সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দেশজুড়ে কোভিড (COVID-19) টিকার ভয়াবহ সংকট। চাহিদা আছে, জোগান নেই। আবার কেন্দ্র সরকার সবাইকে বিনামূল্যে টিকা দিতে নারাজ। ৪৫ বছরের ঊর্ধ্বে সকলকে ভ্যাকসিন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বাকি নাগরিকদের টিকাকরণের দায়িত্ব ছাড়া হয়েছে রাজ্য সরকারের উপর। এসব নিয়ে রীতিমতো বিতর্ক চলছে। এরই মধ্যে নতুন করে ভ্যাকসিন (Corona Vaccine) নিয়ে বিতর্কে জড়াল কেন্দ্র। তবে, এবার কোভিড ভ্যাকসিন নয়। কেন্দ্র বিতর্কে জড়িয়েছে গবাদি পশুর জন্য ভ্যাকসিন কিনে। অভিযোগ উঠেছে, কোটি কোটি টাকা দিয়ে যে ভ্যাকসিন কেনা হয়েছে, তা নিম্নমানের। যার জেরে টিকাকরণ শুরুই হয়নি।
গরু তথা অন্য গবাদি পশুর অতি সংক্রামক একটি রোগ হল ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজ। সংক্ষেপে একে বলে এফএমডি (FMD)। গরু, ছাগল এবং মোষের মতো গৃহপালিত পশুর ক্ষেত্রে এই রোগ দেখা যায়। অতি সংক্রামক এই রোগে গবাদি পশুর স্তনদুগ্ধের পরিমাণ কমে যায়। অপুষ্টিজনিত সমস্যা দেখা যায়। অল্প বয়সে পশুগুলির মৃত্যুও হয়। ২০১৯ সালে কেন্দ্র সরকার টার্গেট নিয়েছিল আগামী ১০ বছরের মধ্যে গোটা দেশে এই রোগটিকে নির্মূল করার। সেই লক্ষ্যে দেশজুড়ে গবাদি পশুদের টিকাকরণের ছক কষা হয়েছিল। ২০১৯ সালে মোট তিনটি সংস্থার কাছ থেকে এই কর্মসূচির লক্ষ্যে ৪০০ কোটি টাকার ভ্যাকসিন কেনা হয়। সেই ভ্যাকসিন রাজ্যে রাজ্যে পৌঁছে দেওয়া, সংরক্ষণ করা, সিরিঞ্জ, সূঁচ এসব কেনার জন্য সব মিলিয়ে বরাদ্দ করা হয় মোট ১২০০ কোটি টাকা। এতদূর পর্যন্ত সব ঠিকই ছিল। কিন্তু এরপরই অভিযোগ আসতে শুরু করে এই ভ্যাকসিনগুলি নিম্নমানের। আসলে ভ্যাকসিনের নমুনা পরীক্ষা না করেই তা কেনাতে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছিল। কেন্দ্রের তরফে নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে, গবাদি পশুদের এই টিকাকরণ বন্ধ করে অবিলম্বে সব টিকা কেন্দ্রকে ফেরত দেওয়া হোক। গুণমান যাচাই করে নতুন করে টিকাকরণ শুরু হবে।
[আরও পড়ুন: টিকা নিয়ে পুরীতে রথ নির্মাণে শ্রমিকরা, ১৪৪ ধারা জারি করেই ভক্তহীন চন্দনযাত্রা]
যার অর্থ, ইতিমধ্যেই ভ্যাকসিন সংরক্ষণ এবং বিভিন্ন রাজ্যে পাঠানো ও ফেরত নেওয়ায় কোটি কোটি টাকা জলে গেল। তারপর ভ্যাকসিনের মানও যদি খারাপ হয় তাহলে আরও ৪০০ কোটি জলে। দেশে এই সংকটের মধ্যে এই বিপুল পরিমাণ অপচয়ের দায় কে নেবে? উঠছে প্রশ্ন। যদিও কেন্দ্রের সাফাই, গত বছর করোনার জন্য ভ্যাকসিনগুলির গুণমান যাচাই করা যায়নি। তাছাড়া, ভ্যাকসিন গুলি যদি সত্যিই খারাপ হয়, তাহলে প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলিকে জরিমানা করা হবে।