সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় বিপাকে পড়তে পারে কংগ্রেস। শুধু সোনিয়া গান্ধী বা রাহুল গান্ধী নন। পর্যাপ্ত প্রমাণ মিললে চার্জশিটে গোটা কংগ্রেস দলকেই অভিযুক্ত করতে পারে ইডি। এমনটাই জানিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটি।
বুধবার দিল্লির আদালতে ইডির পক্ষ থেকে সলিসিটর জেনারেল এসভি রাজু বলেন, “এই মামলায় এখনও পর্যন্ত আমরা কংগ্রেসকে অভিযুক্ত করিনি। কিন্তু ভবিষ্যতে পর্যাপ্ত প্রমাণ মিললে আমরা গোটা দলটিকে চার্জশিটে অভিযুক্ত হিসাবে দেখাব।” পাশাপাশি, ইডির তরফে আদালতে জানানো হয়েছে, ন্যাশনাল হেরাল্ড সংবাদপত্র প্রকাশকারী সংস্থা 'অ্যাসোসিয়েটেড জার্নালস লিমিটেডের' (এজেএল) দু’হাজার কোটি টাকার সম্পত্তিও আত্মসাত করার যড়যন্ত্র করেছিলেন রাহুল এবং সোনিয়া।
জাতীয় হেরাল্ড মামলার প্রথম অভিযোগ দায়ের হয়েছিল ২০১২ সালে, বিজেপি নেতা সুব্রহ্মণ্য স্বামী এই অভিযোগ দায়ের করেন। তবে ইডি ২০১৪ সালে এই মামলায় তদন্ত শুরু করে। ‘অ্যাসোসিয়েট জার্নালস লিমিটেড’ ন্যাশনাল হেরাল্ড পত্রিক প্রকাশ করত। ২০০৮ সালে এই সংস্থা আর্থিক সমস্যায় পড়লে রাহুল গান্ধী এবং সোনিয়া গান্ধীর মালিকানাধীন ‘ইয়ং ইন্ডিয়ান প্রাইভেট লিমিটেড’ নামের একটি সংস্থা ২০১১ সালে ন্যাশনাল হেরাল্ড, কোয়াম-ই-আওয়াজ, এবং নবজীবন, এই তিনটি সংবাদপত্র ‘অ্যাসোসিয়েট জার্নালস লিমিটেডে’র কাছ থেকে অধিগ্রহণ করে। রাহুল গান্ধী এবং সোনিয়া গান্ধী একাই ওই সংস্থার ৭৬ শতাংশ শেয়ারের মালিক। বাকি দুই শেয়ার হোল্ডার হলেন প্রয়াত কংগ্রেস নেতা অস্কার ফার্নান্ডেজ এবং মতিলাল ভোরা। সুব্রহ্মণ্যম স্বামীর অভিযোগ ছিল, ওই অধিগ্রহণ নিয়ম মেনে হয়নি। ঘুরপথে মাত্র ৫০ লক্ষ টাকার বিনিময়ে ‘অ্যাসোসিয়েট জার্নালস লিমিটেডের’ কোটি কোটি টাকার সম্পত্তির মালিক হয়ে গিয়েছে কংগ্রেসের ফার্স্ট ফ্যামিলি পরিচালিত ‘ইয়ং ইন্ডিয়ান প্রাইভেট লিমিটেড’।
শুধু তাই নয়, এই হস্তান্তরের সময় সংস্থার প্রায় ৯০ কোটি টাকা ঋণ ছিল। কংগ্রেস ন্যাশনাল হেরাল্ডের যে ৯০ কোটি টাকা ঋণ ছেড়ে দিয়েছে, সেটাও নিয়ম মাফিক হয়নি। কারণ, কংগ্রেস একটি রাজনৈতিক দল। তাঁদের তহবিলের টাকা করমুক্ত। প্রথমত, এভাবে কোনও রাজনৈতিক দল ঋণ দিতে পারে না। আর দিলেও সেটা এভাবে মকুব করতে পারে না। এভাবে ঋণ মকুব করার অর্থ দলীয় তহবিলের করমুক্ত টাকা ঘুরপথে ঢুকে গেল গান্ধীদের পকেটে। শুধু সুব্রহ্মণ্যম স্বামী নন, অ্যাসোসিয়েট জার্নালস লিমিটেডের শেয়ার হোল্ডাররাও অভিযোগ করেন, তাঁদের না জানিয়ে বেআইনিভাবে সংস্থাটি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। এই মামলার তদন্তে নেমেই ইয়ং ইন্ডিয়ান এবং অ্যাসোসিয়েট জার্নাল লিমিটেডের ৭৫২ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। কংগ্রেস অবশ্য বরাবরই ন্যাশনাল হেরাল্ডের সবরকম তদন্ত প্রক্রিয়াকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বলেই দাবি করে এসেছে।
