সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: খলিস্তানি চরমপন্থীদের আখড়া হয়ে উঠেছে কানাডা। এই অভিযোগ ভারতের বহুদিনের। এছাড়া সেদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোও বারাবার ভারত বিদ্বেষী মনোভাবের প্রমাণ দিয়েছেন। তাঁর আমলেই খলিস্তানি নেতা হরদীপ সিং নিজ্জরের খুন নিয়ে তলানিতে ঠেকেছে দু'দেশের সম্পর্ক। কিন্তু ট্রুডোর উত্তরসূরি মার্ক কারনি সেই পথে হাঁটতে নারাজ। নয়াদিল্লির সঙ্গে সম্পর্ক ঠিক করতেই উদ্যোগী তিনি। বাড়িয়ে দিয়েছেন বন্ধুত্বের হাত। এই প্রেক্ষিতে দিল্লির বার্তা, চরমপন্থা ও বিচ্ছিন্নতাবাদের জন্য দু'দেশের সম্পর্কে ফাটল দেখা দিয়েছে। এবার আশা করা যায়, পারস্পরিক বিশ্বাসের ভিত্তিতে ফের এই সম্পর্ক ঠিক হবে।

সদ্যই কানাডার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন কারনি। কিন্তু নির্বাচনের আগে ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে তিনি বলেছিলেন, “আমি ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক পুনরুদ্ধার করতে চাই। দিল্লির সঙ্গে অটোয়ার অর্থনৈতিক জোটের কথা আমার অজানা নয়। বাণিজ্যিক সম্পর্কে কানাডা বৈচিত্র চায়। তাই আমি সমমনা দেশগুলোর সহযোগিতা চাই। এক্ষেত্রে ভারতের সঙ্গেও সুসম্পর্ক তৈরি করার সুযোগ রয়েছে আমাদের কাছে।” মসনদে বসে এই বিষয়ের উপর ফের জোর দেন কারনি।
এই প্রেক্ষিতে শুক্রবার সাপ্তাহিক সাংবাদিক সম্মলনে কানাডার সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন করা হয় বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়ালকে। উত্তরে তিনি বলেন, "কানাডা তাদের চরমপন্থী এবং বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তিগুলোকে লাইসেন্স দিয়েছে। এই কারণে দু'দেশের সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। কিন্তু এখন আমরা আশা করছি, পারস্পরিক বিশ্বাস ও সংবেদনশীলতার উপর ভিত্তি করে ভারত-কানাডা সম্পর্ক পুনর্নির্মাণ করতে পারব।" ফলে এদিন তিনি বুঝিয়ে দিলেন মূলত খলিস্তানি চরমপন্থাকে দমন করলে, তবেই দু'দেশের সম্পর্ক ঠিক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
উল্লেখ্য, নিজ্জরের খুন নিয়ে ভারতকে একের পর এক তোপ দেগে গিয়েছেন ট্রুডো। পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে এই কুখ্যাত খলিস্তানি জঙ্গির খুন নিয়ে সরাসরি আঙুল তুলেছেন দিল্লির দিকে। দেশ থেকে সরিয়ে দিয়েছেন ভারতীয় কূটনীতিকদের। কিন্তু মাঝখানে ট্রুডোকে বলতে শোনা যায়, “আমাদের কাছে গোয়েন্দা সূত্রে খবর ছিল। ভারতের বিরুদ্ধে এখনও পর্যন্ত পোক্ত প্রমাণ আমরা পাইনি। সবটাই তদন্তের পর্যায় রয়েছে।” এর পরই কানাডার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর মিথ্যাচার নিয়ে সরব হয় দিল্লি। পালটা দিয়ে জানানো হয়, রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির জন্য ভারতের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করছেন ট্রুডো। এছাড়া দিল্লি বহুবার অভিযোগ জানিয়েছে যে, খলিস্তানিদের চারণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে কানাডা। সেখানে বসে ভারতের বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। তাই ভারতকে কাছে টানতে এই খলিস্তানি চরমপন্থাকে কারনি দমন করেন কি না সেদিকেই নজর কূটনীতিকদের।