সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারত-বাংলাদেশ কূটনৈতিক সংঘাত চরমে। মঙ্গলবার সকালেই বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূত প্রণয় ভার্মাকে তলব করেছিল বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রক। এবার দিল্লিতে নিযুক্ত বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূত রিয়াজ হামিদুল্লাকে ডেকে পাঠাল ভারত সরকার। এক সপ্তাহে এই নিয়ে দ্বিতীয়বার বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূতকে তলব করল দিল্লি।
গত কয়েকদিনে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে কূটনৈতিক টানাপোড়েন চরম আকার নিয়েছে। নিরাপত্তাজনিত কারণে বাংলাদেশে বেশকিছু ভিসাকেন্দ্র বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় ভারত সরকার। এরপর গত সোমবার একরাতে ভারতে বাংলাদেশের তিনটি ভিসাকেন্দ্র বন্ধ করে দেয় ঢাকা। মঙ্গলবার ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে তলব করেন বাংলাদেশের বিদেশসচিব আসাদ আলম সিয়াম। সূত্রের খবর, প্রণয় ভার্মাকে ডেকে ভারতের বিভিন্ন স্থানে থাকা বাংলাদেশ ভিসাকেন্দ্রগুলির নিরাপত্তা জোরদার করার অনুরোধ জানানো হয়েছে বাংলাদেশের তরফে। পাশাপাশি ঢাকার তরফে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ২০ ডিসেম্বর নয়াদিল্লির বাংলাদেশি দূতাবাস, বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূতের বাসভবনের বাইরে উত্তেজনা এবং ২২ ডিসেম্বর শিলিগুড়িতে বাংলাদেশের ভিসাকেন্দ্রে ভাঙচুরের ঘটনায় উদ্বিগ্ন ঢাকা।
গত সপ্তাহে বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূতকে ডেকে ঢাকার ভারতীয় দূতাবাস এবং ভারতীয় রাষ্ট্রদূত প্রণয় বর্মার নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল দিল্লি। মঙ্গলবার ফের তলব করা হল বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূত রিয়াজ হামিদুল্লাকে। উল্লেখ্য, মঙ্গলবার সকালে দীপু দাস হত্যার প্রতিবাদে দিল্লি এবং কলকাতার বাংলাদেশি দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভ মিছিল করে ভিএইচপি, বজরং দলের মতো গেরুয়া সংগঠনগুলি।
উল্লেখ্য, এই নিয়ে গত ১০ দিনের মধ্যে প্রণয় ভার্মাকে দ্বিতীয়বার তলব করা হয়েছে। পাশাপাশি অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে বিভিন্ন ঘটনায় এ নিয়ে অন্তত ছয়বার তলব করা হল ভারতের রাষ্ট্রদূতকে। এর আগে গত ১৪ ডিসেম্বর প্রণয় ভার্মাকে তলব করা হয়েছিল। পরে এই তলবের বিষয়ে বলা হয়, ইনকিলাব মঞ্চের প্রধান শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলাকারীদের ভারতে পালিয়ে যাওয়া আটকাতে ভারতের সহযোগিতা চায় বাংলাদেশ। অপরাধীরা যদি ভারতে প্রবেশ করে তবে তাঁদের গ্রেপ্তার ও বাংলাদেশের কাছে প্রত্যর্পণ নিশ্চিত করার অনুরোধ জানানো হয়। নয়াদিল্লিতে আশ্রয় নেওয়া ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার লাগাতার ‘উসকানিমূলক’ বক্তব্যে অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্বেগের বিষয়টিও প্রণয় ভার্মাকে জানিয়ে দেওয়া হয়।
সেই ঘটনার পর গত ১৭ ডিসেম্বর নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার এম রিয়াজ হামিদুল্লাহকে পালটা তলব করেছিল ভারতের বিদেশমন্ত্রক। ঢাকা ও নয়াদিল্লিতে দুই দেশের হাইকমিশনারদের পরপর তলবের ঘটনা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি করেছে। যদিও বাংলাদেশের এই পদক্ষেপের নেপথ্যে মৌলবাদের বাড়াবাড়ি দেখছে কূটনৈতিক মহল। বর্তমান ইউনুস সরকার পুরোপুরি নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে ভারত বিদ্বেষী এই শক্তির দ্বারা। তাঁদের মন যোগাতেই ইউনুসের এই অতিসক্রিয়তা বলে মনে করা হচ্ছে।
