সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আহমেদাবাদ বিমান দুর্ঘটনার এক মাসের মাথায় প্রাথমিক রিপোর্ট দিল এয়ারক্রাফট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো (এএআইবি)। শনিবার রাতে ১৫ পাতার রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে। ওই রিপোর্টে অন্তর্ঘাত বা পাখির ধাক্কায় দুর্ঘটনার তত্ত্ব উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ইঞ্জিনের গোলযোগের তত্ত্বও একপ্রকার উড়িয়েই দেওয়া হয়েছে।
প্রাথমিক রিপোর্টে যা যা উঠে এল:
১। দুর্ঘটনার ঠিক আগের মুহূর্তে দুই ইঞ্জিনের জ্বালানিই 'রান' (চালু) থেকে কাটঅফ (বন্ধ) মুডে চলে যায়।
২। বিমানটি ইঞ্জিন বন্ধের ঠিক আগের মুহূর্তে সর্বোচ্চ গতিতে (১৮০ নটস আইএএস) পৌঁছে যায়। এরপরই একে একে দুই ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যায়।
৩। দুর্ঘটনার আগের মুহূর্তে দুই পাইলটের কথোপকথন প্রকাশ্যে। একজন পাইলট বলেন, 'ইঞ্জিন বন্ধ করলে কেন?' অপর পাইলট বলেন, 'আমি কিছু বন্ধ করিনি।'
৪। ইঞ্জিন বন্ধের পর জরুরি ভিত্তিতে RAT (‘র্যাম এয়ার টার্বাইন) চালু করা হয়। এই RAT ইঞ্জিনে স্বয়ংক্রিয়ভাবে জরুরি ভিত্তিতে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়। কিন্তু তাতে লাভ হয়নি।
৫। বিমানের থ্রাস্ট লিভারগুলি নিষ্ক্রিয় অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু ব্ল্যাক বক্সের তথ্য বলছে, বিমান ছাড়ার পর থ্রাস্ট ঠিকঠাকই ছিল।
৬। বিমান ওড়ার সময়ে জ্বালানি ঠিকঠাক ছিল। জ্বালানি সরবরাহে কোনও সমস্যা হওয়ার কথা নয়।
৭। বিমান ওড়ার সময়ে ফ্ল্যাপ সেটিং এবং গিয়ারের অবস্থাও স্বাভাবিক ছিল। সেগুলি সঠিকভাবে পরীক্ষাও করা হয়।
৮। পাখির সঙ্গে ধাক্কায় দুর্ঘটনা নয়। দৃশ্যমানতার কোনও সমস্যা হয়নি।
৯। বিমানের ওজন-ভারসাম্য স্বাভাবিক। কোনও বিপজ্জনক পণ্য ছিল না।
১০। প্রাথমিকভাবে অন্তর্ঘাতের কোনও প্রমাণ মেলেনি। তবে জ্বালানি সুইচে কোনও গোলমাল ছিল কিনা সেটা এখনও খতিয়ে দেখা হয়নি।
এখন প্রশ্ন হল, বিমানের জ্বালানি কেন বন্ধ হল। কোনও যান্ত্রিক ত্রুটি? নাকি সত্যিই কোনও এক পাইলট ভুলবশত জ্বালানি বন্ধ করেছিলেন? দুর্ঘটনার প্রাথমিক রিপোর্টে পাখির ধাক্কার উল্লেখ নেই। বিমানসংস্থা বোয়িংকেও কোনও নোটিস দেওয়া হয়নি। কিন্তু যান্ত্রিক গোলযোগের তত্ত্ব এখনই উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। অভিশপ্ত বিমানের পাইলট সুমিত সভরওয়ালের ৮২০০ ঘণ্টা বিমান চালানোর অভিজ্ঞতা ছিল। সহকারী পাইলট ছিলেন ক্লাইভ কুন্দার। ১১০০ ঘণ্টা বিমান চালানোর অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁরও। এ হেন অভিজ্ঞ দুই পাইলট ভুলবশত জ্বালানি বন্ধ করে দেবেন, সেটা অস্বাভাবিক। স্বাভাবিকভাবেই যান্ত্রিক গোলযোগ নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পারে।
