সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জামাইয়ের করোনা ভাইরাস ধরা পড়েছে। মেয়ের শরীরেও দেখা গিয়েছে মারণ চিনা ভাইরাস সংক্রমণের নানা উপসর্গ। তা সত্ত্বেও রোগ গোপনের চেষ্টার অভিযোগে তরুণীর বাবার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হল। আগ্রায় এই প্রথমবার রোগ গোপনের অভিযোগে কারও বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হল। আগামী দিনে এমন কাজ কেউ করলে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেই দাবি পুলিশের।
সদ্যই বিয়ে হয়েছে আগ্রার ক্যানটনমেন্ট রেলওয়ে কলোনির বাসিন্দা এক তরুণীর। তার আগেই মধুচন্দ্রিমার পরিকল্পনা সেরে রেখেছিলেন তিনি। প্রিয়জনের সঙ্গে ইটালিতে উড়ে গিয়েছিলেন। বেড়াতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন স্বামী। জ্বর, সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্ট সব উপসর্গই ছিল। আগ্রায় নিজেদের বাড়িতে ফেরার পরই সোজা চিকিৎসকের কাছে যান দম্পতি। তাঁকে এসএন মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভরতি করা হয় ওই ব্যক্তিকে। রক্ত পরীক্ষাও করা হয় তাঁর। তাতে মেলে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার প্রমাণ। ইতিমধ্যে ওই তরুণীও অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁরও জ্বর, সর্দি, কাশি এবং শ্বাসকষ্ট হয়। তবে ওই তরুণীকে হাসপাতালে নিয়ে যাননি তাঁর পরিজনেরা। কানাঘুষো শারীরিক অসুস্থতার কথা ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র। স্বাস্থ্যদপ্তরের কর্মীরা ওই তরুণীকে কোয়ারেন্টাইনে রাখার জন্য বাড়িতে দৌড়ে আসেন। অভিযোগ, তরুণীর বাবা সত্য গোপন করেন। স্বাস্থ্যকর্মীদের বুঝতে দেননি তাঁর মেয়ে এবং জামাই করোনা ভাইরাস আক্রান্ত।
[আরও পড়ুন: নজিরবিহীন, ফাঁসি এড়াতে আন্তর্জাতিক আদালতের দ্বারস্থ নির্ভয়ার তিন ধর্ষক]
ওই তরুণীকে উদ্ধার না করেই বাড়ি থেকে চলে যান স্বাস্থ্যকর্মীরা। যদিও পরে আসল সত্য জানতে পারেন তাঁরা। এরপরই করোনা আক্রান্ত তথ্য গোপনের অভিযোগে আগ্রার ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়। অতিরিক্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তাঁর বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ২৬৯ এবং ২৭০ ধারায় মামলা দায়ের করেন। অতিরিক্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক চিকিৎসক বিনয় কুমার বলেন, “১২ জনের শারীরিক পরীক্ষানিরীক্ষার নমুনা জওহরলাল নেহরু মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তার মধ্যে এগারোজনের শরীরে করোনা সংক্রমণের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। ওই মহিলার পরীক্ষানিরীক্ষার রিপোর্ট এখনও হাতে আসেনি। তবে যেহেতু এই সময়ে তিনি ইটালি বেড়াতে গিয়েছিলেন। এবং তাঁর স্বামীর শরীরে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের প্রমাণ মিলেছে তাই তাঁকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। এমনকী সুরক্ষার স্বার্থে আপাতত ওই তরুণীর বাবা-মাকেও বাড়িতে সেল্ফ কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে।”
পুলিশ সুপার বাবলু কুমার বলেন, “যে বা যারা করোনা ভাইরাস সংক্রান্ত উপসর্গ লুকনোর চেষ্টা করছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। হতে পারে শাস্তিও। এই প্রথম আগ্রার ওই ব্যক্তিকে রোগ গোপন করতে দেখা গিয়েছে। এরকম আর কেউ রোগ গোপন করছেন কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
The post রোগ গোপনের চেষ্টা, করোনা আক্রান্ত তরুণীর বাবার বিরুদ্ধে FIR দায়ের appeared first on Sangbad Pratidin.
