সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ছাত্রনেতা ওসমান হাদির মৃত্যুতে ১৮ ডিসেম্বর থেকে উত্তাল বাংলাদেশ। হামলা হয়েছে সংবাদমাধ্যম, ভারতীয় দূতাবাস, আওয়ামি লিগের অফিসে। চট্টগ্রামে খুন হয়েছেন এক সাংবাদিক। দীপু চন্দ্র দাস নামের এক হিন্দু যুবককে হত্যা করা হয়েছে। সোমবার সংখ্যলঘু হত্যা এবং বাংলাদেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে মুখ খুললেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। তিনি বলেন, বাংলাদেশে হিন্দুদের অত্যাচার করা হচ্ছে। সীমান্তবর্তী রাজ্য হওয়ায় পরিস্থিতির দিকে কড়া নজর রাখছে অসম।
সূত্রের খবর, 'হাই অ্যালার্টে' রয়েছে অসম। হিমন্ত বলেন, "আমরা সকলেই দেখেছি কীভাবে বাংলাদেশে হিন্দু জনগোষ্ঠীকে নির্যাতন করা হচ্ছে এবং জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হচ্ছে। ওদের নেতারা বারবার বলছেন যে উত্তর-পূর্ব ভারতকে বিচ্ছিন্ন করে নিয়ন্ত্রণে নেবে বাংলাদেশ।" হিমন্ত জোর দিয়ে বলেন, অসম ঐতিহাসিকভাবে অনুপ্রবেশ সম্পর্কিত চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। ফলে বর্তমান পরিস্থিতিতে আরও বেশি সতর্কতা প্রয়োজন বলে মনে করা হচ্ছে। অসমের মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বজায় রাখা এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার, বিশেষ করে অসম ভৌগোলিকভাবে বাংলাদেশের কাছাকাছি থাকার কারণে।
ভারতের 'সেভেন সিস্টার্স' নিয়ে বাংলাদেশের নেতাদের মন্তব্যকে হাস্যকর বলেছেন হিমন্ত। তিনি বলেন, ভারত পারমাণবিক একটি অস্ত্রধারী দেশ, বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতি হিসেবে ভারতের বিশ্বব্যাপী অবস্থান। সেখানে (বাংলাদেশের) এই ধরনের উসকানিমূলক কর্মকাণ্ডের জবাব দেওয়ার প্রয়োজন মনে করছি না।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার রাতে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির। এই ঘটনার পরই ভয়ংকর হিংসা ছড়ায় গোটা বাংলাদেশে। এরই রোষ গিয়ে পড়ে দীপু নামে ওই সংখ্যালঘু হিন্দু যুবকের উপর। ময়মনসিংহের মোকামিয়াকান্দা গ্রামের বাসিন্দা দীপু গত দু’বছর ধরে ভালুকার একটি কারখানায় কর্মরত ছিলেন। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ কারখানায় হঠাৎ একদল বিক্ষোভকারী চড়াও হন। চলে ভাঙচুর। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, টেনে হিঁচড়ে কারখানার বাইরে বের করে আনা হয় দীপুকে। তারপর গণপিটুনি দেওয়া হয় তাঁকে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় দীপুর। এরপর তাঁর দেহ ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে নিয়ে যায় বিক্ষুব্ধ জনতা। গাছে বেঁধে ধরিয়ে দেওয়া হয় আগুন। বিবৃতি দিয়ে এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছে দিল্লি। পালটা ঢাকার দাবি, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুরা ভালো আছেন। দীপ দাসের ঘটনাটি 'বিচ্ছিন্ন হামলা'র ঘটনা।
