স্টাফ রিপোর্টার: ভাঁড়ারে এক ফোঁটা ভ্যাকসিন নেই। তার মধ্য়েই কেন্দ্র স্পষ্ট করে জানিয়ে দিল রাজ্যগুলিকে আর নিখরচায় করোনার টিকা দেওয়া হবে না। একান্ত প্রয়োজন হলে আগে টাকা পাঠাতে হবে। সেই অনুযায়ী টিকা মিলবে।
প্রায় তিনমাস ধরে রাজ্য়ে করোনা সংক্রমণ কিছুটা হলেও বেড়েছে। বেড়েছে হাসপাতালে ভরতির সংখ্যাও। বিগত দেড় সপ্তাহে গড়ে একজন করে কোভিড-মৃত্য়ু (COVID-19) হয়েছে। তবে গত তিনবছরের তুলনায় তা অনেকটাই কম। এই সংক্রমণকে ঢেউ বলতে রাজি নন বিশেষজ্ঞরা। তবে বয়স্ক ও ক্যানসার, ডায়াবেটিস অথবা জটিল রোগে আক্রান্তদের একটি বড় অংশ টিকার খোঁজ শুরু করেছেন। অবস্থা বুঝে স্বাস্থ্যদপ্তরও কোভিশিল্ড, কোভ্যাকসিন অথবা কার্বিভ্যাক্স কিংবা ন্যাজাল ড্রপের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আবেদন করেছিল। কিন্তু কয়েকদিন আগে স্বাস্থ্যমন্ত্রকের আধিকারিকরা ভিডিও কনফারেন্স বৈঠকে জানিয়ে দেন, নতুন করে আর নিখরচায় করোনার টিকা দেওয়া সম্ভব নয়।
[আরও পড়ুন: বাংলাদেশি নন, হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চেও প্রমাণ দিতে ব্যর্থ বনগাঁর TMC নেত্রী আলোরানি সরকার]
রাজ্যগুলির টিকার (Corona Vaccine) প্রয়োজন হলে কিনে নিতে হবে। ঠিক যেমনটা করোনা পরীক্ষার আরটিপিসিআর কিট কিনতে হয় রাজ্যগুলিকে। স্বাস্থ্যদপ্তরের করোনা টিকাকরণের সঙ্গে যুক্ত আধিকারিকদের বক্তব্য, রাজ্য়ের ১৮ বছরের প্রায় সাড়ে সাত কোটি নাগরিক করোনার প্রথম ডোজ পেয়েছিলেন। কিন্তু দ্বিতীয় ডোজ শুরু হওয়ার সময় দেখা গেল প্রায় ৬ কোটি ৯২ লক্ষ দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন। বাকিদের আর খোঁজ মেলেনি অথবা ঠিকানায় পাওয়া যায়নি। বা মোবাইল নম্বর বদল করেছেন। এবার টানা একবছর ধরে বুস্টার ডোজ চলেছে পশ্চিমবঙ্গ-সহ দেশের সব রাজ্য়ে। স্বাস্থ্যভবনের তথ্য বলছে, ৬ কোটি ৯২ হাজারের মধ্য়ে বুস্টার ডোজ নিয়েছেন মাত্র ২৬ শতাংশ। কো-উইন পোর্টাল চালু রেখে সরকারি হাসপাতাল ও টিকাকেন্দ্র মাসের পর মাস খোলা রেখেও দিনের শেষে একজনও টিকা নেননি।
বস্তুত, প্রায় সাড়ে চার লাখ ডোজ কোভিশিল্ড ফেরত চলে গিয়েছে। কারণ আর কিছুদিন রাখলে সেগুলির মেয়াদ পার হয়ে যেত। সংক্রমণ বাড়তেই টিকাকরণের জন্য কেন্দ্রের কাছে আবেদন করে রাজ্য়। এমনকী চিঠিও দেওয়া হয়। কিন্তু গত সপ্তাহে কেন্দ্র জানিয়ে দেয়, আর বিনাপয়সায় রাজ্যগুলিকে ভ্যাকসিন দেওয়া সম্ভব নয়। শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গ নয়, টিকা নেওয়ার অনীহার চিত্র ধরা পড়েছে প্রায় সব রাজ্য়েই। তাই এবার টিকা পেতে গেলে আগে টাকা দিতে হবে। অথবা যাদের প্রয়োজন হবে বেসরকারি হাসপাতাল থেকে ভ্যাকসিন কিনতে পারেন। এদিকে স্বাস্থ্যদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্য়ে ১ হাজার ৬৪৫ জনের কোভিড পরীক্ষা হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্য়ে হাসপাতালে ভরতির সংখ্যাও অনেকটা কমেছে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত হাসপাতালে ভরতি রয়েছে ৯০ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্য়ে করোনা সংক্রমণে একজনের মৃত্য়ু হয়েছে। রাজ্য়ে অ্যাকটিভ রোগীর সংখ্যা ২,২৯৬।