনা গড়বে চিন, হামলার আশঙ্কায় প্রতিবেশীরা appeared first on Sangbad Pratidin.