সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দেশের 'ব্যাঘ্র্য রাজ্য' হিসেবে পরিচিত মধ্যপ্রদেশ। কিন্তু সেই রাজ্যেই তৈরি হল এক লজ্জার নজির। ২০২৫ সালে ইতিমধ্যেই সেখানে মারা গিয়েছে ৫৪টি বাঘ! এর মধ্যে গত একসপ্তাহেই মৃত্যু হয়েছে ৬টি বাঘের। ১৯৭৩ সালে ব্যাঘ্র প্রকল্প শুরু হওয়ার পর থেকে কখনও এক বছরে এতগুলি বাঘের মৃত্যু হয়নি। স্বাভাবিক ভাবেই বাড়ছে উদ্বেগ।
গত শনিবারই বান্ধবগড়ে পাওয়া যায় এক বাঘের দেহ। যাকে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়ায়। সব মিলিয়ে মৃত বাঘগুলির মধ্যে ৫৭ শতাংশের মৃত্যুকেই 'অস্বাভাবিক' বলে জানানো হয়েছে। যার মধ্যে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার ঘটনা যেমন আছে, তেমনই রয়েছে অব্যাখ্যাত কারণও। এরই সঙ্গে রয়েছে চোরাশিকারের মতো বিষয়গুলি।
এই পরিস্থিতিতে বন প্রতিমন্ত্রী দিলীপ আহিরওয়ার জানিয়েছেন, বন বিভাগ প্রতিটি বাঘের মৃত্যুকেই গুরুত্ব সহকারে দেখে। তিনি জানান, যখনই এ ধরনের কোনও ঘটনা ঘটে, বিশেষজ্ঞ দলগুলিকে দ্রুত ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়। তদন্ত করা হয় এবং প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ব্যবস্থাও নেওয়া হয়। তিনি আরও বলেন, সর্বশেষ ঘটনাটিতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়াকে একটি সম্ভাব্য কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। তাঁর আশ্বাস, বন বিভাগ প্রশাসনের সঙ্গে হাত মিলিয়ে পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। যদিও ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের মতে, সরকারি আশ্বাস সত্ত্বেও সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ভেতরে চোরাশিকারিদের উপস্থিতি একটি ধারাবাহিক 'বিপদ' হিসেবে রয়েই গিয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালে মৃত্যু হয়েছিল ১২৫টি বাঘের। আর এবছরের আগস্ট মাস পর্যন্তই মৃত্যু হয়েছে ১১৭ জনের। অর্থাৎ ২০২৪ থেকে ধরলে মৃত বাঘের সংখ্যা ২৪২! বছর শেষের আগে তা আরও বেড়ে যেতে পারে বলেই আশঙ্কা ছিল। এর মধ্যেই সামনে এল মধ্যপ্রদেশের পরিসংখ্যান। এই করুণ পরিসংখ্যানে উগ্বিগ্ন ব্যাঘ্র বিশেষজ্ঞ ও পরিবেশবিদরা। কেননা বাঘ কেবল একটি পশুমাত্র নয়। তার বিপন্নতা যেন মানুষের প্রকৃতির প্রতি অবহেলার এক উজ্জ্বল উদাহরণ। যে রাজ্যকে 'ব্যাঘ্র্য রাজ্য' হিসেবে ধরা হত, সেখানেই বাঘের এমন পরিস্থিতি গোটা ছবিটার এক ভয়ংকর প্রতীকী প্রকাশ বলে মনে করা হচ্ছে।
