সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পাপা ড্রামের ভিতরে আছে! আধো আধো গলায় এই কথাই প্রতিবেশীদের বলেছিল মার্চেন্ট নেভি সৌরভ রাজপুতের একরত্তি মেয়ে। প্রেমিকের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সৌরভকে খুন করার অভিযোগ উঠেছে তাঁরই মুসকান বিরুদ্ধে। সৌরভের দেহ ১৫ টুকরো করে ওই ড্রামেই ভরে লুকিয়ে রেখেছিল তাঁরা। এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে উত্তরপ্রদেশে।

গত ৪ মার্চ খুন হন সৌরভ। ঘটনাটি ঘটে উত্তরপ্রদেশের ইন্দিরা নগরে। গিয়েছে, ২০১৬ সালে মুসকান রাস্তোগির সঙ্গে প্রেম করে বিয়ে হয় সৌরভের। কিন্তু স্ত্রীর সঙ্গে সৌরভের পরিবারের বনিবনা হচ্ছিল না। অশান্তির জেরে স্ত্রীকে নিয়ে একটি ভাড়াবাড়িতে থাকতে শুরু করেন। স্ত্রীকে সময় দেওয়ার জন্য মার্চেন্ট নেভির চাকরিও ছেড়ে দেন সৌরভ। সেই বিষয়টি অবশ্য মোটেই ভালোভাবে নেননি মুসকান।
এর মাঝেই পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন মুসকান। ২০১৯ সালে মুসকান-সৌরভের কন্যাসন্তানের জন্ম নেয়। কিন্তু তাতেও দম্পতির সম্পর্কের উন্নতি হয়নি। উলটে প্রেমিক সাহিল শুক্লের সঙ্গে মাদকে আসক্ত হয়ে পড়েন মুসকান। মেয়ের ভবিষ্যতের কথা ভেবে সৌরভ ফের মার্চেন্ট নেভিতে ফিরে যান ২০২৩ সালে। তারপর থেকে একটি মার্কিন সংস্থায় কাজ করতেন তিনি। মেয়ের ছয় বছরের জন্মদিন উপলক্ষেই চলতি মাসে বাড়ি ফিরেছিলেন সৌরভ। কিন্তু সেখানে যে তাঁর এমন ভয়ংকর পরিণতি হবে তা কল্পনাও করেননি। মুসকান এবং সাহিল মিলে খুন করেন তাঁকে। দেহ ১৫ টুকরো করে প্লাস্টিকের ড্রামে ভরে সিমেন্ট চাপা দিয়ে বেড়াতে চলে যান।
এই ঘটনার তদন্তে পুলিশের সামনে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে। প্রতিবেশীরা তদন্তকারিদের জানান, সৌরভের মেয়ে সমানেই বলছিল, "পাপা ড্রামের ভিতরে আছে।" আধো আধো গলায় শিশুটি কী বলছিল, প্রথমে কেউ বিষয়টি বুঝতে পারেননি। পরে তারা বুঝতে পারেন। সৌরভের মা রেণু দেবী জানান, "৪ মার্চ মুসকান আর সাহিল আমার ছেলেকে খুন করে। তারপর ওরা বেড়াতে চলে যায়। বাড়ির মালিক বলে রেখেছিলেন, ঘর খালি করতে হবে সংস্কারের জন্য। তাই ওরা ফিরে আসার পর মালিক বাড়ি শ্রমিকদের পাঠান। কিন্তু শ্রমিকরা ওই ভারী ড্রাম তুলতে পারেনি। মুসকানকে জিজ্ঞাসা করলে জানায়, ড্রামের মধ্যে পুরোনো জিনিসপত্র আছে। কিন্তু শ্রমিকরা যখন ড্রামের ঢাকনা খোলে, তখন ভিতর থেকে দুর্গন্ধ বেরচ্ছিল। তারপর তো পুলিশ এলে সবটা সামনে আসে।"
রেণু দেবীর আরও অভিযোগ, "মুসকানের পরিবার আগেই সব জানত এবং তারা আগাম আইনি পরামর্শ নিয়েই পুলিশের গিয়েছিল। শুধু মুসকান আর সাহিল নয়, পুরো পরিবারকে ফাঁসি দেওয়া উচিত।" প্রসঙ্গত, প্রেমিকের সঙ্গে ঘুরে আসার পর নিজের বাবা-মায়ের সঙ্গে দেখা করতে যায় মুসকান। স্বীকার করে স্বামীকে খুনের কথা। সঙ্গে সঙ্গে মেয়েকে পুলিশের হাতে তুলে দেন মিরাটের দম্পতি প্রমোদ এবং কবিতা রাস্তোগি। তাঁদের সাফ কথা, মেয়ে যে জঘন্য অপরাধ করেছে তার জন্য ফাঁসি হওয়া দরকার।