সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: লোকসভার পর রাজ্যসভাতেও পেশ হল ওয়াকফ সংশোধনী বিল। বৃহস্পতিবার দুপুরে বিলটি সংসদের উচ্চকক্ষে পেশ করেন সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী কিরেন রিজিজু। লোকসভার মতো রাজ্যসভাতেও এই বিল নিয়ে দীর্ঘ বিতর্ক হওয়ার সম্ভাবনা। এমনকী বিরোধীরা ডিভিশন চাইলে ফের ভোটাভুটিও হতে পারে।
রাজ্যসভায় বিল পেশের সময় কিরেন রিজিজু দাবি করেন, নতুন সংশোধনী পাশ হয়ে গেলে ওয়াকফ সম্পত্তি থেকে রোজগার বাড়বে বোর্ডের। তিনি দাবি করেন, ২০০৬ সালে সাচার কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী দেশে ৪.৯ লক্ষ ওয়াকফ সম্পত্তি ছিল। এ থেকে আয় হওয়া উচিত ছিল ১২ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু সেবার মাত্র ১৬৩ কোটি টাকা আয় হয় সরকারের। ২০১৩ সালে ইউপিএ সরকার ওয়াকফ আইন সংশোধন করেও আয় বাড়নি। সেসময় ৮.৭২ লক্ষ ওয়াকফ সম্পত্তি থেকে আয় ছিল মাত্র ১৬৬ কোটি টাকা। রিজিজুর দাবি, নতুন আইনে সেই রাজস্বই বাড়বে। বিরোধীদের কাছেও সমর্থন প্রার্থনা করেছেন তিনি।
লোকসভায় যেমন ওয়াকফ বিল নিয়ে তীব্র বাদানুবাদ হয়েছে, রাজ্যসভাতেও একই রকম বাদানুবাদ হতে পারে। তবে তর্ক বিতর্ক যাই হোক সংখ্যার হিসাবে বলছে, বিলটি পাশ করাতে বিশেষ বেগ পাওয়ার কথা নয় কেন্দ্রের। এই মুহূর্তে রাজ্যসভায় মোট আসন ২৪৫। তবে কয়েকটি আসন ফাঁকা থাকায় ম্যাজিক ফিগার নেমে এসেছে ১১৯-এ। হিসাব বলছে, এই মুহূর্তে এনডিএ ভুক্ত দলগুলির সাংসদ সংখ্যা ১২৫। এর মধ্যে শুধু বিজেপির রাজ্যসভা সাংসদ সংখ্যা ৯৮। নীতীশ কুমারের জেডিইউয়ের সাংসদ সংখ্যা ৪, অজিত পওয়ারের এনসিপির সাংসদ সংখ্যা ৩, টিডিপির সাংসদ সংখ্যা ২। এবং ৬ জন রয়েছেন মনোনীত সাংসদ। বাকি ১২ জন সাংসদ এনডিএ ভুক্ত ছোট দলগুলির।
সেখানে বিরোধীদের সাংসদ সংখ্যা মাত্র ৮৮। এই ৮৮ জনের মধ্যে ২৭ জন কংগ্রেস সাংসদ। তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সংখ্যা ১৩। আপের সাংসদ সংখ্যা ১০। এর বাইরে কয়েকজন সাংসদ রয়েছেন যারা কোনও শিবিরেই নেই। যার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিজেডি। অতীতে বহু ইস্যুতে বিজেপির পাশে দাঁড়ালেও ওড়িশার নির্বাচনে হারার পর থেকে নবীন পট্টনায়েকের দল বিজেপি বিরোধী অবস্থান নিচ্ছে। এবারেও তাঁরা বিরোধী শিবিরে থেকে বিলের বিরোধিতারই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর বাইরে ওয়াইএসআর কংগ্রেস (৭), বিআরএস (৪), এআইএডিএমকে (৩), বিএসপি (১) এবং মিজো ন্যাশনাল ফ্রন্ট (১) নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট না করলেও অধিকাংশের সমর্থন যে এনডিএর দিকেই যাবে, সেটা মোটামুটি স্পষ্ট। ফলে লোকসভায় বিতর্কিত বিলটি পাশ করাতে যেটুকু বেগ বিজেপিকে পেতে হয়েছে, রাজ্যসভায় ততটাও বেগ পেতে হবে না।