গোবিন্দ রায়: দু’পক্ষের মধ্যে ঠুকঠাক লেগেই ছিল লোকসভা ভোটের পর। এবার সমাজমাধ্যমে মানহানিকর মন্তব্যের জন্য বিজেপির সর্বভারতীয় আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্যর কাছে ২৫ কোটি টাকা দাবি করে আইনি নোটিস ধরাল গেরুয়াপন্থী সংগঠন হিন্দু সংহতি। একই সঙ্গে অবমাননাকর ওই পোস্ট করার জন্য মালব্যকে প্রকাশ্যে শর্তহীন ক্ষমাপ্রার্থনার দাবিও করা হয়েছে আইনি নোটিসে। নোটিসের কপি পাঠানো হয়েছে জে পি নাড্ডা, সুকান্ত মজুমদার ও কলকাতা পুলিশকে।
ঘটনার সূত্রপাত গত বছরের জুন মাসে ফেসবুকে হিন্দু সংহতির সভাপতি শান্তনু সিংয়ের একটি পোস্ট নিয়ে। লোকসভা ভোটে বিজেপির আসন কমার পর কৈলাস বিজয়বর্গীয়-সহ বাংলার দায়িত্বে থাকা সর্বভারতীয় নেতাদের বিরুদ্ধে ‘কামিনী কাঞ্চন’ যোগের অভিযোগ এনে আলোড়ন তৈরি করেছিলেন তথাগত রায়ের মতো প্রবীণ বিজেপি নেতাদের একাংশ। তারই প্রেক্ষিতে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে অমিত মালব্যর নাম করে ‘হানি ট্র্যাপ’ সংক্রান্ত একটি পোস্ট করেন শান্তনুবাবু। এরপরই শান্তনু সিংয়ের বিরুদ্ধে দিল্লিতে মামলা করেন মালব্য। যা নিয়ে দিল্লি হাই কোর্টে পাল্টা আবেদন জানান শান্তনুবাবু। সেই মামলা এখনও চলছে।
রাজ্য বিজেপি সূত্রে খবর, মঙ্গলবার হিন্দু সংহতির তরফ থেকে মালব্যকে পাঠানো আইনি নোটিসে বলা হয়েছে, ‘আমার মক্কেল হিন্দু সংহতির সভাপতি শান্তনু সিংয়ের ব্যক্তিগত ফেসবুক পোস্টের প্রত্যুত্তর দিতে গিয়ে আপনি গত ১২ ও ১৩ জুন টুইটারে দুটি পোস্ট করেছিলেন। যেগুলি আমার মক্কেল হিন্দু সংহতির পক্ষে অবমাননাকর ও মানহানিকর। শান্তনু সিং যে পোস্ট করেছিলেন, তা তাঁর ব্যক্তিগত বক্তব্য। যার সঙ্গে হিন্দু সংহতির কোনও সম্পর্ক নেই।’ হিন্দু সংহতির বক্তব্য, ব্যক্তি শান্তনু সিংহের সঙ্গে বিরোধে হিন্দু সংহতির নাম টেনে মালব্য সংগঠনের মানহানি করেছেন। সেজন্য তাঁকে প্রকাশ্যে শর্তহীন ক্ষমা চাইতে হবে এবং ২৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। না হলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, সংঘের একসময়ের শীর্ষস্থানীয় প্রচারক প্রয়াত তপন ঘোষ প্রতিষ্ঠিত হিন্দু সংহতি স্বাধীন সংগঠন হলেও আরএসএসের সঙ্গে সম্পর্ক নিবিড়। সংহতির প্রাক্তন সভাপতি দেবতনু ভট্টাচার্য বিধানসভা ভোটে বিজেপির প্রার্থী ছিলেন। বর্তমানে মধ্য বঙ্গে বিজেপির অন্যতম পদাধিকারী। বর্তমান সভাপতি শান্তনু সিং টানা আট বছর এবিভিপির রাজ্য সম্পাদক ছিলেন। সংঘের স্বয়ংসেবক হিসাবে কেশব ভবনে অতিপরিচিত মুখ। ফলে মালব্য বনাম শান্তনুর এই দ্বন্দ্ব গেরুয়া রাজনীতির দুই শিবিরের লড়াই বলেই প্রত্যয় রাজনৈতিক মহলের।