সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মারাঠি অস্মিতাকে প্রাধান্য দিয়ে হিন্দি আগ্রাসনে রাশ টানল মহারাষ্ট্র সরকার! স্কুলে হিন্দি ভাষাকে তৃতীয় ভাষায় মর্যাদা দেওয়ার সিদ্ধান্তে বহুদূর অগ্রসর হয়েও শেষ মুহূর্তে থমকে গেলেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়ণবিস। সোমবার রাতে মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর প্রথম শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত হিন্দিকে তৃতীয় ভাষার মর্যাদার সিদ্ধান্তে স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছে।
মহারাষ্ট্রে এনডিএ জোট ক্ষমতায় আসার পরই দেশের বাকি রাজ্যগুলির পাশাপাশি স্কুলে হিন্দিকে তৃতীয় ভাষায় অন্তর্ভুক্ত করার তোড়জোড় শুরু হয়। তবে শুরু থেকেই এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় নামে সেখানকার বিরোধী দলগুলি। শুধু তাই নয়, বিজেপির জোট শরিকদের থেকেও ওঠে আপত্তি। গেরুয়া শিবিরের একাধিক নেতা এই ঘটনাকে মারাঠি অস্মিতায় আঘাত বলে অভিযোগ তোলেন। প্রতিবাদে সরব হয় রাজ ঠাকরের নবনির্মাণ সেনা। এহেন পরিস্থিতির মাঝেই মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরের তরফে বিবৃতি জারি করে জানানো হয়, এই বিষয়ে আরও বিস্তারিত আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে। এই ইস্যুতে আমরা সাহিত্যিক, শিক্ষাবিদ-সহ সমাজের বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের সঙ্গে কথা বলব। তাঁদের মতামত ও পরামর্শ জানার পরই এই বিষয়ে বিচার বিবেচনা করা হবে।
এই নিয়ে দু'বার রাজ্যে হিন্দিভাষা লাগু করার সিদ্ধান্ত থেকে পিছু হঠল সরকার। চলতি বছরের এপ্রিল মাসেই রাজ্য সরকারের তরফে এক বিবৃতি জারি করে জানানো হয়েছিল, প্রথম শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত তৃতীয় ভাষা হিসেবে 'বাধ্যতামূলক' হবে হিন্দি। তবে রাজনৈতিক বিরোধিতার জেরে সেই সিদ্ধান্ত থেকে পিছু হঠে সরকার। এই অবস্থায় অতীতের নির্দেশিকায় সংশোধন এনে ১৭ জুন নতুন নির্দেশ জারি করা হয় যেখানে অতীতের 'বাধ্যতামূলক' শব্দটি তুলে দিয়ে জানানো হয়, পড়ুয়ারা চাইলে হিন্দিকে বেছে নিতে পারবেন। এবার সেই পথেও থমকালো ফড়ণবিসের সরকার।
এই ঘটনায় রাজনৈতিক মহলের দাবি, মহারাষ্ট্রের রাজনৈতিক দলগুলির মূল অস্ত্র হল মারাঠি অস্মিতা। সেখানে হিন্দির এই বাড়বাড়ন্তকে রাজ্যের জনগণ ভালো চোখে দেখছেন না। এদিকে সামনেই মহারাষ্ট্রে স্থানীয় পুরসভার নির্বাচন রয়েছে। তার আগে সরকারের এই সিদ্ধান্ত জনগণের কাছে খারাপ বার্তা দিতে পারে। এই আশঙ্কা থেকেই ফড়ণবিসের সরকার পিছু হঠল বলে অনুমান করা হচ্ছে।
