সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চিন (China) যুদ্ধপ্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে, এদিকে মোদি সরকার ঘুমোচ্ছে। কতকাল এই ভাষাতেই সীমান্তে চিনা আগ্রাসন নিয়ে কেন্দ্রকে কটাক্ষ করেছিলেন কংগ্রেস (Congress) নেতা রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi)। এবার পালটা ১৯৬২-র চিন যুদ্ধে হার, প্রপিতামহ প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর (Jawaharlal Nehru) নাম তুলে রাহুলকে তোপ দাগল বিজেপি (BJP)। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিজেপি মুখপাত্র রাজ্যবর্ধন রাঠোর (Rajyavardhan Singh Rathore) বলেন, রাহুল গান্ধী চিনের এতটাই কাছে পৌঁছে গিয়েছেন যে তিনি বুঝে যাচ্ছেন, চিন এবার কী করবে।
কংগ্রেসের ‘ভারত জোড়ো’ যাত্রা বর্তমানে রাজস্থানে পৌঁছেছে। সেখানে দউসা জেলায় ওই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলটকে পাশে বসিয়ে শুক্রবার রাহুল দাবি করেন, ‘‘অনুপ্রবেশ নয়, বরং যুদ্ধের ছক কষছে চিন। যুদ্ধের জন্য তৈরি হচ্ছে ওরা।” রাহুল অভিযোগ করেন, “আমাদের সরকার তা (এই পরিস্থিতি) মানতে চাইছে না।’’ তিনি বলেন, “চিন আমাদের জমি কেড়ে নিয়েছে। আমাদের সেনাকে মারছে। চিনের বিপদ এখন আর গোপন কোনও বিষয় নয়। কিন্তু সরকার দেখেও দেখছে না।” কংগ্রেস নেতা দাবি করেন, “চিন লাদাখ ও অরুণাচলে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে আর ভারত সরকার ঘুমোচ্ছে!”
[আরও পড়ুন: সুপ্রিম কোর্টে ধাক্কা, ধর্ষকদের আগাম মুক্তির বিরুদ্ধে বিলকিস বানোর আবেদন খারিজ]
রাহুল গান্ধীর এহেন মন্তব্যেই চটেছে গেরুয়া শিবির। কটাক্ষের সুরে জবাব দিয়েছেন বিজেপি মুখপাত্র রাজ্যবর্ধন রাঠোর। তিনি বলেন, চিনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ রাহুল গান্ধীর। এতটাই ঘনিষ্ঠ যে চিন কী করবে তা আগেভাগে বলে দিতে পারেন। এরপরেই ১৯৬২-র ভারত-চিন যুদ্ধে হারের কথা মনে করিয়ে রাজ্যবর্ধন বলেন, “ভারত জোড়ো যাত্রা চলাকালীন রাহুল গান্ধী দেশের নিরাপত্তা ও সীমান্ত নিয়ে নানা ধরনের মন্তব্য করেছেন, যাতে দেশের সেনাবাহিনীর মনোবল ভেঙে যায়।” বিজেপি নেতা নেহরুর প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “এটা রাহুলে প্রপিতামহ নেহরুর ভারত নয়, যিনি ৩৭ হাজার ২৪২ কিলোমিটার হারিয়েছিলেন ইন্দো-চিন যুদ্ধে।” রাজ্যবর্ধন রাঠোর অভিযোগ করেন, জাতীয় রাজনীতিতে নিজেকে নতুন করে তুলে ধরতে দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য করছেন রাহুল। জাতীয় নিরাপত্তার তোয়াক্কা করছেন না।
এখানেই না থেমে চিনের কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে কংগ্রেসের চুক্তি হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন বিজেপি নেতা। তাঁর দাবি, সোনিয়া গান্ধীর (Sonia Gandhi) নেতৃত্বাধীন রাজীব গান্ধী ফাউন্ডেশন চিনের টাকায় চলে। এই সঙ্গে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দাবি করেন, মোদি সরকারের আমলে আন্তর্জাতিক সীমান্তের নিরাপত্তা বাড়াতে ও পরিকাঠামো উন্নয়ন তিন গুণ বেশি খরচ হচ্ছে।
[আরও পড়ুন: ‘পাঠান’ বিতর্কের মাঝেই গেরুয়া সুইমস্যুটে স্মৃতির ভিডিও পোস্ট তৃণমূল নেতার, তুঙ্গে TMC-BJP তরজা]
উল্লেখ্য, তাওয়াংয়ে চিনের রক্তচক্ষুতে উদ্বিগ্ন দেশ। কয়েকদিন আগেই প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা সংলগ্ন এলাকাটিতে লালফৌজের আগ্রাসন রুখে দেয় ভারতীয় সেনা। গালওয়ান থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার পিপলস লিবারেশন আর্মির ষড়যন্ত্র গোড়াতেই ভেস্তে দেন সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরীরা। এহেন পরিস্থিতিতে গতকাল বিজয় দিবস উপলক্ষে দেশবাসীকে অভয় বার্তা দিয়েছে ফৌজ। সেনার ইস্টার্ন কমান্ডের জিওসি-ইন-সি লেফটেন্যান্ট জেনারেল আর পি কলিতা বলেছেন, “অরুণাচল সুরক্ষিত। ভয়ের কিছু নেই।”