সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জাস্টিন ট্রুডোর জমানায় খলিস্তানি কাঁটায় বিদ্ধ হয়েছিল ভারত-কানাডা সম্পর্ক। সেই টানাপড়েনের মধ্যেই কানাডার মসনদে বসেছেন মার্ক কারনি। 'ভারতবন্ধু' হওয়ার বার্তা দিয়েছেন তিনি। কিন্তু তা সত্ত্বেও নয়াদিল্লির বিরুদ্ধে বিস্ফোরক দাবি করল কানাডার গুপ্তচর সংস্থা কানাডিয়ান সিকিয়োরিটি ইন্টেলিজেন্স সার্ভিস (সিএসআইএস) । তাদের দাবি, দেশের আসন্ন নির্বাচনে ভারত ও চিন প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করতে পারে। এহেন খবর প্রকাশ্যে আসতেই কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ভারত। সমস্ত দাবি ভিত্তিহীন বলে বিবৃতি দিয়েছে বিদেশমন্ত্রক।

২৮ এপ্রিল কানাডায় সাধারণ নির্বাচন। বিপুল সংখ্যক ভারতীয় সেখানকার নাগরিক। এদের মধ্যে একটা বড় অংশ শিখ সম্প্রদায়ের মানুষ। বছর দুই ধরে খলিস্তানপন্থীদের নিয়ে বিবাদে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক তলানিতে এসে ঠেকেছে। নেপথ্যে খলিস্তানি জঙ্গি নেতা হরদীপ সিং নিজ্জরের হত্যার ঘটনা। কানাডা দাবি করেছিলে এই খুনে ভারতের হাত থাকতে পারে। যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করে দিল্লি। এই পরিস্থিতিতে সে দেশের নির্বাচনে ভারত নাক গলাতে পারে বলে দাবি করেছে কানাডিয়ান সিকিয়োরিটি ইন্টেলিজেন্স সার্ভিস।
এক বিবৃতিতে সিএসআইএস-এর ডেপুটি ডিরেক্টর অফ অপারেশনস ভেনেসা লয়েড রাশিয়া, চিন, ভারত ও পাকিস্তানকে ‘বিরোধী রাষ্ট্র’ বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, ‘বিরোধী রাষ্ট্রগুলি’ নির্বাচনে হস্তক্ষেপের জন্য কৃত্রিম মেধার ব্যবহার বাড়াচ্ছে। সে দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপে সবচেয়ে এগিয়ে চিন। একই ভাবে বিভিন্ন গোষ্ঠীর উপর প্রভাব খাটাতে পারে ভারত। যেহেতু তাদের সেই ক্ষমতা ও অভিপ্রায় দুই-ই রয়েছে। এই সন্দেহের তালিকায় রয়েছে রাশিয়া, এমনকী পাকিস্তানও।
কানাডার গুপ্তচর সংস্থার এহেন দাবি উড়িয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ভারত। বিবৃতি দিয়ে বিদেশমন্ত্রক জানিয়েছে, 'ওই প্রতিবেদনের সমস্ত তথ্য ভিত্তিহীন। আমরা চাই, অবৈধ্য অভিবাসীদের আশ্রয় দেওয়া বন্ধ করুক কানাডা।' ফলে আকার ইঙ্গিতে কার্যত ভারত বুঝিয়ে দিল যে, খলিস্তানিদের বাড়বাড়ন্ত নিয়ন্ত্রণ করতে হবে অটোয়াকে। ভারতবিরোধিতা, চরমপন্থা, বিচ্ছিন্নতাবাদকে দমন করলে তবেই দু'দেশের সম্পর্ক ঠিক হবে।
এদিকে, বিশ্লেষকরা বলছেন, কানাডায় থাকা শিখ সম্প্রদায়ের ভোটবাক্স গুরুত্বপূর্ণ শাসকদল লিবারেল পার্টির কাছে। নির্বাচনের কথা মাথায় রেখেই এই খলিস্তানি ইস্যুকে জিইয়ে রাখতে চায় লিবারেলরা। ট্রুডো ক্ষমতায় থাকাকালীনও বিভিন্ন সময়ে খলিস্তানিদের নানা অনুষ্ঠানে যোগ দিতেন। এবার দলের নেতা বদল হলেও এই অবস্থান থেকে সরছে না লিবারেলরা। ভারতবিরোধিতার হাওয়া বজায় রেখেই ভোট টানতে চাইছে লিবারেলরা।