সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পহেলগাঁও হামলার পর দু'সপ্তাহ পেরিয়েছে। অথচ এখনও মুক্ত বাতাসে শ্বাস নিচ্ছে ২৬ জনকে নির্মমভাবে হত্যা করা জঙ্গিরা। এ পর্যন্ত কাশ্মীরে বেশ কয়েকটি অভিযান ও ধরপাকড় চালিয়েও হামলার মূল অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার বা নিকেশ করা যায়নি। এর মধ্যে অপারেশন সিঁদুর চালিয়ে পাক জঙ্গিদের বহু ঘাঁটি ভারতীয় সেনা উড়িয়ে দিয়েছে। কিন্তু এখনও মূল হামলাকারীদের নাগাল পাওয়া যায়নি। ওই 'নরপিশাচ'দের ধরতে এবার স্থানীয়দের সাহায্য চাইল NIA।
কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা স্থানীয় কাশ্মীরিদের কাছে আর্জি জানাল, যদি পহেলগাঁওয়ে হামলাকারী জঙ্গিদের সম্পর্কে কোনওরকম কোনও তথ্য তাদের জানা থাকে, সেই তথ্য তদন্তকারীদের হাতে তুলে দেওয়া হোক। বৃহস্পতিবার এনআইএর তরফে একটি ফোন নম্বর প্রকাশ করে পর্যটক এবং স্থানীয় কাশ্মীরিদের কাছে আর্জি জানানো হয়েছে, সেদিনের হামলাকারীদের সম্পর্কে যদি অতিরিক্ত কোনও তথ্য বা ছবি-ভিডিও কিছু থেকে থাকে, তাহলে সেটা এনআইএ'র হাতে তুলে দেওয়া হোক। সূত্রের দাবি, ইতিমধ্যেই পহেলগাঁওয়ের হামলাকারীদের বেশ কিছু ছবি-ভিডিও এনআইএর হাতে এসেছে। তবে সেটার বাইরে আরও তথ্য প্রয়োজন। আসলে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা জঙ্গিদের ধরতে অপারেশনের গতি আরও বাড়াতে চলেছে।
সপ্তাহখানেক আগে এনআইএর একটি সূত্র জানিয়েছিল, হামলাকারী ওই জঙ্গিরা এখনও দক্ষিণ কাশ্মীরের জঙ্গলঘেরা এলাকায় লুকিয়ে। শুধু হামলাকারীরা নয়, আরও বহু জঙ্গি ওই এলাকায় লুকিয়ে। তবে মূল হামলাকারীদের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রেখেছে তারা। মূলত হামলাকারীদের কভার ফায়ার দেওয়ার জন্য এলাকায় অন্য জঙ্গিরা লুকিয়ে। আর মূল হামলাকারীরা দুর্গম জঙ্গলে লুকিয়ে থাকার জন্য নিজেদের মতো রসদও সঙ্গে রেখেছে। সেই জঙ্গিরা ইতিমধ্যেই সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তানে পালিয়েছে কিনা, সেটা জানার চেষ্টা হচ্ছে।
এদিকে এই হামলার প্রত্যাঘাতে ইতিমধ্যেই বড়সড় পদক্ষেপ করেছে ভারত। মঙ্গলবার গভীর রাতে ‘অপারেশন সিঁদুর’ (Operation Sindoor) অভিযানে পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরের ৯ জায়গায় জঙ্গিঘাঁটি গুঁড়িয়ে দিয়েছে ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্র। এই হামলায় বাহওয়ালপুরে জইশ-ই-মহম্মদ, মুরাক্কায় লস্কর-ই-তৈবা ও হিজবুল মুজাহিদিনর সদর দপ্তর গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। গোটা অপারেশনের নজরদারিতে ছিলেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বুধবার সাংবাদিক বৈঠক করে এই হামলার বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন বিদেশসচিব ও সেনা। তাতে জানানো হয়েছে, পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত জম্মু-কাশ্মীরে ৯টি জায়গায় জঙ্গি পরিকাঠামো লক্ষ্য করে ‘প্রিসিশন স্ট্রাইক’ করা হয়েছে। যে সব জায়গায় বসে ভারতে সন্ত্রাসবাদী হানার পরিকল্পনা হয়েছিল এবং নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, সেখানেই ভারত আঘাত হেনেছে।
