shono
Advertisement

বাংলাদেশি শ্রমিকদের মগজধোলাই, কলকাতাকে করিডর বানিয়ে দক্ষিণ ভারতে JMB’র জাল

শ্রমিকদের ভিড়ে বাংলাদেশি জঙ্গিরা সেখানে গা-ঢাকা দিচ্ছে, সন্দেহ গোয়েন্দাদের।
Posted: 02:11 PM Jul 14, 2021Updated: 02:11 PM Jul 14, 2021

স্টাফ রিপোর্টার: চোরাপথে সীমান্ত পেরিয়ে কলকাতাকে (Kolkata) করিডর বানিয়ে দক্ষিণ ভারতে পৌঁছে যাচ্ছে বাংলাদেশিরা (Bangladeshi)। কেরল ও তামিলনাড়ুর বিভিন্ন কারখানায় নাম ভাঁড়িয়ে কাজ করছে কয়েক শো বাংলাদেশি, যাদের কাছে পাসপোর্ট, ভিসার মতো কোনও বৈধ নথি নেই। এই শ্রমিকদের ভিড়ে বাংলাদেশি জঙ্গিরা সেখানে গা-ঢাকা দিচ্ছে, এমন সন্দেহ গোয়েন্দাদের।

Advertisement

সম্প্রতি বিএসএফের গোয়েন্দাদের হাতে আলাদাভাবে ধরা পড়ে তিনজন। তাদের জেরা করে বিএসএফের গোয়েন্দারা জানতে পারেন যে, তিনজনই আসলে বাংলাদেশি। জেরার মুখে দু’জন জানায়, তামিলনাড়ুর দু’টি কাপড়ের মিলে ভুয়ো পরিচয় দিয়ে কাজ করছেন প্রায় দু’শো জন বাংলাদেশি। অন্য ব্যক্তি জানিয়েছে, সে কেরলের অন্তত ৬০ জন বাংলাদেশিকে চেনে, যারা কাজ করছে সেখানকার কারখানায়। এই তথ্য জানার পর নড়েচড়ে বসেছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। এর মধ্যেই দক্ষিণ শহরতলির হরিদেবপুর থেকে কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ)-এর হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে তিন বাংলাদেশি জামাত-উল-মুজাহিদিন (JMB) বাংলাদেশ (জেএমবি) জঙ্গি, যাদের সঙ্গে হুজি ও আল কায়দারও যোগাযোগ রয়েছে। তাই নতুন মডিউল তৈরির জন্য জেএমবি জঙ্গি সংগঠন দক্ষিণ ভারতের ওই বাংলাদেশিদের মগজধোলাই করতে শুরু করেছে বলে সন্দেহ গোয়েন্দাদের। এই ব্যাপারে খোঁজখবর নিতে শুরু করেছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা।

[আরও পড়ুন: কংগ্রেসে যোগ দিচ্ছেন প্রশান্ত কিশোর? গান্ধীদের সঙ্গে বৈঠকের পরই জোরাল জল্পনা]

এক সপ্তাহ আগে বিএসএফের গোয়েন্দারা নদিয়া জেলার মহেন্দ্র আউটপোস্ট এলাকার নেমোপদ গ্রাম দিয়ে একটি অটো যেতে দেখেন। সন্দেহের বশে তাঁরা সেটিকে দাঁড় করিয়ে দুই আরোহীকে জেরা শুরু করেন। জেরার মুখে মহম্মদ আলম নামে এক যুবক জানায়, সে বাংলাদেশের বরিশাল জেলার হিজলা থানা এলাকা ও তার সঙ্গী মহম্মদ সুমন বাংলাদেশের মাদারিপুর জেলার কালকিনি থানা এলাকার বাসিন্দা। জেরার মুখে তারা দু’জন জানায়, ৬ মাস আগে তারা বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে প্রবেশ করেছিল এই রাজ্যে। নদিয়া সীমান্ত ধরে তারা চলে আসে কলকাতায়। এখান থেকেই তামিলনাড়ুর ত্রিপ্পুরে যায় তারা। সেখানে দু’টি কাপড়ের মিলে আলাদাভাবে তারা চাকরি করতে শুরু করে। তাদের কাছ থেকে এই মিলের কার্ডও পাওয়া গিয়েছে। তাদের দাবি, দু’টি মিলেই অন্তত দু’শো জন বাংলাদেশি ভুয়া পরিচয়ে কাজ করছে। ত্রিপ্পুরে আরও অন্তত তিনটি মিল রয়েছে, যেখানে প্রায় সব শ্রমিকই বাংলাদেশি। তাদের সংখ্যাও শতাধিক। দুই ধৃতর দাবি, মিলের পক্ষ থেকেই ওই বাংলাদেশিদের হাতে জাল ভারতীয় পরিচয়পত্র তুলে দেওয়া হয়। তার ফলে তামিলনাড়ু পুলিশও তাদের সন্দেহ করে না। বরং তাদের বলা হয়, কিছু তামিল শব্দ শিখে নিতে। অনেক কম মজুরিতে তারা কাজ করে বলে মিলের মালিকরাও বাংলাদেশি শ্রমিকদেরই বেশি পছন্দ করেন।

[আরও পড়ুন: ২১ জুলাই এবার দিল্লিতেও পালিত হতে চলেছে তৃণমূলের ‘শহিদ দিবস’]

এর ক’দিন পরই উত্তর ২৪ পরগনার জিৎপুর বর্ডার আউটপোস্ট থেকে সীমান্ত পার হয়ে বাংলাদেশে যাওয়ার আগেই উজ্জ্বল গাজি নামে এক যুবককে আটক করেন বিএসএফ গোয়েন্দারা। সে বাংলাদেশের রাজবাড়ি জেলার গোয়ালন্দ থানা এলাকার বাসিন্দা। ওই যুবক জেরার মুখে জানায়, সে এক বছর আগে চোরাপথে হিলি সীমান্ত পেরিয়ে এই রাজ্যে প্রবেশ করে। কলকাতা হয়ে ট্রেনে করে চলে যায় কেরলের এর্নাকুলামে। সেখানেই সে শ্রমিকের কাজ করত। ওই শহরে তার পরিচিত অন্তত ৬০ জন বাংলাদেশি অবৈধভাবে প্রবেশ করে শ্রমিকের কাজ করে। গোয়েন্দাদের মতে, এর আগেও জেএমবি জঙ্গিরা যে শ্রমিক সেজে দক্ষিণ ভারতে ছিল, সেই প্রমাণ গোয়েন্দারা পেয়েছেন। দক্ষিণ ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে তল্লাশি চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে জেএমবি জঙ্গি সংগঠনের মাথাদেরও। ত্রিপ্পুর ও এরনাকুলামের তথ্য পাওয়ার পর ওই বাংলাদেশিদের সন্ধান পেতে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা তৎপর হয়ে উঠেছেন। ওই দুই রাজ্যেই জেএমবি জঙ্গিরা বাংলাদেশি শ্রমিক সেজে ঘাঁটি তৈরি করেছে কি না, তা জানার চেষ্টা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন গোয়েন্দারা।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement