নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: 'ভূতুড়ে' ভোটার ইস্যুতে সপ্তাহের দ্বিতীয় দিনও উত্তাল হয়ে উঠল সংসদ। মঙ্গলবার রাজ্যসভায় আলোচনার দাবি তোলেন তৃণমূল সাংসদরা। সমর্থন জানিয়ে সুর চড়ায় নবীন পট্টনায়েকের দল বিজেডিও। কিন্তু সেই প্রস্তাব খারিজ করে দেন ডেপুটি চেয়ারম্যান। আর তাতেই শুরু হয় ক্ষোভ-বিক্ষোভ। শুরুতেই অধিবেশন ওয়াকআউট করে বেরিয়ে আসেন তৃণমূলে সাংসদরা। তাঁদের অনুসরণ করে বিজেডিও ওয়াকআউট করে। এরপর একে একে অন্যান্য বিরোধীরাও এনিয়ে সুর চড়ান। অধিবেশন কার্যত ভেস্তে যায়। সংসদের বাইরে বেরিয়ে কেন্দ্রকে কার্যত তুলোধোনা করলেন রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়।

একই এপিক নম্বরে একাধিক ভোটারের নাম। তালিকায় এই 'ভূতুড়ে' বিষয়টি নিয়ে সবার আগে কেন্দ্রের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো। অভিযোগ, ভিনরাজ্যের ভোটারদের নাম রয়েছে এরাজ্যের ভোটার তালিকায়। এবং সম্প্রতি কয়েকমাসের মধ্যেই সেই সংস্কার হয়েছে। ভোটার তালিকা থেকে সেসব 'ভূত' তাড়াতে দলের নেতা, মন্ত্রীদের স্ক্রটিনির দায়িত্ব দিয়েছিলেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকী তা নিয়ে দিল্লিতে নির্বাচন কমিশন দপ্তর ছাড়াও কেন্দ্রের উপর চাপ বাড়াতে সংসদে দলের রণকৌশল স্থির করে দিয়েছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। সেইমতো সংসদে অধিবেশন শুরু হতে উভয় কক্ষেই আলোচনার দাবি তোলেন তৃণমূল সাংসদরা। কিন্তু সোমবার, প্রথম দিনও সেই আলোচনার প্রস্তাব খারিজ ঘিরে তপ্ত হয়ে উঠেছিল অধিবেশন। মঙ্গলবারও কার্যত একই ছবি।
এনিয়ে রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় বলেন, ''একই এপিক নম্বরে একাধিক ভোটারের নাম কীভাবে থাকে? এটাই আমরা প্রশ্ন তুলেছিলাম। কমিশন সেকথা মেনেও নিয়েছে। জানিয়েছে, তিনমাসের মধ্যে তা সংশোধন করবে। কিন্তু আমাদের প্রশ্ন হল, এমন ভোটারের সংখ্যা ঠিক কত? তা জানাতে হবে। তাই আমরা সংসদে আলোচনার দাবি করেছিলাম। কিন্তু মাননীয় ডেপুটি চেয়ারম্যান সেই প্রস্তাব খারিজ করে দিয়েছেন। তাই আমরা ওয়াকআউট করে বেরিয়ে এসেছি। আমাদের বক্তব্য হল, অবিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোতে জেতার জন্য ভোটার তালিকায় এরকম কারচুপি করছে কেন্দ্রের সরকার। আসলে গোটা নির্বাচন প্রক্রিয়াটাকে তারা কুক্ষিগত করতে চাইছে। আর এভাবে ভারতের যে গণতান্ত্রিক কাঠামো আছে, তা ভেঙেচুরে দিচ্ছে। তবে আমরা, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে এবং নির্দেশে সংসদে এবং বাইরে জনমত গড়ে তোলার কাজ চালিয়ে যাব।'' এদিন বিকেলেই বিষয়টি নিয়ে দিল্লির নির্বাচন কমিশনে দেখা করতে যাবেন তৃণমূলের ১০ প্রতিনিধি। থাকবেন ডেরেক ও ব্রায়েন, সুখেন্দুশেখর রায়, সাগরিকা ঘোষ, সাকেত গোখলেরা।