বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, নয়াদিল্লি: কুর্সি দখল নিশ্চিত ছিল। কিন্তু ফলপ্রকাশের পর হরিয়ানায় পরাজয় স্বীকার করতে হয় কংগ্রেসকে। নিশ্চিত একটি রাজ্য হাতছাড়া হওয়ায় ক্ষত মেরামতে ধারাবাহিকভাবে পর্যালোচনা চালিয়ে যাচ্ছে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। হারের কারণ হিসাবে প্রাথমিকভাবে আম আদমি পার্টিকে দায়ী করা হলেও পর্যালোচনায় উঠে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। দলেরই একাংশ বিরোধী শক্তির সঙ্গে গোপন বোঝাপড়া করে বিজেপির জয় নিশ্চিত করেছে বলে মনে করছে কংগ্রেস হাইকমান্ড। দলবিরোধী কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে এখনও পর্যন্ত ১৪ জন নেতাকে বহিস্কার করেছে কংগ্রেস।
কৃষক আন্দোলনের জেরে হরিয়ানায় জেরবার ছিল গেরুয়া শিবির। গোষ্ঠীকোন্দলও চরমে পৌঁছয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে শেষ মুহূর্তে মনোহরলাল খাট্টারকে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও অমিত শাহরা। কিন্তু তারপরেও জয়ের বিষয়ে নিশ্চিত ছিল কংগ্রেস। আপের সঙ্গে জোট নিয়ে প্রাথমিকভাবে কথাবার্তা শুরু হলেও সফল হয়নি। আলাদা করে ভোটের ময়দানে বিজেপি, কংগ্রেস ও আপ।
ফলাফল প্রকাশের পর দেখা যায় ৯০ আসন বিশিষ্ট হরিয়ানা বিধানসভায় বিজেপি একাই ৪৮টি আসন পায়। কংগ্রেস পায় ৩৭, আইএনএলডি ৩ এবং নির্দল প্রার্থীরা দু’টি আসনের দখল নেয়। প্রত্যাশার বাইরে ফল হওয়ায় হারের কারণ জানতে প্রদেশ নেতৃত্বকে রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দেন সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে ও রাহুল গান্ধীরা। পর্যবেক্ষক নিয়োগ করা হয় রাজস্থানের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট, এআইসিসির কোষাধ্যক্ষ অজয় মাকেন ও প্রতাপ সিং বাজওয়াকে।
নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর থেকে পর্যবেক্ষকদের উপস্থিতিতে এখনও পর্যন্ত তিনবার পর্যালোচনা বৈঠক হয়। বৈঠকে হারের কারণ হিসাবে আপের সঙ্গে ভোট কাটাকুটি, গোষ্ঠীকোন্দল ছাড়াও আরও বেশ কয়েকটি কারণকে চিহ্নিত করা হয়। দলের রাজ্য নেতৃত্বের কয়েকজনের ভূমিকাকে আতসকাচের তলায় রাখা হয়েছে। বৃহস্পতিবার এক প্রাক্তন বিধায়ক-সহ ৫ জনকে দল থেকে ৬ বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়। এর আগে ১৯ তারিখ ৯ জনকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয় হাইকমান্ড। এঁদের সকলের বিরুদ্ধে বিরোধীদের সাহায্য করার অভিযোগ রয়েছে বলে সূত্রের খবর। অন্তর্ঘাতের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন দলের এক হেভিওয়েট সাংসদ। তিনি জানান, অন্তর্ঘাত না হলে এই ফল সম্ভব নয়। যাঁরা এই কাজের সঙ্গে যুক্ত তাঁদেরকে কংগ্রেসে রাখা হবে না।
