সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘কিশোরীদের যৌন উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণে রাখা উচিত। দু’মিনিটের তৃপ্তির জন্য সেই নিয়ন্ত্রণ হারানো উচিত নয়।’ কলকাতা হাই কোর্টের (Calcutta High Court) এই পর্যবেক্ষণের তীব্র সমালোচনা করল সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের বক্তব্য, এই রায় কিশোর-কিশোরীদের অধিকার লংঘন করছে। এই ধরনের মামলায় বিচারপতিদের ব্যক্তিগত মতামত জানানো উচিত নয়। সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট বলছে, হাই কোর্টের ওই রায়ের প্রতিটি অনুচ্ছেদ সমস্যাযুক্ত।
সম্প্রতি এক নাবালিকাকে ধর্ষণের মামলায় বিতর্কিত পর্যবেক্ষণ করে কলকাতা হাই কোর্ট। প্রেমের সম্পর্কে থাকাকালীন নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে এক যুবকের বিরুদ্ধে। পকসো আইনে (POCSO Act) মামলা দায়ের হয়। সেই মামলায় অভিযুক্ত যুবককে বেকসুর খালাস করে দেয় কলকাতা হাই কোর্ট। বিচারপতি চিত্তরঞ্জন দাস এবং বিচারপতি পার্থসারথি সেনের বেঞ্চ পর্যবেক্ষণে জানায়, “কিশোরীদের যৌন উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে, কারণ দু’মিনিটের সুখের জন্য সেই নিয়ন্ত্রণ হারালে সেই সমাজের চোখে ‘ব্যর্থ’ হবে। একই সঙ্গে কিশোরদেরও উচিত কিশোরীদের চাহিদা, আকাঙ্ক্ষাকে সম্মান করা।”
[আরও পড়ুন: দিনেদুপুরে প্রকাশ্যে শুটআউট কামারহাটিতে, তৃণমূল কর্মীকে লক্ষ্য করে গুলি]
হাই কোর্টের সেই রায় নিয়ে তীব্র আপত্তি জানায় সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। এর ভিত্তিতে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের হয় শীর্ষ আদালতে। বৃহস্পতিবার বিচারপতি অভয় এস ওঝা এবং উজ্জল ভূয়ানের বেঞ্চ সেই মামলার শুনানিতে সাফ বলে দিল, কলকাতা হাই কোর্টের ওই রায়ে জনমানসে ভুল বার্তা যাচ্ছে। সংবিধানের ২১ নম্বর ধারা কিশোর-কিশোরীদের যে অধিকার দিয়েছে, তা লঙ্ঘন করছে হাই কোর্টের রায় বলেও জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
[আরও পড়ুন: গঙ্গাসাগর মেলার আগেই যাত্রা শুরু ক্রুজের, ২ ঘণ্টায় পৌঁছবেন কচুবেড়িয়া]
শীর্ষ আদালত সাফ জানিয়েছে, শুধু ওই নাবালিকার আবেদনের ভিত্তিতে আইনানুগ সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত ছিল হাই কোর্টের। এই ধরনের রায়ের ক্ষেত্রে বিচারপতিদের ব্যক্তিগত মতামত না জানানোই কাম্য। সুপ্রিম কোর্টে রাজ্যের তরফেও জানানো হয়েছে, রাজ্য সরকারও হাই কোর্টের ওই রায়কে ‘ভুল’ বলে মনে করছে। সরকারও বিষয়টির সমাধান চায়।