সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: লকডাউনের জন্য বন্ধ গণপরিবহণ। কীভাবে বাড়ি ফিরবেন, তা বুঝতে পারছিলেন না ভিনরাজ্যে কাজে গিয়ে আটকে পড়া শ্রমিকরা। আর পাঁচজনের মতো একই অবস্থা তৈরি হয়েছিল বছর আটত্রিশের রণবীর সিংয়ের। যাতায়াতের কোনও ব্যবস্থা না পেয়ে বাধ্য হয়ে হাঁটতে শুরু করেছিলেন। জোটেনি খাবার। হাঁটতে হাঁটতে ক্লান্ত হয়ে পড়লে বিশ্রাম নিতে হয়েছে রাস্তাতেই। কিন্তু বাড়ি ফেরা হল না রণবীরের। পথেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল তাঁর।
মধ্যপ্রদেশে মোরিনা জেলার বাসিন্দা রণবীর সিং। দক্ষিণ দিল্লির তুঘলকাবাদের একটি রেস্তরাঁয় কাজ করতেন তিনি। কিন্তু তিন সপ্তাহের লকডাউনে বন্ধ রেস্তরাঁ। মালিক বলে দিয়েছিলেন আপাতত বাড়ি ফিরে যেতে। গণপরিবহণ বন্ধ থাকায় মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছিল রণবীরের। তুঘলকাবাদ থেকে বাড়ির দূরত্ব অন্তত দুশো কিলোমিটার। এত দূরের রাস্তা হেঁটে যাওয়া যে সম্ভব নয়, তা জানতেন রণবীর। কিন্তু ভেবেছিলেন চেষ্টা করবেন। তাই বাধ্য হয়ে আরও একজন সহকর্মীর সঙ্গে হাঁটতে শুরু করেছিলেন। দিল্লি-আগ্রা হাইওয়ে দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন বারবার। তিনদিন ধরে হাঁটতে হাঁটতে খিদে পেয়েছে। তবে মেলেনি খাবার। পরিবর্তে পেট ভরাতে ভরসা ছিল শুধুই জল। ক্লান্ত হয়ে পড়লে বিশ্রাম নেওয়ার জায়গা মিলেছে রাস্তা। পেটে খিদে, গরমে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন রণবীর।
[আরও পড়ুন:‘খাবার না পেলে গোটা পরিবার নিয়ে আত্মহত্যা করব’, ফোন পেয়েই উদ্ধারে ছুটল পুলিশ]
তাঁর সহকর্মী জানান, শনিবার সকাল থেকে আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েন রণবীর। হাঁটতে হাঁটতে বারবার বসে পড়েন তিনি। বুকে ব্যথা হতে থাকে। আচমকা দিল্লি-আগ্রা হাইওয়েতে লুটিয়ে পড়েন। এক ব্যক্তি তা দেখে দৌড়ে আসেন। তিনি জল, সামান্য খাবারের বন্দোবস্ত করেন। রণবীর সামান্য খাবারও খান। তবে তাতেও শেষরক্ষা হয়নি। বাড়ি থেকে একশো কিলোমিটার রাস্তা আগেই মারা যান ওই রেস্তরাঁ কর্মী। পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। রণবীরের দেহ উদ্ধার করেন তাঁরা। ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে রণবীরের দেহ। সমস্ত আইনি প্রক্রিয়া শেষে রণবীরের দেহ তাঁর পরিজনদের হাতে তুলে দেওয়া হবে।
The post লকডাউনে ২০০ কিমি রাস্তা হেঁটে বাড়ি ফেরার চেষ্টা, পথেই মৃত্যু রেস্তরাঁ কর্মীর appeared first on Sangbad Pratidin.
