সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির কাছে লজ্জার হার হারলেও, কেজরির 'অন্ধের যষ্ঠি' মুসলিম ভোট। নির্বাচনী ফলাফলের হিসেব বলছে, প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেসকে টক্কর দিয়ে সংখ্যালঘু ভোট একচেটিয়া ভাবে দখল করেছে আম আদমি পার্টি। যে ২২ আসনে আপ জয়ের মুখ দেখেছে তার মধ্যে ৬ থেকে ৭টি আসনে জয়ের কারিগর সংখ্যালঘুরা।
৭০ আসনের দিল্লিতে শনিবার ফল প্রকাশের পর দেখা গিয়েছে, ৪৮টি আসনে জয় পেয়েছে বিজেপি। অন্যদিকে মাত্র ২২ আসন পেয়েছে আপ। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা কংগ্রেসের। রাজধানীতে এবারও একটিও আসন পায়নি শতাব্দী প্রাচীন দল। ধরাশায়ী হয়েছেন আম আদমি পার্টির অরবিন্দ কেজরিওয়াল, মণীশ সিসোদিয়ার মতো ভিভিআইপি মুখ। তবে গোহারা হারলেও হিসেব বলছে দিল্লিতে কেজরির অক্সিজেন অবশ্যই মুসলিম ভোট। যার দখল নিতে চেষ্টার কোনও কসুর করেনি কংগ্রেস। সংখ্যালঘু আসনগুলি নিজেদের ঝুলিতে ভরতে ঢালাও প্রচার করেছিলেন রাহুল গান্ধী, মল্লিকার্জুন খাড়গেরা। তবে তার নিট ফল শূন্য।
দিল্লির ৭টি বিধানসভা কেন্দ্র এমন রয়েছে যেখানে মুসলিম ভোট বড় ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করে। যেগুলি হল, সিলমপুর, মুস্তফাবাদ, ওখলা, চাঁদনিচক, বল্লিমারান, সীমাপুর, বাবরপুর। এছাড়াও মাতিয়ামহল, সুলতানপুর কেন্দ্রেও অন্যতম ফ্যাক্টর হয়ে ওঠে মুসলিম ভোট। তাই সব রাজনৈতিক দলেরই নজর থাকে কীভাবে সেই ভোটকে নিজেদের দিকে আনা যায়। আর তাই সেই এলাকায় জোর দিয়ে প্রচারের পাশাপাশি মুসলমান প্রার্থীর সংখ্যা বাড়ানোতেও এবার ঝুঁকেছিল রাজনৈতিক দলগুলি। ২০২০ সালে যেখানে মাত্র ১৬ জন মুসলমান প্রার্থী ছিলেন, চলতি নির্বাচনে সেখানে প্রায় দ্বিগুণ সংখ্যক মুসলমান প্রার্থী লড়েছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত রাজনীতির খাতায় ঘোষিত ৭ মুসলিম আসনের মধ্যে ৬টিতেই জয়ী হয়েছে আপ। অন্যান্য আসনে কংগ্রেসের জেরে আপ বিপাকে পড়লেও সংখ্যালঘু ভোটে দাঁত ফোটাতে পারেনি হাত শিবির।
তবে এই অঙ্কে একমাত্র ব্যতিক্রম সংখ্যালঘু আসন হিসেবে পরিচিত মুস্তফাবাদ। ভোট কাটাকাটির অঙ্কে এই কেন্দ্রে দাঁও মেরেছে বিজেপি। জয়ী হয়েছেন গেরুয়া প্রার্থী মোহন সিং বিস্ট। দ্বিতীয় স্থান পেয়েছে আপ এবং কংগ্রেস চতুর্থ। রাজনৈতিক মহলের অনুমান, এখানে আপের ব্যর্থতার কারণ মিম প্রার্থী তাহির হুসেন। একটা বড় অঙ্কের ভোট গিয়েছে মিমের দিকে যার জেরেই আপের পরাজয়। তবে এই ব্যতিক্রমটুকু বাদ দিলে, দিল্লিতে ধরাশায়ী হলেও মুসলিম ভোটের ক্যারিশ্মা নতুন করে আশা যোগাচ্ছে কেজরিদের।
