স্টাফ রিপোর্টার, নয়াদিল্লি: একদিকে সীমান্তে চিন ও পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘাত চরমে, সেই সময় সেনার আধুনিকীকরণে প্রতিরক্ষামন্ত্রক যে পরিমাণ অর্থ চেয়েছিল, অর্থমন্ত্রক তার থেকে প্রায় ৬৩ হাজার কোটি টাকা কম বরাদ্দ করেছে। সম্প্রতি, প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির একটি রিপোর্টে বিষয়টি উল্লেখ করে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। প্রতিবেশী রাষ্ট্র পাকিস্তান ও চিনের সঙ্গে সীমান্ত-বিবাদের আবহে প্রতিরক্ষায় অর্থ বরাদ্দের সঙ্গে কোনও সমঝোতা না করার জন্য অর্থমন্ত্রকের কাছে সুপারিশ করেছে পিএসসি (PSC)।
সংসদের প্রতিরক্ষা বিষয়ক কমিটির সদ্য পেশ করা রিপোর্টে দেখানো হয়েছে, ২০২২-২৩ অর্থাৎ আগামী অর্থবর্ষের জন্য সেনা, নৌসেনা ও বায়ুসেনার পক্ষ থেকে অর্থমন্ত্রকের কাছে মোট ২ লক্ষ ১৫ হাজার ৯৯৫ কোটি টাকা ব্যয় বরাদ্দ পেশ করা হয়েছিল। কিন্তু অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন (Nirmala Sitaraman) তাঁর বাজেটে বরাদ্দ করেছেন ১ লক্ষ ৫২ হাজার ৩৬৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ, ৬৩ হাজার কোটি টাকা কম বরাদ্দ করা হয়েছে। বুধবার কমিটি সংসদের মাধ্যমে অর্থমন্ত্রকের কাছে এই প্রস্তাব করেছে যে প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গে সম্পর্কের কথা মাথায় রেখে সেনার ব্যয় বরাদ্দ বাড়ানো হোক।
[আরও পড়ুন: প্রাণহানির আশঙ্কা! ওয়াই ক্যাটাগরির নিরাপত্তা পেলেন ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলসে’র পরিচালক বিবেক অগ্নিহোত্রী]
দেখা গিয়েছে, নির্মলার ২০২২-২৩-এর বাজেটে সেনা, নৌসেনা ও বায়ুসেনার জন্য যথাক্রমে ১৪ হাজার ৭২৯.১১ কোটি, ২০ হাজার ৩১.৯৭ কোটি ও ২৮ হাজার ৪৭১.০৫ কোটি টাকা কম বরাদ্দ হয়েছে। এছাড়াও দৈনন্দিন খরচের ক্ষেত্রেও প্রায় এক লক্ষ কোটি টাকা কম বরাদ্দ করা হয়েছে তিন বাহিনীকে। এর ফলে সামরিক বাহিনীর কাজকর্ম বাস্তবায়িত হতে সমস্যা সৃষ্টি করবে বলে মনে করছে কমিটি। বিপুলভাবে বরাদ্দ কমে যাওয়ার বিষয় উল্লেখ করে কমিটির প্রস্তাবে বলা হয়েছে, চিন ও পাকিস্তানের সঙ্গে যখন চূড়ান্ত সংঘাত চলছে, সেই সময় বরাদ্দ কমিয়ে দেওয়া দেশের প্রতিরক্ষার স্বার্থে কাম্য নয়। একইসঙ্গে প্রতিরক্ষামন্ত্রককে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, তারা যেন অর্থমন্ত্রকের কাছে অবিলম্বে বাজেট না কমানোর কথা বলে।
অবশ্য শুধু চলতি বছরেই নয়, কমিটির নজরে এসেছে ২০১৬-১৭ থেকে লাগাতার বাজেটে যে পরিমাণ প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়, সেই পরিমাণ বরাদ্দ করা হচ্ছে না। দেশের নিরাপত্তার কথা মনে করিয়ে অর্থমন্ত্রককেও বাজেট না কমানোর প্রস্তাব দিয়েছে কমিটি। প্রতিরক্ষা বিষয়ে সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান বিজেপির জুয়ের ওরাম। ৩০ সদস্যের কমিটির সদস্য রাহুল গান্ধী, শরদ পওয়ারের মতো সাংসদরা। বুধবার লোকসভায় পেশ করা রিপোর্টে কমিটি দেশের নানাপ্রান্তে সীমান্ত অস্থিরতার প্রসঙ্গ টেনে অর্থ বরাদ্দের ব্যাপারে সরকারকে সতর্ক করেছে। অবশ্য, কমিটির তরফে জানানো হয়েছে, সরকারের তরফে তাদের আশ্বস্ত করা হয়েছে, আধুনিকীকরণে বরাদ্দ অর্থ নিয়ে মেয়াদ অনুত্তীর্ণ তহবিল গঠনের ভাবনাচিন্তা সরকারের আছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে অর্থ খরচ না হলেও তা সরকারের ঘরে ফেরৎ যাবে না। ধারাবাহিক কাজ হিসাবে পরের অর্থ বছরে আগের বরাদ্দ খরচ করা যাবে।