সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিহারে বিধানসভা ভোটের মুখে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধনে বাদ পড়েছে ৬৫ লক্ষ ভোটার! যার পর সংশোধনের নামে ভোটার তালিকায় 'কারচুপি'র অভিযোগ এনে সরব হয়েছে বিরোধীরা। অন্যদিকে ভোটার, আধারের মতো 'পরিচয়পত্র' নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। এর মধ্যেই বুধবার জাতীয় নির্বাচন কমিশনের পাশে দাঁড়িয়ে সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ, ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন 'ভোটার বিরোধী' কার্যক্রম নয়। আরও জানানো হয়েছে যে বিহারে ভোটার তালিকা সংশোধনে ১১টি পরিচয়পত্রের মধ্যে মাত্র একটিই চাওয়া হয়েছে।
বুধবার বিহারে ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সংশোধনের মামলার শুনানি চলছে বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং জয়মাল্য বাগচির বেঞ্চে। এদিন শুরুতেই কমিশনের নিবিড় সংশোধন প্রক্রিয়ার 'ভোটার বিরোধী' তকমা বাতিল করেন দুই বিচারপতির বেঞ্চ। বিরোধী পক্ষের হয়ে হাই ফ্রোফাইল মামলা লড়ছেন প্রবীণ আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভী। তাঁর বক্তব্য শোনার পর দুই বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, "আপনার আধার বাদ দেওয়ার যুক্তি আমরা শুনেছি। কিন্তু একাধিক নথির বিষয়টি আসলে ভোটার-বান্ধব, বিরোধী নয়। আপনি বরং দেখুন কতগুলি নথির মাধ্যমে নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে পারছেন।" বিচারপতি সূর্য কান্ত আরও বলেন, "যদি ভোটারদের কাছে ১১টি নথিই চাওয়া হত, তবে তা হত ভোটার বিরোধী, কিন্তু যখন একটিমাত্র নথি চাওয়া হচ্ছে, তাহলে...।"
সিংভী পালটা যুক্তি দেন, যদি ব্যক্তির কাছে জমি না থাকে তাহলে ৫, ৬ ও ৭ বিকল্প বাদ পড়ছে। বিকল্প ১ আর ২-এর অস্তিত্ব নেই। বাসস্থানের শংসাপত্র দেখানো যাবে না। পাসপোর্টও অলৌকিক!" পালটা বিচারপতি সূর্য কান্তর বক্তব্য, বিহারের এই কার্যক্রমকে এভাবে দেখা উচিত নয়। এই রাজ্য থেকে সর্বাধিক আইএএস, আইপিএস, আইএফএস এই রাজ্য নিযোগ হয়। তরুণ জনগোষ্ঠী অনুপ্রাণিত না হলে এটা সম্ভব হত না।
প্রসঙ্গত, বিশেষ নিবিড় সংশোধন নিয়ে একাধিক মামলা দায়ের হয়েছে শীর্ষ আদালতে। এই সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানিতে মঙ্গলবার বিচারপতি সূর্য কান্তর নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দেয় “নির্বাচন কমিশনই ঠিক। আধারকে নাগরিকত্বের চূড়ান্ত প্রমাণপত্র হিসাবে গ্রহণ করা যায় না। এটা যাচাই করার প্রয়োজন পড়ে।” ঘটনাচক্রে এই সুপ্রিম কোর্টই সম্প্রতি বিহারের নিবিড় সংশোধনে আধার কার্ড যোগ করার পরামর্শ দিয়েছিল নির্বাচন কমিশনকে। কিন্তু কমিশন সেই পরামর্শ খারিজ করে জানিয়ে দিয়েছে, বিশেষ নিবিড় সংশোধনে আধার কার্ড বা ভোটার কার্ড গ্রহণ করা যাবে না। এদিকে মঙ্গলবার বম্বে হাই কোর্ট মন্তব্য করেছে, আধার, প্যান কিংবা ভোটার কার্ড নাগরিকত্বের প্রমাণ দেয় না। একইসঙ্গে আদালত জানিয়েছে, এই নথিগুলি শুধুমাত্র সনাক্তকরণ এবং পরিষেবা পাওয়ার ক্ষেত্রেই ব্যবহৃত হতে পারে। কিন্তু নাগরিকত্ব প্রমাণের জন্য নয়।
