সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: 'হিন্দুত্ববাদের আগুনে হাওয়া দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এই দাবি দেশের শাসকদলের বিরুদ্ধে এমনই বিস্ফোরক অভিযোগ তুলে সরব উদ্ধব ঠাকরের শিবসেনার মুখপত্র 'সামনা'।
'সামনা'তে স্পষ্ট ভাষায় বিজেপির উগ্র হিন্দুত্বকে তোপ দাগা হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে, 'গত দশ বছরে ভারতের মধ্যে হিন্দু ও মুসলিম দুটি আলাদা দেশ গঠিত হয়েছে। যে পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে তা স্বাধীনতার সময়ের ভারত-পাকিস্তান দ্বীরাষ্ট্রের মতোই। শিবাজির ইতিহাস বদলে দেওয়া, হিন্দু-মুসলিমদের জন্য আলাদা দোকানের দাবি তোলা, এসব কিছু অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে করা হচ্ছে। যা ভারতকে হিন্দু পাকিস্তানের পথে ঠেলে দিচ্ছে।'
স্পষ্টভাষায় সামনাতে লেখা হয়েছে, 'দেশে আজ সাম্প্রদায়িক ও ধর্মীয় হিংসা ভয়াবহভাবে বেড়েছে। দেশভাগের আগেও ঠিক এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। আজ এখানে কিছু হিন্দু নেতা জিন্নার ভূমিকা পালন করছেন। যা দেশের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক।' পাশাপাশি অতীত ইতিহাস তুলে ধরে লেখা হয়েছে, দেশে দ্বীরাষ্ট্র নীতি তুলেছিলেন সাভারকর। উনি মুসলিমদের জন্য আদালা দেশ দেওয়ার দাবি জানিয়েছিলেন। আম্বেদকরের মুখেও একবার একথা শোনা গিয়েছিল। তিনি বলেন, হিন্দু ও মুসলিম দুটি আলাদা রাষ্ট্র হিসেবে দেখা যেতে পারে। তবে নেহেরু ছিলেন বুদ্ধিমান মানুষ। তিনি স্পষ্ট জানান, দেশের সংবিধান হবে ধর্ম নিরপেক্ষ। ভারতকে আমি হিন্দু পাকিস্তান হতে দেব না। ইতিহাস সাক্ষী আছে, যে দেশ ধর্মের ভিত্তিতে তৈরি হয়েছে সে ভেঙে টুকরো হয়েছে। নেহেরুর জন্য এই ভারত আজও টিকে রয়েছে। তবে মোদি জমানা ফের দেশকে ভাঙার পথে নিয়ে যাচ্ছে। হিন্দু পাকিস্তানের পথে।'
বিজেপি স্পষ্টভাবে বোঝানোর চেষ্টা করছে মুসলিমদের সঙ্গে আমরা থাকব না। সংঘ অবশ্য জানিয়েছে, এই দেশের সব মুসলিমের ডিএনএ একই। অথচ মহারাষ্ট্রে মুসলিমদের জন্য আলাদা দোকানের ঘোষণা করা হয়েছে। মোহন ভাগবত কী এটা মানছেন? বিজেপি মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতি হিন্দুদের মনে ঘৃণার বীজ বপন করছে। এরা ঔরঙ্গজেবের কবর উপড়ে ফেলতে চাইছে। কিন্তু বাস্তবে যারা এটা চাইছে তাঁরা ঔরঙ্গজেবের চেয়েও ভয়ানক।' খোদ মোদি বলছেন, ওরা আপনাদের মঙ্গলসূত্র কেড়ে নেবে। পর পর এক ঘটনায় স্পষ্ট যে এরা ঠিক কী চায়। সামনার দাবি, আসলে এরা যেটা চায় তা দেশের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক।