সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পুড়ছে বাংলাদেশ। ক্রমেই সেদেশে বাড়ছে ভারত বিরোধিতা। তবে পড়শি দেশ যে এইভাবে অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠবে, সেটা আগেই আঁচ করতে পেরেছিল নয়াদিল্লি। বৃহস্পতিবার বিকেলে কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুরের নেতৃত্বাধীন সংসদীয় কমিটি স্পষ্ট জানিয়েছিল, ১৯৭১ সালের পর বাংলাদেশ নিয়ে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছে ভারত। সতর্কভাবে বিষয়টি সামলাতে না পারলে ভারতের সমস্যা অনেকটাই বাড়বে।
বৃহস্পতিবার রাতে সিঙ্গাপুরে প্রয়াত হয়েছেন বাংলাদেশের ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি। তারপর থেকেই অগ্নিগর্ভ বাংলাদেশ। সংবাদমাধ্যমের দপ্তর থেকে শুরু করে হাই কমিশন-সর্বত্র আগুন ধরিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশের উত্তেজিত জনতা। ইতিমধ্যেই একাধিক খুনের অভিযোগ আসছে। এহেন পরিস্থিতিতে সংসদীয় কমিটির রিপোর্টে স্পষ্ট ইঙ্গিত, বাংলাদেশ যে এভাবে জ্বলে উঠতে পারে, সেটা ভারত আঁচ করতে পেরেছে। হাদির মৃত্যুর কয়েকঘণ্টা আগেই সেকথা জানিয়েছিল সংসদীয় কমিটির রিপোর্ট।
বদলে যাওয়া বাংলাদেশের প্রতি সরকারের কেমন কূটনৈতিক কৌশল নেওয়া উচিত সেই নিয়ে একগুচ্ছ সুপারিশ করেছে থারুরের নেতৃত্বাধীন কমিটি। রিপোর্টে বলা হয়েছে, '১৯৭১ সালে মানবিকতার বিষয় ছিল। নতুন এক রাষ্ট্র গঠিত হয়েছিল। কিন্তু বর্তমান সমস্যা অনেক গভীর। রাজনৈতিকভাবে পুরো বদলে গিয়েছে বাংলাদেশ। কূটনৈতিক দিক থেকেও চিন এবং পাকিস্তানের প্রভাব বাড়ছে সেদেশে, অর্থাৎ ভারত বিরোধিতার পথে এগোচ্ছে ঢাকা। এই সময়টা ভারতের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সতর্কভাবে সামাল দিতে না পারলে বাংলাদেশও কট্টর ভারতবিরোধী হয়ে উঠবে।" উল্লেখ্য, বাংলাদেশের তিনটি ভিসা কেন্দ্র বন্ধ করে দিয়েছে ভারত। তারপর ঢাকার ভিসা কেন্দ্র খুললেও চট্টগ্রাম এবং রাজশাহীর ভিসা কেন্দ্র বন্ধ রয়েছে। বৃহস্পতিবার হামলার মুখে পড়েছে ভারতীয় হাই কমিশন।
কমিটির সুপারিশ, কোনও বিদেশি শক্তি যেন বাংলাদেশের মাটিতে ঘাঁটি না গাড়তে পারে সেদিকে নয়াদিল্লিকে কড়া নজর রাখতে হবে। সেই সঙ্গে যোগাযোগ, বন্দর এবং পরিকাঠামো গঠনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে কিছু বিশেষ ছাড় দেওয়ার বিষয়টিও প্রস্তাব করেছে কমিটি। একটা সময়ে নিষিদ্ধ ইসলামিক সংগঠন জামাত-ই-ইসলামিকে যেভাবে রাজনীতির মূলস্রোতে ফেরানো হয়েছে, সেটাও ভারতের মাথাব্যথা বাড়াবে। কমিটির আশঙ্কা, জামাতের স্বীকৃতি লাভ এবং আওয়ামি লিগকে নিষিদ্ধ করায় আগামী দিনে বাংলাদেশে স্বচ্ছ নির্বাচন একেবারেই বিলুপ্ত হয়ে যাবে।
