সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সীমান্তে সিঁধ কাটছে বাংলাদেশিরা! বিএসএফের নজর এড়িয়ে গত ১০ বছরে সবচেয়ে বেশি অনুপ্রবেশ চেষ্টা হয়েছে বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে। পিছিয়ে নেই বাকি প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান, মায়ানমার, নেপাল এবং ভুটান। অনুপ্রবেশের জেরে নিরাপত্তাবাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন প্রায় ২৪ হাজার জন। সংসদে তৃণমূলের প্রশ্নের উত্তরে এমনটাই জানাল অমিত শাহের মন্ত্রক।
২০১৪ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত ভারতে অনুপ্রবেশ করতে গিয়ে কতজন গ্রেপ্তার হয়েছেন? অনুপ্রবেশ রুখতে কী পদক্ষেপ করেছে মোদি সরকার? সে বিষয়ে কেন্দ্রের বিস্তারিত তথ্য চেয়েছিলেন তৃণমূলের দুই সাংসদ জগদীশচন্দ্র বসুনিয়া এবং শর্মিলা সরকার। এর উত্তরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের ডেপুটি নিত্যানন্দ রাই জানান, ২০১৪ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত চিন সীমান্ত থেকে কোনও অনুপ্রবেশ ঘটেনি। তবে অনুপ্রবেশ হয়েছে বাংলাদেশ, পাকিস্তান, নেপাল, ভুটান মায়ানমার থেকে। এখনও পর্যন্ত অনুপ্রবেশের অভিযোগে মোট গ্রেপ্তার হয়েছেন ২৩ হাজার ৯২৬ জন।
লোকসভায় কেন্দ্রের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, অনুপ্রবেশ করতে গিয়ে সবচেয়ে বেশি গ্রেপ্তার হয়েছে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে। দ্বিতীয়স্থানে রয়েছে মায়ানমার। এছাড়া পাকিস্তান, নেপাল, ভুটান থেকেও অনুপ্রবেশ হয়েছে। তবে সেই সংখ্যাটা একেবারে কম নয়। রিপোর্ট অনুযায়ী, সবচেয়ে বেশি অনুপ্রবেশ ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে। এখানে গ্রেপ্তার হয়েছেন ১৮, ৮৫১ জন। এরপর মায়ানমার সীমান্ত থেকে গ্রেপ্তারির সংখ্যা ১,১৬৫ জন, ভারত-পাক সীমান্ত থেকে গ্রেপ্তারির সংখ্যা ৫৫৬ জন। নেপাল ও ভুটান সীমান্ত থেকে গ্রেপ্তারির সংখ্যা ২৩৪। ২০২৫ সালের তথ্য আলাদাভাবে পেশ করেছে কেন্দ্র। সেই রিপোর্টে বলা হয়েছে, জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত অনুপ্রবেশের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন ৩,১২০ জন। এই তালিকায় ভারত-বাংলাদেশ (২,৫৫৬), ভারত-পাকিস্তান (৪৯), ভারত-মায়ানমার (৪৩৭) এবং ভারত-নেপাল-ভুটান সীমান্তে (৭৮) জন গ্রেপ্তার হয়েছেন।
উল্লেখ্য, ভারত-বাংলাদেশ অনুপ্রবেশ ইস্যুতে বাংলার তৃণমূল সরকারের উপর দায় ঠেলতে দেখা গিয়েছে বিজেপিকে। বিজেপি সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো অভিযোগ করেন, কাঁটাতার বসানোর জমি দিচ্ছে না রাজ্য। তাই ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের একটি বড় অংশ এখনও উন্মুক্ত। এই ফাঁক দিয়েই ওপার থেকে অনুপ্রবেশ ঘটছে। এদিকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক জানিয়েছে, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে প্রায় ১৫৫ কিলোমিটার এলাকায় এখনও নেই ফেন্সিং। এই ঘটনায় বর্ধমান পূর্বের সাংসদ বলেন, “প্রথম কথা ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে তো তৃণমূল কংগ্রেসের সরকার নেই, তাহলে ওখানে কেন গোটা এলাকায় কাঁটাতার দেওয়া গেল না? দ্বিতীয়ত, বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের যে সীমান্ত রয়েছে, তার মধ্যে একটা বড় অংশ জলা এলাকা। সেখানে কীভাবে ফেন্সিং করা যায়?" একইসঙ্গে তৃণমূলের তোপ, "বিজেপির সরকারের এই ধরনের মন্তব্যই প্রমাণ করে নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে আমাদের দিকে কাদা ছোঁড়ে বিজেপি।”
